কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের আটটি দানবাক্স থেকে এবার পাওয়া গেল পাঁচ কোটি ৭৮ লাখ ৯ হাজার ৩২৫ টাকা। এটিই মসজিদের ইতিহাসে দানবাক্স থেকে পাওয়া সর্বোচ্চ পরিমাণ টাকা। তিন মাস ১৪ দিন পর শনিবার (১৯ আগস্ট) সকালে খোলা হয় এই দানবাক্স। সারা দিন গণনা শেষে সন্ধ্যায় জানানো হয় টাকার অঙ্ক।
টাকা ছাড়াও দানবাক্সে বিদেশি মুদ্রা ও সোনা-রুপার অলংকারও ছিল।
রাত সোয়া ৯টার দিকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী এসব তথ্য জানান।
জানা গেছে, এর আগে ৬ মে খোলা হয়েছিল মসজিদের দানবাক্স। তখন সেখানে পাওয়া যায় পাঁচ কোটি ৫৯ লাখ সাত হাজার ৬৮৯ টাকা।
সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কঠোর নিরাপত্তায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখের উপস্থিতিতে বেশ কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে খোলা হয় মসজিদের সব বাক্স। এরপর বস্তাবন্দি টাকা নিয়ে যাওয়া হয় মসজিদের দোতলায়। টাকাগুলো ভরতে ২৩টি বস্তার প্রয়োজন হয়। টাকা গণনার দায়িত্বে ছিলেন রূপালী ব্যাংকের ৬০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্থানীয় মাদরাসার ১৩৮ জনসহ মোট ১৯৮ জন।
মসজিদ পরিচালনা, এর অর্থ-সম্পদ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায় ২৯ সদস্যের একটি কমিটি রয়েছে। এর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন যথাক্রমে জেলা প্রশাসক ও কিশোরগঞ্জ পৌর মেয়র।
পাগলা মসজিদের দানবাক্স খোলা উপকমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) কাজী মহুয়া মমতাজ জানিয়েছেন, চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি খোলা হয়েছিল সিন্দুক। তখন পাওয়া যায় চার কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা। এর আগে গত বছরের ১ অক্টোবর পাওয়া যায় তিন কোটি ৮৯ লাখ ৭০ হাজার ৮৮২ টাকা।
২ জুলাই বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার বাদে পাওয়া যায় তিন কোটি ৬০ লাখ ২৭ হাজার ৪১৫ টাকা। মসজিদের সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, দানের টাকায় মসজিদের বড়সড় উন্নয়ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। মসজিদ ঘিরে এখানে আন্তর্জাতিক মানের একটি দৃষ্টিনন্দন বহুতল কমপ্লেক্স নির্মাণ হবে। যেখানে ৩০ হাজার মানুষ একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবে। থাকবে সমৃদ্ধ লাইব্রেরিসহ আরো নানা আয়োজন। কমপ্লেক্সের প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। দ্রুত সময়ের মধ্যে শুরু হবে প্রকল্পের কাজ।