রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে শহীদ সেলিম ও দেলোয়ারের আত্মত্যাগ এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ও মুক্তিকামী মানুষের জন্য অনন্য প্রেরণা হয়ে থাকবে। তিনি শহীদ ছাত্রনেতা সেলিম ও দেলোয়ারের শাহাদৎবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া এক বানীতে এ কথা বলেন।
মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, “মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে ২৮ ফেব্রুয়ারি এক ঐতিহাসিক দিন। ১৯৮৪ সালের এই দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র ছাত্রলীগ নেতা সেলিম ও দেলোয়ার স্বৈরাচারবিরোধী মিছিলে অংশ নিয়ে পুলিশের ট্রাকের চাপায় পিষ্ট হয়ে নির্মমভাবে নিহত হন।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি একটি অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাঁরই নেতৃত্বে দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা অর্জন করি কাঙ্ক্ষিত বিজয়।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নৃশংসভাবে হত্যার মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা রুদ্ধ করা হয়। উত্থান ঘটে স্বৈরশাসনের। কিন্তু এদেশের ছাত্র সমাজ সব সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে গেছে। সেই ধারাবাহিকতায় ১৯৮৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্যপরিষদ আয়োজিত মিছিলে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতাকর্মী যোগ দিয়েছিলেন। মিছিলের এক পর্যায়ে পুলিশের ট্রাকের চাপায় পিষ্ট হয়ে নিহত হন ছাত্রনেতা সেলিম ও দেলোয়ার, আহত হন আরও অনেকে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কন্ঠস্বর শহিদ সেলিম ও দেলোয়ারের মৃত্যুতে ঢাকাসহ দেশব্যাপী গণতন্ত্রকামী মানুষের মিছিলে প্রকম্পিত হয় রাজপথ, বিক্ষোভে ফেটে পড়ে সারাদেশ। ধারাবাহিক আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে স্বৈরাচারের পতন ত্বরান্বিত হয় এবং ১৯৯০ সালে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা লাভ করে।
অনেক আত্মত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া গণতন্ত্রের এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে সকলে সচেষ্ট থাকবেন বলেও প্রত্যাশা করেন রাষ্ট্রপতি।