বাবার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর আমার মা মামুনুল হককে বৈধভাবে বিয়ে করেন: সাক্ষ্যতে ঝর্ণার ছেলে

হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় আরও দুই জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।

মঙ্গলবার (৬ জুন) দুপুর ১২টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে মামলার বাদীর ছেলে আব্দুর রহমান ও সোনারগাঁওয়ের সাংবাদিক এনামুল হক বিদ্যুতের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এ মামলায় এই পর্যন্ত ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।

মামুনুল হকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক নয়ন জানান, সাক্ষী আব্দুর রহমান বিজ্ঞ আদালতে বলেছে তার বাবার সঙ্গে মায়ের বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পর তার মা মামুনুল হককে বৈধভাবে বিয়ে করেন। এতে করে স্পষ্টই প্রমাণ হয় মামুনুল হক নির্দোষ। এ মামলা থেকে তিনি অব্যহতি পাবেন। আব্দুর রহমান সাক্ষী দেওয়ার পর বিজ্ঞ আদালতে তার নিরাপত্তা চেয়েছেন আইনজীবী।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) রকিবুদ্দিন আহমেদ (রকিব) চৌধুরী বলেন,এ মামলার বাদী জান্নাত আরা ওরফে ঝর্নার ছেলে আব্দুর রহমান ও প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী সাংবাদিক এনামুল হক বিদ্যুৎ সাক্ষ দিয়ে বলেছে মামুনুল হক বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে জান্নাত আরা ঝর্ণাকে হোটেলে নিয়ে ধর্ষণ করেছে। পরবর্তী সাক্ষীর জন্য আগামী ৮ আগস্ট দিন ধার্য করেছে বিজ্ঞ আদালত।

নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান জানান, সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য নারায়ণগঞ্জ বিজ্ঞ আদালতে আনা হয়েছিল হেফাজত নেতা মামুনুল হককে। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তাকে আবার কাশিমপুর কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান,সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জের আদালতে আনা হয় মামুনুল হককে। একইসঙ্গে আদালতপাড়া জুড়ে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়।এরপর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তাকে আবার কাশিমপুর কারাগারে নেওয়া হয়।

২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর প্রথম দফায় মামুনুল হকের উপস্থিতিতে কথিত দ্বিতীয় স্ত্রীর সাক্ষ্য গ্রহণ করে বিজ্ঞ আদালত। একই সঙ্গে ওই বছরের ৩ নভেম্বর মামুনুল হকের বিরুদ্ধে করা ধর্ষণ মামলায় বিচার কাজ শুরুর আদেশ দেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে,  ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে অবস্থান করছিলেন মামুনুল হক।এ খবরে ওই সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসে তাকে ঘেরাও করেন। এর পরে স্থানীয় হেফাজতের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এসে রিসোর্টে ব্যাপক ভাঙচুর ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান।

এ ঘটনার পর থেকেই মামুনুল হক পালিয়ে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসায় অবস্থান করে আসছিলেন। এ সময় পুলিশ তাকে নজরদারির মধ্যে রাখেম। পরে গত ১৮ এপ্রিল ওই স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয় মামুনুল হককে।

এই ঘটনায় ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁও থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ মামলা করেন ওই নারী ঝর্না আক্তার। তবে ওই নারীকে বরাবরই তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করে আসছেন মামুনুল হক।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর