কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। সড়ক ভেঙে উঁচু এলাকায় হু হু করে ঢুকছে পানি। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার সদর, উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার প্রায় প্রায় সাড়ে তিন শতাধিক চরাঞ্চলের দেড় লক্ষাধিক মানুষ।
বন্যার পানিতে এলাকা তলিয়ে থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন চরাঞ্চলের বন্যা কবলিতরা। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও শুকনো খাবারের সংকট। নিচু এলাকার কাঁচা-পাকা সড়ক তলিয়ে থাকায় ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।
উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের গুজিমারী চরের বাসিন্দা আবুল হোসেন জানান, গত ৩/৪ দিন ধরে আমরা পানির উপর ভাসছি। নলকূপ তলিয়ে আছে। বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছি না, ঠিকমতো রান্নাও করতে পারছি না। আমাদের খোঁজখবরও কেউ নেয় না।
একই চিত্র ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার অন্যান্য চরাঞ্চলের। দুর্গম চরের বাসিন্দাদের ঘরের চাল পর্যন্ত পানি ওঠায় তারা গবাদি পশুসহ বাড়িঘর ছেড়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।
রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মো. জাকির হোসেন কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে হাতিয়া ইউনিয়নের ফকিরের চরে ২ শতাধিক বন্যা কবলিত মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন। এসময় কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ, পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসানসহ উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ত্রাণ বিতরণের সময় রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মো. জাকির হোসেন জানান, চলতি মাসের ৮ তারিখ পর্যন্ত বন্যার পূর্বাভাস রয়েছে। এ কারণে বন্যা কবলিতদের জন্য যখন যা প্রয়োজন তা করা হবে। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ রয়েছে। পাশাপাশি চরাঞ্চলের যেসব নারী ও শিশু রয়েছে তাদেরকে প্রশাসনের সহায়তায় আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, হাতিয়া পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি আরও বৃদ্ধি পাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে।