ডেঙ্গু আক্রান্ত সন্তানকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলেন রাত ৩ টায়। ট্রিটমেন্ট শুরু হয়েছে সকাল ৭ টায়। যা হবার তাই হয়েছে। বিকেল ৪ টায় মারা গেলো ৬ বছরের শিশু সন্তান তাশফিন। বাবা হাউমাউ করে কাঁদছিলেন, আর বলছিলেন, রাতে জুনিয়র ডাক্তাররা কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারছিলেন না। তাকে বলা হলো, সকালে বড় ডাক্তাররা এলে ট্রিটমেন্ট শুরু করবেন। এমনকি হাসপাতাল থেকে অক্সিজেনটুকু দিতে পারছিলেন না কর্তব্যরত চিকিৎসক। যে অ্যাম্বুলেন্সে করে বাচ্চাটিকে হাসপাতালে আনা হয়েছে, সেই গাড়ি থেকে নিয়ে অক্সিজেন দিতে বলেন। তাই করলেন বাবা। তারপরও শিশুটিকে বাঁচানো গেলো না। বাবার আক্ষেপ, রক্তের প্লাটিলেট কমে যাচ্ছিল। হাসপাতালে নেওয়ার পরপর ট্রিটমেন্ট শুরু করলে বাচ্চাটিকে হয়তো বাঁচানো যেতো। এই আক্ষেপ নিয়েই হয়তো বাবাকে বাকী জীবন কাটাতে হবে। বাবা আরটিভি অনলাইনের সিনিয়র সাব-এডিটর আবুল হাসান। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় বাবার হাতে সন্তানের লাশ দাফন হবে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, স্বাস্থ্যসেবার কি কোনো উন্নতি হয়েছে? একজন বাবা রাত তিনটায় অক্সিজেন পাবেন না, আইসিইউ পাবেন না, সিনিয়র ডাক্তার পাবেন না, তাহলে কিসের উন্নতি? তদবির ছাড়া, উৎকোচ ছাড়া কেউ কি সরকারি হাসপাতালে ভালো চিকিৎসা পেয়েছেন? এখনো সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের দুর্ব্যবহারে ব্যথিত রোগী ও তাদের স্বজনরা। বারবার সাধারণ জনগণ দাবি জানিয়ে আসছেন, ভিআইপিদের চিকিৎসা সরকারি হাসপাতালে করানোর। সেই দাবিও উপেক্ষিত হয়ে আসছে। জনগণের এই দাবি বাস্তবায়িত হলে সরকারি হাসপাতালের চিত্র পাল্টে যেত। ভিআইপিরা সারাদিন দেশপ্রেমের বুলি আওড়াবেন, আর চিকিৎসা করাবেন বিদেশে কিংবা বেসরকারি হাসপাতালে, এটা জনগণের সঙ্গে তামাশা করা ছাড়া আর কি!
লেখক : আকতার হোসেন
বার্তা সম্পাদক, আরটিভি