মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ৯৮তম জন্মদিন আজ। ১৯২৫ সালের ২৩ জুলাই গাজীপুর জেলার কাপাসিয়ার দরদরিয়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানান কর্মসূচি নিয়েছে। বিকেল সাড়ে ৩টায় বঙ্গতাজ স্বাস্থ্যসেবা সংস্থার আয়োজনে জাতীয় প্রেস ক্লাবে একটি আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হবে।
১৯৫০ সালে তাজউদ্দীন আহমদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বিএ (সম্মান) ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬৪ সালে রাজনৈতিক বন্দি হিসেবে কারাগার থেকেই এলএলবি ডিগ্রির জন্য পরীক্ষা দেন এবং পাস করেন। তিনি ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। তিনি ১৯৬৪ সালে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ১৯৬৬ সালে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগের সভাপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বেই আওয়ামী লীগ দেশের জনগণকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করে।
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তাজউদ্দীন আহমদ। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
তাজউদ্দীন আহমদের পরিচিতি ছিলেন একজন সৎ ও মেধাবী রাজনীতিবিদ হিসেবে। দেশের মানুষ তাকে ভালোবেসে ডাকতেন বঙ্গতাজ বলে। পাকহানাদারদের কাছ থেকে দেশ মুক্ত হলে ২২ ডিসেম্বর তাজউদ্দিন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা ঢাকায় প্রত্যাবর্তন করেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ফিরে এলে তাজউদ্দীন আহমদ প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান। তিনি অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ১৯৭৩ সালে ঢাকা-২২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় বাজেট পেশ ও প্রথম পাঁচশালা পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন তাজউদ্দিন আহমদ।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার পর আরও তিনজন জাতীয় নেতাসহ তাকে বন্দি করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়। সেই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারেই ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঘাতকের বুলেটে নিহত হন তিনি।