আঁটসাঁট বোলিংয়ে পাকিস্তানকে বেশি দূর যেতে দিলেন না নাহিদা আক্তার। মাঝারি লক্ষ্যে শুরুর জুটিতে রেকর্ড গড়লেন ফারজানা হক, মুর্শিদা আক্তার। দুজনের পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংসে অনায়াস জয়ের সঙ্গে সিরিজও নিজেদের করে নিল বাংলাদেশ নারী দল। মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ৭ উইকেটে জিতেছে বাংলাদেশ। ১৬৭ রানের লক্ষ্য ২৬ বল বাকি থাকতেই ছুঁয়ে ফেলেছে নিগার সুলতানা জ্যোতির দল। সিরিজের প্রথম ম্যাচ ৫ উইকেটে হেরেছিল বাংলাদেশ
পরের ম্যাচ টাই করে সুপার ওভারে জয় পায় তারা। আর এই জয়ে প্রথমবার পাকিস্তানের বিপক্ষে জিতল তিন ম্যাচের সিরিজ। ২০১৪ সালে দুই ম্যাচের সিরিজে পাকিস্তানকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এবারের সিরিজটি জিতে আইসিসি উইমেন’স চ্যাম্পিয়নশিপে এক ধাপ উপরে উঠল নিগারের দল। ১২ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে তাদের বর্তমান অবস্থান সাতে। ১৫ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে পাকিস্তান। দলকে দারুণ জয় এনে দেওয়ার পথে ১২৫ রানের জুটি গড়েন দুই ওপেনার ফারজানা ও মুর্শিদা। ওয়ানডেতে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উদ্বোধনী জুটি। এতদিন রেকর্ডটি ছিল ২০১১ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে শারমিন আক্তার ও আয়েশা রহমানের ১১৩ রান। সব মিলিয়ে এই সংস্করণে যে কোনো উইকেটে বাংলাদেশের এর চেয়ে বড় জুটি আছে আর একটি। ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তৃতীয় উইকেটে রুমানা আহমেদ, শারমিন আক্তারের ১২৭ রান। ৩৫তম ওভারে আম্পায়ারের প্রশ্নবিদ্ধ এলবিডব্লিউয়ের সিদ্ধান্তে ভাঙে ফারজানা-মুর্শিদার জুটি। ক্যারিয়ারের দশম পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংসে ১১৩ বলে ৫ চারে ৬২ রান করে ড্রেসিং রুমে ফেরেন ফারজানা। এক ওভার পর ফিরে যান ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় ফিফটিতে ৬ চারে ৫৪ রান করা মুর্শিদা। পরের ওভারে কোনো বল খেলার আগেই ফাহিমা খাতুন রান আউট হলে কিছুটা শঙ্কা জাগে বাংলাদেশ শিবিরে। তবে সোবহানা মোস্তারিকে নিয়ে ৩৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে জয় নিশ্চিত করেন নিগার। সোবহানা ১৯ ও নিগার ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন। এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা পাকিস্তানেরও শুরুটা বেশ ভালো হয়। বাংলাদেশের ফিল্ডিং ব্যর্থতায় উদ্বোধনী জুটিতে ৬৫ রান যোগ করেন সাদাফ শামস ও সিদরা আমিন। বিংশতম ওভারে ৩১ রান করা সাদাফকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন নাহিদা আক্তার। সিদরা দুইবার জীবন পেয়ে খেলেন ৮৪ রানের ইনিংস। ওপেনিংয়ে নেমে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ১৪৩ বলে ৩ চারে ইনিংসটি খেলেন ৩১ বছর বয়সী এই ব্যাটার। ৮ রানে তাকে প্রথম জীবন দেন স্বর্ণা আক্তার। ৩২ রানে ডিপ মিড উইকেটে লোপ্পা ক্যাচ ছাড়েন মারুফা আক্তার। পাকিস্তানের আর কোনো ব্যাটার ১৫ রানও করতে পারেনি। একারণেই বড় হয়নি তাদের সংগ্রহ। বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ৩ উইকেট নেন নাহিদা। রাবেয়া খান ধরেন ২ শিকার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান: ৫০ ওভারে ১৬৬/৯ (সাদাফ ৩১, সিদরা ৮৪*, মুনিবা ১৪, বিসমাহ ২, আলিয়া ১, নিদা ৮, নাজিহা ১, উম্মে হানি ০, দিয়ানা ১১, সান্ধু ৩, সাদিয়া ৫*; মারুফা ৬-১-২২-০, নাহিদা ১০-৩-২৬-৩, রাবেয়া ১০-০-৩৫-২, ফাহিমা ১০-০-৩৩-১, নিশিতা ১০-১-২৯-১, স্বর্ণা ৪-০-১৯-১)
বাংলাদেশ: ৪৫.৪ ওভারে ১৬৭/৩ (ফারজানা ৬২, মুর্শিদা ৫৪, নিগার ১৮*, ফাহিমা ০, সোবহানা ১৯*; সাদিয়া ১০-০-৩০-০, দিয়ানা ৫.৪-০-৩৫-০, নিদা ৯-০-৩৩-০, সান্ধু ১০-১-২৭-২, উম্মে হানি ১০-০-৩২-০, বিসমাহ ১-০-৩-০)
ফল: বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: বাংলাদেশ ২-১ ব্যবধানে জয়ী
প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: ফারজানা হক
প্লেয়ার অব দা সিরিজ: নাহিদা আক্তার