হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভারতে চলমান ওয়ানডে বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে খুবই নাজেহাল অবস্থার মুখে পড়েছে টাইগাররা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করলেও পরের চারটি ম্যাচেই শোচনীয় পরাজয় হয়েছে সাকিবদের।
সবশেষ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অবিশ্বাস্য সেঞ্চুরির পরও হার এড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। অথচ গত এশিয়া কাপেও দর্শক হয়ে ছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বিশ্বকাপেও তার জায়গা পাওয়া নিয়ে ছিল সংশয়। এরপর মাহমুদউল্লাহকে দলে অন্তর্ভুক্তির জন্য এরপর আন্দোলনও করেছেন সমর্থকরা।
শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপের আগমুহূর্তে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে ফিরে রিয়াদ বুঝিয়ে দিয়েছেন– তিনি ফুরিয়ে যাননি। আর রিয়াদই এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে টাইগারদের সেরা পারফরমার। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে শঙ্কা ছিল বিশ্বকাপ ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পরাজয়ের। তবে, রিয়াদের এক সেঞ্চুরিতে অন্তত সেই লজ্জা থেকে মুক্তি পেয়েছে টাইগাররা।
আইসিসি ইভেন্টে নিজের তৃতীয় সেঞ্চুরির পর থেকেই সবার প্রশংসায় ভাসছেন বাংলাদেশের এই মিডল-অর্ডার ব্যাটার। যে তালিকায় যুক্ত হয়েছেন পাকিস্তানের বিশ্বকাপজেতা ক্রিকেটার এবং ধারাভাষ্যকার রমিজ রাজা। সাবেক এই ব্যাটার বিশ্বাস করেন, মাহমুদউল্লাহর এই এক ইনিংসই বাংলাদেশকে জাগিয়ে তুলবে। পরের ম্যাচেই এর প্রতিফলন দেখার ব্যাপারে আশাবাদী তিনি।
পিসিবির সাবেক প্রধান রিয়াদের প্রশংসা যেমন করেছেন, তেমনি তাকে নিজের পছন্দের ব্যাটার হিসেবেও উল্লেখ করেন, ‘সে আমার খুব পছন্দের। কারণ, চুপচাপ থেকে সে ব্যাটিং করে যায়। বিশ্বকাপ দলে শুরুতে তার নাম (থাকার কথা) ছিল না। পরে দলে ঢুকেছে। এরপরও সে অসাধারণ ইনিংস খেলেছে। বিশ্বকাপে সে আগেও ভালো করেছে। এটা তার তৃতীয় সেঞ্চুরি। তার হেলমেটে বল লেগেছিল। কিন্তু এরপরও সে হুক পুল অনেক ভালো খেলেছে।’
রমিজ রাজা কথা তুলেছেন মুশফিকুর রহিম এবং সাকিব আল হাসানকে নিয়েও। দলের সিনিয়র দুই ক্রিকেটারের ব্যাটিং নিয়ে সমালোচনাও করেছেন সাবেক এই ব্যাটার, ‘যদি ব্যাটিংয়ে আপনার দলের প্রথম ৫–৬ জনের মধ্যে একজনই শুধু দুই অঙ্ক স্পর্শ করে, তাহলে আপনি রান তাড়া কীভাবে করবেন! আর অভিজ্ঞ দুই ক্রিকেটার মুশফিক ও সাকিব যদি তাড়াতাড়ি আউট হয়ে যায় তবে চাপ বেড়ে যায়। এর মধ্যেও মাহমুদউল্লাহ দারুণ একটি ইনিংস খেলেছে।’
মাহমুদউল্লাহর এই ইনিংস বাংলাদেশকে নতুন করে জাগিয়ে দিতে পারে বলেও মন্তব্য পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়কের, ‘এই ইনিংসে সে বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমে একটি বার্তাও দিয়েছে। বিশেষ করে ব্যাটসম্যানদের জন্য। সে জানিয়েছে, যদি আপনার বড় মন থাকে, আবেগ থাকে, ব্যাকফুটে যদি ভালো খেলতে পারেন এবং নিজেকে যদি সময় দেন, তবে আপনি যেকোনো বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে ভালো করতে পারেন।
বাংলাদেশ পরের ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াবে, এমনটাই প্রত্যাশা রমিজের, ‘সব মিলিয়ে অসাধারণ একটি ইনিংস সে খেলেছে। কারণ, যখন উইকেট পড়তে থাকে এবং আপনি জানেন যে জেতা কঠিন, তখন মনোযোগও আর থাকে না। কিন্তু সে জানত, নিজেকে তার প্রমাণ করতে হবে। সে জানত, তার নিজের ক্যারিয়ারের জন্য এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। সে হয়তো ভেবেছে, এই ইনিংসের কারণে পরের ম্যাচে বালাদেশ ঘুরে দাঁড়াতে পারে। বাংলাদেশকে বেশ কিছু বার্তা সে দিয়েছে। এখন আগামী ম্যাচে বাংলাদেশ কী করে সেটাই দেখার বিষয়।’