ঢাকা ০১:৩৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কনে যৌতুক চাওয়ায় শাশুড়ির মামলা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৪২:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জুন ২০১৬
  • ২৯৪ বার

পাল্টে গেছে যুগ, ঘটছে নিত্যনতুন ঘটনা। এবার কনে যৌতুক চাওয়ায় মামলা করেছে শাশুড়ি। তবে স্বামীর কাছে নয়, শাশুড়ির কাছে।

৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করায় ঢাকার সিএমএম আদালতে বাদী হয়ে কনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন শাশুড়ি। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে পুলিশ বিভাগের পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

ঢাকার জেলার রূপনগর দুয়াড়ী পাড়ার মো. আবুল হোসেনের স্ত্রী রহিমা বেগম বাদী হয়ে ছেলের বউয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

মামলায় অভিযুক্তরা হলেন ছেলের বউ শারমিন ইসলাম (২৩), মো. শাহ আলম, রাজিয়া বেগম, শাহরীন ইসলাম (কলি)।

মামলায় ছেলের বউ শারমীন ইসলাম ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে অভিযোগে বাদী বলেন, আসামি শারমীন ইসলাম অন্যান্য আসামিদের সহযোগিতায় প্রতারণা করে সরল ছেলেদের আকৃষ্ট করে বিয়ে করে।

কিছুদিন যেতে না যেতেই তার চরিত্রের বিভিন্ন খারাপ দিক ফুটে ওঠে। তারপর শারমীন ইসলাম তার সহযোগীদের মাধ্যমে কাবিনের টাকা ও আর আনুষঙ্গিক টাকা দাবি করে বিয়ে বিচ্ছিন্ন করে। এভাবে সে এ নিয়ে ৭টি বিয়ে করে।

তারই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ তার ছেলেকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে। তার স্বভাব চরিত্রের বিভিন্ন খারাপ দিক ধরা পড়ায় তার ছেলে বিদেশ চলে যায়। এরপর ছেলেকে না পেয়ে আসামি গত ২৪ মে বাদিনীর কাছেকাবিনের ৩ লাখ এবং যৌতুক হিসাবে ৫

লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে শাশুড়িকে নাজেহাল করবে বলে হুমকি দেয়।

কিন্তু শাশুড়ি টাকা পরিশোধ না করায় আসামি তার অন্য সহযোগীদের নিয়ে গত ৭ জুন রাতে বাদীর কাছে টাকা দিতে গালমন্দ করে ভয়ভীতি দেখায় ও হুমকি দেয়। এ নিয়ে বাদিনী রূপনগর থানায় পরপর দুটি জিডি করেন। কিন্তু কোনো ফল না পেয়ে বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন।

মামলায় উল্লেখ করা হয়- আসামি শারমিন ইসলাম নিলা ২০১০ সালের ১৫ অক্টোবর মো. নান্টু, পিতা-দেলোয়ারকে কুমারী সেজে বিয়ে করে, সেখানে আসামির পিতার নাম ফিরোজ মিয়া, মাতা-রাজিয়া উল্লেখ করে।

জন্মতারিখ উল্লেখ করা হয় ১৭/১০/১৯৮৭ইং। এরপর তার অাসল চরিত্র ধরা পড়ায় আসামি তার সহযোগীদের নিয়ে নান্টুর কাছ থেকে ২ লাখ টাকা নিয়ে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটায়।

এরপর ২০১৩ সালের ১৮ মার্চ দুবাই এক হোটেলে চাকরি করার সুবাদে পরিচয় হয় আব্দুল ওয়াদুদের। সেখানে প্রেমের ফাঁদে ফেলে তাকে বিয়ে করতে বাধ্য করে।

কাবিননামায় আসামির পিতা শাহ আলম, জন্ম তারিখ-১৭/১০/১৯৯২ইং, নিজেকে কুমারি দাবি করে। দেনমোহর নির্ধারণ করা হয় ২ লাখ টাকা। তিন-চার মাস যেতে না যেতে ঝগড়া সৃষ্টি করে স্বামীর বিরুদ্ধে ঢাকা সিএমএম আদালতে মামলা (১৭/১৪) দায়ের করেন।

ওয়াদুদ ২ লাখ টাকা দিয়ে এ মামলা থেকে অব্যাহতি পায়। এরপর ২০১৪ সালের ৩ জুলাই ইমরান শেখের সাথে প্রেম প্রেম খেলে তাকে বাধ্য করে বিয়ে করতে।

সেখানে আসামির নাম শাহরিন ইসলাম নিলা উল্লেখ করে, পিতা-শাহআলম, মাতা-রাজিয়া, জন্ম তারিখ-০৭/১০/১৯৯২ইং। নিজেকে কুমারী দাবি করা হয়।

দেনমোহর ছিল ২ লাখ টাকা। ৮-৯ মাসের মাথায় আসামির খারাপ স্বভাব চরিত্র ধরা পড়ায় ইমরান শেখ তাকে স্ত্রী হিসেবে অস্বীকার করে। এরপর ২০১৫ সালের ২৩ জুলাই তার বিরুদ্ধে যৌতুক আইনের ৪ ধারায় ৬৪/১৫ মামলা দায়ের করে।

ইমরান শেখের সাথে বিবাহ অটুট থাকা অবস্থায় আসামি অন্যদের সহযোগিতায় বাদিনীর ছেলে সুমনকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বাধ্য করে বিয়ে করতে।

২০১৬ সালের ১৩ জানুয়ারি বিয়ে হয়। এখানে আসামির নিজেকে পরিচয়ে বলেন- নাম শারমিন ইসলাম, পিতা-শাহ আলম, জেলা-পিরোজপুর, জন্ম তারিখ-১৭/১০/১৯৯৩ইং।

নিজেকে কুমারী দাবি করেন তিনি। দেনমোহর নির্ধারণ করা হয় ৩ লাখ টাকা। এ অবস্থায় বাদিনীর ছেলে সুমনের আয় রোজগার না থাকায় মায়ের সহযোগিতায় গত ২৭/০২/১৬ইং তারিখে সৌদি আরব চলে যায়।

এ সংবাদ পেয়ে আসামি অন্যান্য আসামিদের সহযোগিতায় বাদিনীর বাসায় গিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে বাদিনীর কাছে কাবিনের ৩ লাখ টাকা ও যৌতুক হিসাবে ৫ লাখ টাকা দাবি করে।

টাকা না দেয়া হলে শারীরিক ও মানসিকভাবে চরম ক্ষতি করার হুমকি দেয়। এ ঘটনায় ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলা দায়ের করেন বাদী।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

কনে যৌতুক চাওয়ায় শাশুড়ির মামলা

আপডেট টাইম : ১১:৪২:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জুন ২০১৬

পাল্টে গেছে যুগ, ঘটছে নিত্যনতুন ঘটনা। এবার কনে যৌতুক চাওয়ায় মামলা করেছে শাশুড়ি। তবে স্বামীর কাছে নয়, শাশুড়ির কাছে।

৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করায় ঢাকার সিএমএম আদালতে বাদী হয়ে কনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন শাশুড়ি। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে পুলিশ বিভাগের পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

ঢাকার জেলার রূপনগর দুয়াড়ী পাড়ার মো. আবুল হোসেনের স্ত্রী রহিমা বেগম বাদী হয়ে ছেলের বউয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

মামলায় অভিযুক্তরা হলেন ছেলের বউ শারমিন ইসলাম (২৩), মো. শাহ আলম, রাজিয়া বেগম, শাহরীন ইসলাম (কলি)।

মামলায় ছেলের বউ শারমীন ইসলাম ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে অভিযোগে বাদী বলেন, আসামি শারমীন ইসলাম অন্যান্য আসামিদের সহযোগিতায় প্রতারণা করে সরল ছেলেদের আকৃষ্ট করে বিয়ে করে।

কিছুদিন যেতে না যেতেই তার চরিত্রের বিভিন্ন খারাপ দিক ফুটে ওঠে। তারপর শারমীন ইসলাম তার সহযোগীদের মাধ্যমে কাবিনের টাকা ও আর আনুষঙ্গিক টাকা দাবি করে বিয়ে বিচ্ছিন্ন করে। এভাবে সে এ নিয়ে ৭টি বিয়ে করে।

তারই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ তার ছেলেকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে। তার স্বভাব চরিত্রের বিভিন্ন খারাপ দিক ধরা পড়ায় তার ছেলে বিদেশ চলে যায়। এরপর ছেলেকে না পেয়ে আসামি গত ২৪ মে বাদিনীর কাছেকাবিনের ৩ লাখ এবং যৌতুক হিসাবে ৫

লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে শাশুড়িকে নাজেহাল করবে বলে হুমকি দেয়।

কিন্তু শাশুড়ি টাকা পরিশোধ না করায় আসামি তার অন্য সহযোগীদের নিয়ে গত ৭ জুন রাতে বাদীর কাছে টাকা দিতে গালমন্দ করে ভয়ভীতি দেখায় ও হুমকি দেয়। এ নিয়ে বাদিনী রূপনগর থানায় পরপর দুটি জিডি করেন। কিন্তু কোনো ফল না পেয়ে বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন।

মামলায় উল্লেখ করা হয়- আসামি শারমিন ইসলাম নিলা ২০১০ সালের ১৫ অক্টোবর মো. নান্টু, পিতা-দেলোয়ারকে কুমারী সেজে বিয়ে করে, সেখানে আসামির পিতার নাম ফিরোজ মিয়া, মাতা-রাজিয়া উল্লেখ করে।

জন্মতারিখ উল্লেখ করা হয় ১৭/১০/১৯৮৭ইং। এরপর তার অাসল চরিত্র ধরা পড়ায় আসামি তার সহযোগীদের নিয়ে নান্টুর কাছ থেকে ২ লাখ টাকা নিয়ে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটায়।

এরপর ২০১৩ সালের ১৮ মার্চ দুবাই এক হোটেলে চাকরি করার সুবাদে পরিচয় হয় আব্দুল ওয়াদুদের। সেখানে প্রেমের ফাঁদে ফেলে তাকে বিয়ে করতে বাধ্য করে।

কাবিননামায় আসামির পিতা শাহ আলম, জন্ম তারিখ-১৭/১০/১৯৯২ইং, নিজেকে কুমারি দাবি করে। দেনমোহর নির্ধারণ করা হয় ২ লাখ টাকা। তিন-চার মাস যেতে না যেতে ঝগড়া সৃষ্টি করে স্বামীর বিরুদ্ধে ঢাকা সিএমএম আদালতে মামলা (১৭/১৪) দায়ের করেন।

ওয়াদুদ ২ লাখ টাকা দিয়ে এ মামলা থেকে অব্যাহতি পায়। এরপর ২০১৪ সালের ৩ জুলাই ইমরান শেখের সাথে প্রেম প্রেম খেলে তাকে বাধ্য করে বিয়ে করতে।

সেখানে আসামির নাম শাহরিন ইসলাম নিলা উল্লেখ করে, পিতা-শাহআলম, মাতা-রাজিয়া, জন্ম তারিখ-০৭/১০/১৯৯২ইং। নিজেকে কুমারী দাবি করা হয়।

দেনমোহর ছিল ২ লাখ টাকা। ৮-৯ মাসের মাথায় আসামির খারাপ স্বভাব চরিত্র ধরা পড়ায় ইমরান শেখ তাকে স্ত্রী হিসেবে অস্বীকার করে। এরপর ২০১৫ সালের ২৩ জুলাই তার বিরুদ্ধে যৌতুক আইনের ৪ ধারায় ৬৪/১৫ মামলা দায়ের করে।

ইমরান শেখের সাথে বিবাহ অটুট থাকা অবস্থায় আসামি অন্যদের সহযোগিতায় বাদিনীর ছেলে সুমনকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বাধ্য করে বিয়ে করতে।

২০১৬ সালের ১৩ জানুয়ারি বিয়ে হয়। এখানে আসামির নিজেকে পরিচয়ে বলেন- নাম শারমিন ইসলাম, পিতা-শাহ আলম, জেলা-পিরোজপুর, জন্ম তারিখ-১৭/১০/১৯৯৩ইং।

নিজেকে কুমারী দাবি করেন তিনি। দেনমোহর নির্ধারণ করা হয় ৩ লাখ টাকা। এ অবস্থায় বাদিনীর ছেলে সুমনের আয় রোজগার না থাকায় মায়ের সহযোগিতায় গত ২৭/০২/১৬ইং তারিখে সৌদি আরব চলে যায়।

এ সংবাদ পেয়ে আসামি অন্যান্য আসামিদের সহযোগিতায় বাদিনীর বাসায় গিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে বাদিনীর কাছে কাবিনের ৩ লাখ টাকা ও যৌতুক হিসাবে ৫ লাখ টাকা দাবি করে।

টাকা না দেয়া হলে শারীরিক ও মানসিকভাবে চরম ক্ষতি করার হুমকি দেয়। এ ঘটনায় ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলা দায়ের করেন বাদী।