প্যারিসবাসী ঘরের ছেলে লিঁও মারশাঁকে চোখের সামনে কিংবদন্তি হয়ে উঠতে দেখছেন। সিংহাসন পুনরুদ্ধারে নামা কেটি লেডেকিকে হতাশায় ডুবিয়ে আরিয়ার্না টিটমাসের ‘রেস অব দ্য সেঞ্চুরি’ জয়—সাঁতারে এমন কত সব গল্পই না লেখা হচ্ছে প্যারিস অলিম্পিকে। তাঁদের সেসব গল্পের ভিড়ে সামার ম্যাকিন্টোশ নামে এক কিশোরীও আছেন। কী করেছেন তিনি?
গেমসে সাঁতারের ইতিহাস মানে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার দাপট। সেখানে এবার কানাডার ম্যাকিন্টোশ জিতেছেন দুটি ব্যক্তিগত সোনা। পরশু রাতে মেয়েদের ২০০ মিটার বাটারফ্লাইয়ে সোনা জিতেছেন রেকর্ড গড়ে। তাঁর টাইমিং—২ মিনিট ৩.০৩ সেকেন্ড। গেমসে এই ইভেন্টে আগের সেরা টাইমিং ছিল চীনের ঝেং ইউফেইয়ের। তিন বছর আগে টোকিং অলিম্পিকে তিনি সময় নিয়েছিলেন ২ মিনিট ০৩.৮৬ সেকেন্ড। ইউফেই এবার ২ মিনিট ৫.০৯ সেকেন্ড টাইমিং করে জিতেছেন ব্রোঞ্জ। ২ মিনিট ৩.৮৪ সেকেন্ড টাইমিংয়ে রুপা যুক্তরাষ্ট্রের রিগ্যান স্মিথের। নিজের আগের রেকর্ড ভাঙা ম্যাকিন্টোশের এই টাইমিং সব মিলিয়ে দ্বিতীয় সেরাও। এই ইভেন্টে ২০০৯ সালে রোমে ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে চীনের মেয়ে লিউ জিগের টাইমিং ছিল ২ মিনিট ১.৮১ সেকেন্ড।
১৭ বছর বয়সেই ম্যাকিন্টোশের এত সুন্দর জলের নামতা শেখার পেছনে ভূমিকা রয়েছে তাঁর মা হোর্সস্টিডেরও। তিনিও ছিলেন পেশাদার সাঁতারু। ১৯৮৪ লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন কানাডার। মায়ের দেখানো পথে হেঁটে ম্যাকিন্টোশ প্রথম কানাডিয়ান হিসেবে এক গেমসে একাধিক সোনা জয়ের কীর্তি গড়লেন। এবার যে সোনা জিতলেন, সেটি তাঁর মায়ের প্রিয় ইভেন্ট। ম্যাকিন্টোশই জানালেন সেই কথা, ‘আজ (পরশু) রাতে ২০০ মিটার ফ্লাইয়ে জেতা ছিল খুব সুন্দর; কারণ, এটি ছিল তাঁর (মা) প্রিয় ইভেন্ট। তাই তাঁর সঙ্গে মুহূর্তটি ভাগাভাগি করতে পারাটা খুবই আনন্দের। আমি জানি, তিনি এবং পুরো পরিবারের বাকিরাও গর্বিত।’
প্যারিসের লা ডিফেন্স অ্যারেনার পুলে আগেও ঢেউ তুলে সোনা জিতেছেন ম্যাকিন্টোশ। দিন চারেক আগে ৪০০ মিটার ব্যক্তিগত মেডলি জেতেন যুক্তরাষ্ট্রের দুই মেয়ে কেটি গ্রিমস ও এমা উইয়ান্টকে পেছনে ফেলে। তিন বছর আগে মাত্র ১৪ বছর বয়সে অলিম্পিকে অভিষেক হলেও এটি তাঁর প্রথম সোনা। প্রথম পদকটাও পেয়েছেন এবার। প্যারিস অলিম্পিকের শুরুতেই যুক্তরাষ্ট্রের লেডেকি ও অস্ট্রেলিয়ার টিটমাসের মর্যাদার লড়াই হয়ে ওঠা ৪০০ মিটার ফ্রিস্টাইলে ম্যাকিন্টোশের হাতে ধরা দেয় রুপা।