প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রোববার (৯ জুন) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে টানা তৃতীয় মেয়াদে নরেন্দ্র মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, ভুটান, নেপাল, মরিশাস ও সেশেলসের শীর্ষ নেতারাও মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। অনুষ্ঠানে ৮ হাজারের বেশি বিশিষ্টজনের রেকর্ড উপস্থিতি দেখা যেতে পারে বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে।
এছাড়া সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি ভবনে নেতারা দেশটির রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু আয়োজিত ভোজসভায় যোগ দেবেন।
শপথ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠান চলাকালে রাষ্ট্রপতি ভবনে এবং বাইরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দিল্লিতে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে
শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে রওনা হন। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৫১ মিনিটে নয়াদিল্লির ভিভিআইপি বিমানবন্দর পালাম এয়ার ফোর্স স্টেশনে অবতরণ করে ফ্লাইটটি।
পালাম বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব (সিপিভি ও ওআইএ) মুক্তেশ পরদেশী, বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা ও ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. মুস্তাফিজুর রহমান স্বাগত জানান।
নয়াদিল্লিতে অবস্থানকালে শেখ হাসিনা আজ সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে রাষ্ট্রপতি ভবনে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগদানের পর নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ওয়ান-টু-ওয়ান বৈঠক করবেন। পরে তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতির দেওয়া রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে যোগ দেবেন।
শেখ হাসিনা গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনে ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার আয়োজিত নৈশভোজে যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রীর নয়া দিল্লির স্থানীয় সময় আগামী সোমবার বিকেল ৫টায় ঢাকার উদ্দেশে নয়াদিল্লি ত্যাগ করার কথা রয়েছে। বাংলাদেশ সময় ওই দিন রাত ৮টায় ঢাকা পৌঁছার কথা রয়েছে তার।
এর আগে গত বুধবার (৫ জুন) টেলিফোনে আলাপের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানান এবং শেখ হাসিনা আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ১৮তম লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ ২৯৩ আসন জিতেছে এবং নির্বাচনে বিরোধী ইন্ডিয়া জোট ২৩৪ আসন পেয়েছে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নরেন্দ্র মোদিকে অভিনন্দন জানানো প্রথম বিদেশি নেতাদের অন্যতম, যা দুই নেতার মধ্যে ব্যক্তিগত সম্পর্কের উষ্ণতা প্রতিফলিত করে।
এর আগে শেখ হাসিনা লোকসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোটের (এনডিএ) নিরঙ্কুশ বিজয়ে নরেন্দ্র মোদিকে অভিনন্দন জানান। এতে তিনি বলেন, ‘বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের নেতা হিসাবে আপনি (মোদি) ভারতের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক।’
ভারতের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর তথ্য অনুসারে, শেখ হাসিনা বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএর বিজয়ের জন্য মোদিকে টেলিফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন। নির্বাচনে বিজয়ের পর শেখ হাসিনার উষ্ণ শুভেচ্ছার জন্য মোদি তাকে ধন্যবাদ জানান।
মোদি বলেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে, যা গত এক দশকে অভূতপূর্বভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করা এক বার্তায় মোদি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে জনগণকেন্দ্রিক অংশীদারিত্ব আরও জোরদার করতে তিনি একসঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় রয়েছেন। দুই নেতা বিকশিত ভারত ২০৪৭ এবং স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১ অর্জনের লক্ষ্যে নবায়নকৃত ম্যান্ডেটের আওতায় ঐতিহাসিক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে আরও গভীর করার জন্য একসঙ্গে কাজ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন।