হুমায়ূন স্যার আমারে রাস্তা থাইকা তুইলা আনছে : কুদ্দুস বয়াতি

১৯ জুলাই হুমায়ূন আহমেদের চতুর্থ প্রয়াণ দিবস। হুমায়ূন আহমেদের অন্যতম স্নেহভাজন কুদ্দুস বয়াতি। হুমায়ূন আহমদের সাথে অজস্র স্মৃতি রয়েছে কুদ্দুস বয়াতির। তাঁর সাথে কথা বলে লিখেছেন মাহতাব হোসেন

‘হুমায়ূন আহমেদ স্যার আমারে রাস্তা থাইকা তুইলা আইনা বিশ্বের কাছে পরিচয় করাই দিছেন। আমি তার কাছে অনেক কৃতজ্ঞ। আমার স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞতার শ্যাষ নাই’ বলছিলেন লোক গানের গায়ক কুদ্দুস বয়াতি।

কিভাবে রাস্তা থেকে তুলে আনলেন? কুদ্দুস বলেন, ১৯৮৯ সালে খাদক নাটকে একটা চরিত্রে নাম আছিল বজলু। বজলুরে সবাই খাদক নামে চেনে। সে সবকিছু খাইয়া ফালায়। ওইখানে একটা দৃশ্য আছিল যে বজলু একটা গরু খাইয়া ফেলবো। আর সেই সময় একজন গায়ক লাগবো, যে গান গাইয়া উৎসাহ দিব বজলুরে।

কুদ্দুস বয়াতি বলেন, শুরুটা ছিল এইরকম, ‘হুমায়ূন আহমেদ স্যার আমারে খবর পাঠাইলেন। দেখি আমার ভাঙাচোরা ঘরে কজন লোক আমারে ডাকতাছে। আমি চিনি না তারে। সে কয় তোমারে স্যার ডাকে। আমি স্যার রে চিনি না। ওর লগে গেলাম। নাটকের শুটিং হইতাছিল কেন্দুয়ায়। গিয়া দেখি শুটিং হয়, আমারে হুমায়ূন আহমেদ কইলেন এইখানে একটা গান গাইতে হবে দুই মিনিটের। আমি গান লিখে দিচ্ছি। আমি কইলাম স্যার আমি পড়ালেখা জানি না। আপনে লেইখা দিওলে আমি পারমু না। আমি নিজে নিজে গাই? তিনি আমারে গান বাঁধতে দিলেন। আমি গান বাইধাঁ তারে শুনালাম। উনি মহাখুশি হইলেন। আমারে দেখা গেল টিভিতে। এইভাবে মানুষ একটু চিনতে শুরু করল।’

এখান থেকেই শুরু আপনার? কুদ্দুস বয়াতি বলেন, ‘আমি গরীব মানুষ। নাটকের গান আমার বিশাল কিছু। কিন্তু ১৯৯২ সালে আমারে হুমায়ূন আহমেদ ফের ডাইকা পাঠাইলেন ঢাকার এক বাড়িতে। আমি গিয়া দেখি সবাই উনারে স্যার স্যার কইতাছে। আমারে উনি বললেন, কুদ্দুস তুমি আমারে চেনো? আমি বললাম না আমি তো চিনি না। উনি কইলেন আমার বাড়িও কেন্দুয়ায়। তখন উনি আমারে এই দিন দিন নয় গানের সুযোগ কইরা দিলেন। শিশু শিক্ষার জন্য তৈরি করা এই গান দিয়া পুরা দ্যাশ আমারে চেনে। আমি বিদেশে যাইতে পারি আজ হুমায়ূন স্যারের জন্য। আমি তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ।’

স্যারকে মনে পড়ে না? কুদ্দুস বলেন, এইডা একটা কথা কইলেন ভাইজান, স্যাররে আমার সব সময়ই মনে পড়ে। উনি লেখালেখি শুরু করার পর নিজের দ্যশের কথা গ্রামের মানুষের কথা মনে করছেন। কে ভাল গাইতে পারে, কে ভাল কাজ করতে পারে। এইভাবে তিনি আমারে খুঁইজা আনলেন। কাইল তার মৃত্যবার্ষিকী। আমার কল্যাণপুরের অফিসে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করছি। আল্লাহ স্যাররে যেন বেহেস্তে দেন।

হুমায়ূন আহমেদের চতুর্থ প্রয়াণ দিবসে কুদ্দুস বয়াতি তাঁর অফিস ৩৮/৩ রোড ১১ কল্যাণপুরে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর