ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি হাওলাদার ও সাধারণ সম্পাদক শাওন

নিম্ন আদালতের আইনজীবীদের সংগঠন ঢাকা আইনজীবী সমিতির নেতৃত্ব ধরে রেখেছে আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ ২৩টি পদের মধ্যে ২১টিতেই জিতেছে তারা। দুই দিনের ভোট শেষে আবদুর রহমান হাওলাদার সভাপতি ও মো. আনোয়ার শাহাদাত শাওন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।

অরাজনৈতিক পেশাজীবী সংগঠন হলেও বরাবরই ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে প্যানেলগুলো রাজনৈতিক পরিচিতি পেয়েছে।

আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের মনোনীত প্যানেলটি ‘সাদা প্যানেল’ আর বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্যের প্যানেল ‘নীল প্যানেল’ হিসেবে পরিচিত।ঢাকা আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটিতে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ দাপ্তরিক পদ ১৩টি। সদস্য পদ ১০টি। সব মিলিয়ে মোট পদ ২৩টি।

সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ সব দাপ্তরিক পদে জয় হয়েছে সাদা প্যানেলের। ১০টি সদস্য পদের মোট দুটিতে জয় হয়েছে নীল প্যানেলের।যাচাই-বাছাইয়ের পর গত ৮ ফেব্রুয়ারি প্রার্থীদের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। পরে দুই সংগঠনই গত ১০ ফেব্রুয়ারি মনোনীত প্রার্থীদের নিয়ে ২৩ সদস্যের প্যানেল ঘোষণা করে।

এর বাইরে সভাপতি ও সমাজকল্যাণ পদে নির্বাচন করেছেন দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী।গত ২৮ ও ২৯ ফেব্রুয়ারি ভোট হয়। প্রথম দিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলে। দুপুরে এক ঘণ্টা বিরতি ছিল। দ্বিতীয় দিন সকাল ৯টা থেকে ভোট শুরু হলেও সাদা ও নীল প্যানেলের আইনজীবীদের হট্টগোলে দুই ঘণ্টার মতো ভোটগ্রহণ স্থগিত ছিল।

ভোটগ্রহণের মধ্যে এদিন দুপুর ১২টার দিকে জাল ব্যালটে ভোট নেওয়ার অভিযোগ তুলে হট্টগোল শুরু করেন আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা। পরে আওয়ামীপন্থীদের বিরুদ্ধে ব্যালট ছিনতাইয়ের অভিযোগ তোলেন বিএনপিপন্থীরা। পাল্টাপাল্টি অভিযোগে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করলে ভোটগ্রহণ স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন।

পরে সমিতির সাবেক সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে নির্বাচন পরিচালনা কমিটিগুলো। আলোচনার পর বেলা সাড়ে ৩টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়, চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। প্রধান নির্বাচন কমিনার অ্যাডভোকেট মোখলেসুর রহমান বাদলের নেতৃত্বে ১০ জন কমিশনার এ নির্বাচনের দায়িত্বে ছিলেন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোখলেসুর রহমান বাদল কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘বরাবরই ভোটের সময় কিছু না কিছু ঘটনা ঘটে থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। দ্বিতীয় দিনের ভোটে অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে ভোটগ্রহণ দুই ঘণ্টার মতো স্থগিত করেছিলাম। পরে আবার ভোট হয়েছে। ২১ হাজার ২০৮ জন ভোটারের মধ্যে দুই দিনে ভোট পড়েছে ৯ হাজার ৬৯০টি। সেই হিসেবে ভোট পড়েছে ৪৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ।’

তিনি বলেন, ‘সব পক্ষের উপস্থিতিতে ভোট গণনা হয়েছে। কারো কোনো অভিযোগ নেই। সমিতির সাবেক নেতা ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরাও ছিলেন। সব পক্ষই ফলাফল মেনে নিয়েছেন। সাদা প্যানেল ২১টি পদে জয় পেয়েছে। নীল প্যানেল ২টিতে।’

সাদা প্যানেল থেকে অন্যন্য বিজয়ীরা হলেন- আবুল কালাম মোহাম্মদ আক্তার হোসেন (জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি), মো. আবু তৈয়ব (সহ-সভাপতি), মো. ওমর ফারুক (অর্থ সম্পাদক), মো. মাসরাত আলী তুহিন (জ্যেষ্ঠ সহ-সাধারণ সম্পাদক), আসাদুজ্জামান বাবু (সহ-সাধারণ সম্পাদক), হুমায়ূন কবির সবুজ (লাইব্রেরি সম্পাদক), মনিরা বেগম মণি (সাংস্কৃতিক সম্পাদক), সরোয়ার জাহান (দপ্তর সম্পাদক), মো. ওয়াকিলুর রহমান (ক্রীড়া সম্পাদক), প্রদীপ চন্দ্র সরকার (সমাজকল্যাণ সম্পাদক) ও সৈয়দা ফরিদা ইয়াসমিন জেসী (তথ্য ও যোগাযোগ সম্পাদক)।

এ ছাড়া কার্যনির্বাহী কমিটির ১০টি সদস্য পদের মধ্যে আটটিতে সাদা প্যানেলের বিজয়ীরা হলেন- হাফিজ আল মামুন, শাহীন আহমেদ রূপম, মো. ইমরান হাসান, কাজী হুমায়ূন কবির, এমদাদুল হক এমদাদ, মাহমুদুল হাসান, সুমন আহমেদ ও মো. আব্দুর রহমান মিয়া। বাকি দুটি কার্যনির্বাহী পদে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্যের প্যানেল ‘নীল প্যানেল’ মো. আনোয়ার হোসাইন চাঁদ ও গাজী তানজিল আহমেদ বিজয়ী হয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর