মব জাস্টিস নিয়ে ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, সারা দেশে আমরা মব জাস্টিস পরিস্থিতি দেখতে পাচ্ছি। এ বিষয়ে ছাত্রদেরকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। আমরা যেন আইন হাতে তুলে না নিই। প্রশাসনকে প্রশাসনের মতো কাজ করতে দিতে হবে। আমরা তাদেরকে সহযোগিতা করব। পুলিশের কাজ পুলিশকে দিয়েই করাতে হবে। প্রশাসনের যে কাজ প্রশাসনকে দিয়েই করানো হবে। এ বিষয়ে আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লক্ষ্মীপুর শহর পুলিশ ফাঁড়ির নবনির্মিত ভবনে সেনা ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্যকালে তিনি এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রীয় সফরে এদিন উপদেষ্টা নাহিদ লক্ষ্মীপুরের বন্যাদুর্গত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি সদর উপজেলা বাঙ্গাখাঁ উচ্চ বিদ্যালয় ও যাদৈয়া মাদরাসায় দুর্গতদের মাঝে খাদ্য সহায়তা বিতরণ করেন।
তিনি আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিবেশ দ্রুত ফিরিয়ে আনতে সারা দেশে সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করব, তারা অতি দক্ষতার সঙ্গে ক্ষমতাটি প্রয়োগ করবেন। যৌথ বাহিনীর যে অভিযান চলমান রয়েছে, সেখানে যাতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড না হয়, সে ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কারো ইমেজই যেন নষ্ট না হয়, সে বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। সশস্ত্র বাহিনী, সেনাবাহিনী, পুলিশ, শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক পক্ষগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে, এ সময়কে মোকাবিলা করতে।
উপদেষ্টা নাহিদ বলেন, একটা অভ্যুত্থান-পরবর্তী পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে একবারেই নতুন করে গঠন করার চেষ্টা করছি। সে জায়গায় আমাদের মূল শক্তি হচ্ছে ঐক্য। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়েছে। আমাদের শিক্ষার্থী, নানান শ্রেণি-পেশার মানুষ, সশস্ত্র বাহিনী ও রাজনৈতিক দলগুলোসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী পক্ষগুলো মিলে আমরা একটা ঐক্য করেছি। আমরা কিছু কমিটমেন্টও করেছি। বাংলাদেশে আর কখনো কেউই যেন স্বৈরাচারী করতে না পারে, স্বৈরাচারী হয়ে উঠতে না পারে — এমন একটি বাংলাদেশ আমরা গড়বো। ন্যায় বিচারের বাংলাদেশ গড়তে আমরা কাজ করছি। আমাদের ঐক্যে ফাটল ধরাতে নানান ধরনের অপচেষ্টা করবে, সেক্ষেত্রে আপনারা সতর্ক থাকবেন। নিজেদের মধ্যে যেন বিশৃঙ্খলা না হয়, ঐক্যের ফাটল যেন না হয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা একটা অভ্যুত্থানের ভেতর দিয়েই আজকের এ পরিস্থিতিতে এসেছি। আমাদের অনেক রক্তাক্ত ভাইহারা, বোনহারা বেদনার ভেতর দিয়েই এমন পরিস্থিতিতে এসেছি। যারা শহীদ পরিবার রয়েছে, তাদের তালিকাটা যেন সঠিকভাবে হয় জেলাভিত্তিক, তা নিশ্চিত করবেন। আহতদের মধ্যেও যারা আছেন, তাদের মধ্যে যারা আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছেন, ঢাকায় তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। আমরা শহীদ ও আহতদের নিয়ে কাজ করছি। আমরা যে ফাউন্ডেশন করছি, তা সারাজীবনই এ পরিবারগুলোকে নিয়ে কাজ করবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার, সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মাজিদুল হক রেজা, লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার মো. আকতার হোসেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হক, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ইউছুফ মিয়া, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান প্রমুখ।