ঢাকা ১১:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মদনে প্রধান শিক্ষকের পকেট কমিটি গঠন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:২৫:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই ২০২৩
  • ১৮৯ বার

মদন (নেত্রকোণা) প্রতিনিধিঃ নেত্রকোণা মদন উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নে এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে পকেট কমিটি গঠন করার অভিযোগ উঠেছে। গুঞ্জন আছে যে, এসব কাজে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন এটিও নাজমুল হুদা।

জানা যায় যে, উপজেলার বালালী উত্তর পাড়া (তরফ) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিচালনা কমিটিতে বালালী বাঘমারা উচ্চ বিদ্যালয়ের কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষক সৈয়দ খলিল উল্লাহ (ইউসুফ)কে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে সভাপতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ আছে।

অথচ প্রাথমিক স্কুল কমিটি গঠন নীতিমালায় স্পষ্ট লিখা আছে, কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করতে হলে, সর্বনিম্ন স্নাতক পাশ হতে হবে। কোথাও এমন কথা লিখা নেই যে, স্নাতক ডিগ্রী সমমান হলে সভাপতি করা যাবে! এদিকে, সৈয়দ খলিল উল্লাহ (ইউসুফ) বাঘমারা গ্রামে ভাড়াটিয়া বাসিন্দা। তার স্থায়ী ঠিকানা ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায়।

কিন্তু স্থানীয় অনেকেই রয়েছেন, যারা উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করে বালালী বাঘমারা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। তাদের কোনো একজনকেও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কমিটিতে না এনে, বাহিরের একজন ডিপ্লোমা ধারীকে সভাপতি করায়, অনেকে মনে করছেন এটা পকেট কমিটি।

অন্যদিকে, প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন তার নিজ স্বার্থ হাসিল করার জন্যই সু-কৌশলে এ পথ অবলম্বন করেন বলে অনেকে মনে করেন। কেনো না, প্রধান শিক্ষক উপজেলা শিক্ষা অফিসের কাজের দোহাই দিয়ে দিনের পরপর দিন স্কুলে আসেন না। কিন্তু শিক্ষক হাজিরা খাতায় উপস্থিত আছেন নিয়মিতই।

উপজেলার সচেতন মহল বলছেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসের দূর্বলতা থেকেই এধরণের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। সহকারী শিক্ষা অফিসাররা নিয়মিত স্কুল পরিদর্শনে যান না। যে দু’এক দিন যান, তাও উপজেলা সদরের দু’তিন কিলোর ভিতরেই। আর বাকী সব কাগজে কলমে দেখানো হচ্ছে।

তারা আরো বলেন বলছেন, শিক্ষা অফিসেও একটা শিক্ষক সিন্ডিকেট কাজ করে। যাদের প্রায় প্রতিদিনই শিক্ষা অফিসে হুমড়ি খেয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন তাদেরই একজন। সহকারী শিক্ষা অফিসারাও তাদের সাথে চা আড্ডায় সময় পাড় করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসে এতোগুলো স্টাফ থাকার পরও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দিয়ে অফিস পরিচালনা করা হয়। এসব বিষয়ে সাংবাদিকরা কথা বললে বা লিখতে গেলে বিভিন্ন মহল থেকে তাদের কাছে মোবাইলে কল আসে। শিক্ষা অফিসের দূর্বলতা ঢাকতে গণমাধ্যম কর্মীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়।

এ বিষয়ে জানতে, প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মঙ্গবার (১৮ জুলাই), বুধবার (১৯ জুলাই) গেলে থাকে পাওয়া যায়নি। একাধিকবার মোবাইল ফোনে কল দিয়ে না পেয়ে, সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) উপজেলা শিক্ষা অফিসে দেখা হলে তিনি জানান, আমি ছুটিতে আছি।

কমিটি গঠনের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি বালালী বাঘমারা উচ্চ বিদ্যালের প্রধান শিক্ষকের কাছে একজন শিক্ষক প্রতিনিধি চাইলে, তিনি ডিপ্লোমা শিক্ষক সৈয়দ খলিল উল্লাহ(ইউসুফ)কে নির্বাচিত করে দিলে, তাকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। এখন টিও স্যার যদি উনাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে নির্বাচিত করেন আমার কোনো আপত্তি নাই।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আবুল হোসেন বলেন, বালালী উত্তর পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি পদ বাতিল করে এটিওকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করে, পরবর্তীতে নতুন কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মদনে প্রধান শিক্ষকের পকেট কমিটি গঠন

আপডেট টাইম : ১২:২৫:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই ২০২৩

মদন (নেত্রকোণা) প্রতিনিধিঃ নেত্রকোণা মদন উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নে এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে পকেট কমিটি গঠন করার অভিযোগ উঠেছে। গুঞ্জন আছে যে, এসব কাজে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন এটিও নাজমুল হুদা।

জানা যায় যে, উপজেলার বালালী উত্তর পাড়া (তরফ) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিচালনা কমিটিতে বালালী বাঘমারা উচ্চ বিদ্যালয়ের কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষক সৈয়দ খলিল উল্লাহ (ইউসুফ)কে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে সভাপতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ আছে।

অথচ প্রাথমিক স্কুল কমিটি গঠন নীতিমালায় স্পষ্ট লিখা আছে, কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করতে হলে, সর্বনিম্ন স্নাতক পাশ হতে হবে। কোথাও এমন কথা লিখা নেই যে, স্নাতক ডিগ্রী সমমান হলে সভাপতি করা যাবে! এদিকে, সৈয়দ খলিল উল্লাহ (ইউসুফ) বাঘমারা গ্রামে ভাড়াটিয়া বাসিন্দা। তার স্থায়ী ঠিকানা ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায়।

কিন্তু স্থানীয় অনেকেই রয়েছেন, যারা উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করে বালালী বাঘমারা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। তাদের কোনো একজনকেও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কমিটিতে না এনে, বাহিরের একজন ডিপ্লোমা ধারীকে সভাপতি করায়, অনেকে মনে করছেন এটা পকেট কমিটি।

অন্যদিকে, প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন তার নিজ স্বার্থ হাসিল করার জন্যই সু-কৌশলে এ পথ অবলম্বন করেন বলে অনেকে মনে করেন। কেনো না, প্রধান শিক্ষক উপজেলা শিক্ষা অফিসের কাজের দোহাই দিয়ে দিনের পরপর দিন স্কুলে আসেন না। কিন্তু শিক্ষক হাজিরা খাতায় উপস্থিত আছেন নিয়মিতই।

উপজেলার সচেতন মহল বলছেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসের দূর্বলতা থেকেই এধরণের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। সহকারী শিক্ষা অফিসাররা নিয়মিত স্কুল পরিদর্শনে যান না। যে দু’এক দিন যান, তাও উপজেলা সদরের দু’তিন কিলোর ভিতরেই। আর বাকী সব কাগজে কলমে দেখানো হচ্ছে।

তারা আরো বলেন বলছেন, শিক্ষা অফিসেও একটা শিক্ষক সিন্ডিকেট কাজ করে। যাদের প্রায় প্রতিদিনই শিক্ষা অফিসে হুমড়ি খেয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন তাদেরই একজন। সহকারী শিক্ষা অফিসারাও তাদের সাথে চা আড্ডায় সময় পাড় করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসে এতোগুলো স্টাফ থাকার পরও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দিয়ে অফিস পরিচালনা করা হয়। এসব বিষয়ে সাংবাদিকরা কথা বললে বা লিখতে গেলে বিভিন্ন মহল থেকে তাদের কাছে মোবাইলে কল আসে। শিক্ষা অফিসের দূর্বলতা ঢাকতে গণমাধ্যম কর্মীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়।

এ বিষয়ে জানতে, প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মঙ্গবার (১৮ জুলাই), বুধবার (১৯ জুলাই) গেলে থাকে পাওয়া যায়নি। একাধিকবার মোবাইল ফোনে কল দিয়ে না পেয়ে, সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) উপজেলা শিক্ষা অফিসে দেখা হলে তিনি জানান, আমি ছুটিতে আছি।

কমিটি গঠনের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি বালালী বাঘমারা উচ্চ বিদ্যালের প্রধান শিক্ষকের কাছে একজন শিক্ষক প্রতিনিধি চাইলে, তিনি ডিপ্লোমা শিক্ষক সৈয়দ খলিল উল্লাহ(ইউসুফ)কে নির্বাচিত করে দিলে, তাকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। এখন টিও স্যার যদি উনাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে নির্বাচিত করেন আমার কোনো আপত্তি নাই।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আবুল হোসেন বলেন, বালালী উত্তর পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি পদ বাতিল করে এটিওকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করে, পরবর্তীতে নতুন কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছি।