ঢাকা ০৭:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২৫, ২৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নবীজি (সা.)-এর স্বপ্নে দেখা চার পাপের শাস্তি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১৬:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪
  • ৪৫ বার

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর স্বপ্ন ছিল ওহি। এই স্বপ্নের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বার্তা পাঠাতেন। সেই স্বপ্নের একটি হচ্ছে বুখারি শরিফের ৭০৪৭ নম্বর হাদিস। সামুরা ইবনু জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত, এক রাতে রাসুলুল্লাহ (সা.) স্বপ্ন দেখলেন যে দুজন ব্যক্তি তাঁর কাছে এসে তাঁর ঘুম ভাঙালেন এবং তাঁকে কিছু জিনিস দেখানোর জন্য নিয়ে বের হলেন, যা কিছু দেখানো হলো তা হচ্ছে চার শ্রেণির ব্যক্তির কুকর্ম এবং তার ভয়ংকর পরিণাম, আর দুই শ্রেণির লোকের শান্তি।

নিম্নে চার শ্রেণির পরিচয় ও পরিণাম তুলে ধরার চেষ্টা করছি।

১. মাথায় পাথর নিক্ষেপ করা হবে : রাসুলুল্লাহ (সা.) পথ চলতে চলতে কাত হয়ে শুয়ে থাকা এক লোকের কাছে এসে দেখলেন, এক লোক তার কাছে পাথর নিয়ে শুয়ে থাকা লোকের মাথায় পাথর নিক্ষেপ করছে, ফলে তার মাথা ফেটে পাথর নিচে গিয়ে পড়ছে। লোকটি আবার পাথরটি নিয়ে আসতে না আসতেই শুয়ে থাকা লোকটির মাথা আগের মতো ভালো হয়ে যায়। লোকটি ফিরে এসে আবার আগের মতো নিক্ষেপ করতে থাকে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) সাথিদ্বয়কে বলেন, সুবহানাল্লাহ! এরা কারা? সাথিরা জবাব দিলেন : সে হলো ওই ব্যক্তি যে কোরআন গ্রহণ করে তা ছেড়ে দিয়েছে আর ফরজ সালাত ছেড়ে ঘুমিয়ে থেকেছে।

২. মুখমণ্ডল আঁকড়া দিয়ে চিরে ফেলা

হবে : উপরোক্ত অবস্থা দেখার পর রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে চিৎ হয়ে শোয়া এক লোকের কাছে নিয়ে গেলেন। যার কাছে এক লোক লোহার আঁকড়া নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আর সে তার চেহারার একদিকে এসে আঁকড়া দ্বারা মুখমণ্ডলের একদিক মাথার পেছনের দিক পর্যন্ত এবং অনুরূপভাবে নাসারন্ধ্র, চোখ ও মাথার পেছন দিক পর্যন্ত চিরে ফেলছে।

এরপর লোকটি চিৎ হয়ে থাকা লোকটির বিপরীত দিকে গিয়ে প্রথম দিকের ন্যায় আচরণ করে। ওই দিক থেকে অবসর হতে না হতেই প্রথম দিকটি ভালো হয়ে যায়। তারপর আবার প্রথমবারের মতো আচরণ করে। তিনি বলেন, আমি বললাম, সুবহানাল্লাহ! এরা কারা? আগন্তুকরা বলেন : সে হলো ওই ব্যক্তি, যে সকালে নিজ ঘর থেকে বের হয়ে এমন মিথ্যা বলে, যা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।

৩. আগুনের লেলিহান শিখা স্পর্শ

করবে : দ্বিতীয় ব্যক্তিকে দেখার পরে সাথিদ্বয় রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে নিয়ে চুলার মতো একটি গর্তের কাছে পৌঁছলেন।

আর তথায় শোরগোলের শব্দ ছিল। রাসুল (সা.) বলেন, আমরা তাতে উঁকি মেরে দেখলাম, তাতে বেশ কিছু উলঙ্গ নারী ও পুরুষ আছে। আর নিচ থেকে বের হওয়া আগুনের লেলিহান শিখা তাদেরকে স্পর্শ করছে। যখনই লেলিহান শিখা তাদের স্পর্শ করে, তখনই তারা উচ্চৈঃস্বরে চিৎকার করে ওঠে। তিনি বলেন, আমি তাদের বললাম, এরা কারা? তারা জানালেন, এরা হলো ব্যভিচারী ও ব্যভিচারিণীর দল।

৪. রক্তিম নদীতে সাঁতার কাটবে : এরপরে তাঁরা রক্তের মতো লাল একটি নদীর তীরে গিয়ে পৌঁছলেন। তথায় এক ব্যক্তিকে সাঁতার কাটতে দেখলেন। সে নদীর তীরে অন্য এক লোক তার কাছে অনেক পাথর একত্র করে রেখেছে। সাঁতারকারী লোকটি বেশ কিছুক্ষণ সাঁতার কেটে পাথর একত্র করে রাখা লোকটির কাছে এসে মুখ খুলে দেয় আর ওই ব্যক্তি তার মুখে একটি পাথর ঢুকিয়ে দেয়। এরপর সে আবার সাঁতার কাটতে থাকে; আবার ফিরে এসে মুখ খুলে দেয়, আর ওই ব্যক্তি তার মুখে একটা পাথর ঢুকিয়ে দেয়। রাসুল (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, এরা কারা? জবাবে বলা হলো, সে হলো সুদখোর।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

নবীজি (সা.)-এর স্বপ্নে দেখা চার পাপের শাস্তি

আপডেট টাইম : ১২:১৬:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর স্বপ্ন ছিল ওহি। এই স্বপ্নের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বার্তা পাঠাতেন। সেই স্বপ্নের একটি হচ্ছে বুখারি শরিফের ৭০৪৭ নম্বর হাদিস। সামুরা ইবনু জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত, এক রাতে রাসুলুল্লাহ (সা.) স্বপ্ন দেখলেন যে দুজন ব্যক্তি তাঁর কাছে এসে তাঁর ঘুম ভাঙালেন এবং তাঁকে কিছু জিনিস দেখানোর জন্য নিয়ে বের হলেন, যা কিছু দেখানো হলো তা হচ্ছে চার শ্রেণির ব্যক্তির কুকর্ম এবং তার ভয়ংকর পরিণাম, আর দুই শ্রেণির লোকের শান্তি।

নিম্নে চার শ্রেণির পরিচয় ও পরিণাম তুলে ধরার চেষ্টা করছি।

১. মাথায় পাথর নিক্ষেপ করা হবে : রাসুলুল্লাহ (সা.) পথ চলতে চলতে কাত হয়ে শুয়ে থাকা এক লোকের কাছে এসে দেখলেন, এক লোক তার কাছে পাথর নিয়ে শুয়ে থাকা লোকের মাথায় পাথর নিক্ষেপ করছে, ফলে তার মাথা ফেটে পাথর নিচে গিয়ে পড়ছে। লোকটি আবার পাথরটি নিয়ে আসতে না আসতেই শুয়ে থাকা লোকটির মাথা আগের মতো ভালো হয়ে যায়। লোকটি ফিরে এসে আবার আগের মতো নিক্ষেপ করতে থাকে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) সাথিদ্বয়কে বলেন, সুবহানাল্লাহ! এরা কারা? সাথিরা জবাব দিলেন : সে হলো ওই ব্যক্তি যে কোরআন গ্রহণ করে তা ছেড়ে দিয়েছে আর ফরজ সালাত ছেড়ে ঘুমিয়ে থেকেছে।

২. মুখমণ্ডল আঁকড়া দিয়ে চিরে ফেলা

হবে : উপরোক্ত অবস্থা দেখার পর রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে চিৎ হয়ে শোয়া এক লোকের কাছে নিয়ে গেলেন। যার কাছে এক লোক লোহার আঁকড়া নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আর সে তার চেহারার একদিকে এসে আঁকড়া দ্বারা মুখমণ্ডলের একদিক মাথার পেছনের দিক পর্যন্ত এবং অনুরূপভাবে নাসারন্ধ্র, চোখ ও মাথার পেছন দিক পর্যন্ত চিরে ফেলছে।

এরপর লোকটি চিৎ হয়ে থাকা লোকটির বিপরীত দিকে গিয়ে প্রথম দিকের ন্যায় আচরণ করে। ওই দিক থেকে অবসর হতে না হতেই প্রথম দিকটি ভালো হয়ে যায়। তারপর আবার প্রথমবারের মতো আচরণ করে। তিনি বলেন, আমি বললাম, সুবহানাল্লাহ! এরা কারা? আগন্তুকরা বলেন : সে হলো ওই ব্যক্তি, যে সকালে নিজ ঘর থেকে বের হয়ে এমন মিথ্যা বলে, যা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।

৩. আগুনের লেলিহান শিখা স্পর্শ

করবে : দ্বিতীয় ব্যক্তিকে দেখার পরে সাথিদ্বয় রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে নিয়ে চুলার মতো একটি গর্তের কাছে পৌঁছলেন।

আর তথায় শোরগোলের শব্দ ছিল। রাসুল (সা.) বলেন, আমরা তাতে উঁকি মেরে দেখলাম, তাতে বেশ কিছু উলঙ্গ নারী ও পুরুষ আছে। আর নিচ থেকে বের হওয়া আগুনের লেলিহান শিখা তাদেরকে স্পর্শ করছে। যখনই লেলিহান শিখা তাদের স্পর্শ করে, তখনই তারা উচ্চৈঃস্বরে চিৎকার করে ওঠে। তিনি বলেন, আমি তাদের বললাম, এরা কারা? তারা জানালেন, এরা হলো ব্যভিচারী ও ব্যভিচারিণীর দল।

৪. রক্তিম নদীতে সাঁতার কাটবে : এরপরে তাঁরা রক্তের মতো লাল একটি নদীর তীরে গিয়ে পৌঁছলেন। তথায় এক ব্যক্তিকে সাঁতার কাটতে দেখলেন। সে নদীর তীরে অন্য এক লোক তার কাছে অনেক পাথর একত্র করে রেখেছে। সাঁতারকারী লোকটি বেশ কিছুক্ষণ সাঁতার কেটে পাথর একত্র করে রাখা লোকটির কাছে এসে মুখ খুলে দেয় আর ওই ব্যক্তি তার মুখে একটি পাথর ঢুকিয়ে দেয়। এরপর সে আবার সাঁতার কাটতে থাকে; আবার ফিরে এসে মুখ খুলে দেয়, আর ওই ব্যক্তি তার মুখে একটা পাথর ঢুকিয়ে দেয়। রাসুল (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, এরা কারা? জবাবে বলা হলো, সে হলো সুদখোর।