হাওর বার্তা ডেস্কঃ সম্প্রতি ভারতের চন্দ্রযান ৩-এর সফল অবতরণ বিশ্ববাসীকে হতবাক করেছে। ভারতের এই ইতিহাস বিশ্ব ইতিহাসে যোগ করবে অনেক অনেক তথ্য। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণকারী প্রথম দেশ হিসেবে ইতিহাস গড়লো তারা।
ভারতের চন্দ্রযান ৩-এর আগে একবার মহাকাশযান চন্দ্রযান-২ অভিযান ব্যর্থ হয়েছিল। শুধু ভারত নয় অনেক দেশ তাদের এই অভিযানে ব্যর্থ হয়েছে বারবার। সেই তালিকায় আছে জাপান, ইসরায়েল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়নসহ বহু দেশ। ১৯৬০-এর দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন একের পর এক চন্দ্রাভিযান সংঘটিত করেছিল, যতক্ষণ পর্যন্ত না সাফল্য এসেছে।
অবশেষে ১৯৬৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অ্যাপেলো মিশনে সফলভাবে চাঁদের মাটিতে অবতরণ করে মানুষ। সেদিন অ্যাপোলো-১১ অভিযানের সময় যুক্তরাষ্ট্র প্রথমবার চাঁদে দেশের পতাকা স্থাপন করে। ১৯৬৯ থেকে ১৯৭২ এর মধ্যে চাঁদের বুকে ছয়বার মানুষের অবতরণ ঘটে এবং অসংখ্যবার মনুষ্যবিহীন চন্দ্রাভিযান করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
সম্প্রতি রাশিয়ার চন্দ্রযান লুনা-২৫ মহাকাশযান নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং প্রাক-অবতরণ কক্ষপথের জন্য প্রস্তুতিতে সমস্যা হওয়ার পরে চাঁদে বিধ্বস্ত হয়। রাশিয়ার প্রথম চন্দ্রযান যেটা চাঁদের মাতীতে অবতরণে ব্যর্থ হয়েছে। ১৯৫৯ সালে প্রথম রাশিয়া তাদের চন্দ্রযান লুনা ২ চাঁদের মাটিতে সফলভাবে অবতরণ করেছিল।
তবে জানেন কি, কেন বারবার চাঁদের মাটি ছুঁতে ব্যর্থ হয়েছে মহাকাশযানগুলো? এই ব্যর্থতার কারণ কি? আসলে অবতরণের জন্য অবস্থান নির্ণয়ও সহজ নয় চাঁদে। সেখানে নেই কোনো জিপিএস সিস্টেম। তাই মহাকাশযান একটি নির্দিষ্ট স্থানে অবতরণ করার জন্য উপগ্রহের নেটওয়ার্কের উপরেও নির্ভর করতে পারে না।
এজন্য চাঁদের মাটিতে নির্দিষ্ট স্থানে মৃসণভাবে অবতরণ করতে মহাকাশযানে অবস্থিত কম্পিউটারগুলোকে দ্রুত গণনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। অবতরণের কয়েক কিলোমিটার আগে প্রপালশন সিস্টেমের ধাক্কায় সেন্সরগুলোও ঠিক করে কাজ করে না অনেক সময়। তখন দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া দুষ্কর হয়ে ওঠে। চাঁদের বুকে অবস্থিত গর্ত, পাহাড়ি ভূভাগ অনেক ক্ষেত্রে অবতরণের জন্য অবস্থান নির্ণয়ে বাধা দেয়। এসব মিলিয়েই ব্যর্থ হয় চন্দ্রযানগুলোর সফল অবতরণ।