মেট্রোরেল-বিআরটির নির্মাণকাজ উদ্বোধন ২৬ জুন

যানজট দূর করতে আগামী ২৬ জুন মেট্রোরেল ও বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) এক সঙ্গে নির্মাণকাজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিতকা শুরু হবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রনালয়ের সভা কক্ষে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমরা মেট্রোরেল প্রকল্পের প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ করেছি। এখন শুরু হয়েছে বাস্তবায়ন। ইতোমধ্যে ডিপো উন্নয়নের কাজও শুরু হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, জাইকা’র অর্থায়নে বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ আমাদের এ স্বপ্নের প্রকল্প। প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্পে জাইকা প্রকল্প সহায়তা দিচ্ছে প্রায় ১৬ হাজার ৬’শ কোটি টাকা। মেট্রোরেলের রুট হবে সম্পূর্ণ এলিভেটেড। থাকবে ১৬টি স্টেশন। প্রতি ঘন্টায় উভয়দিকে ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহনের সক্ষমতা থাকবে এ রুটে।
তিনি বলেন, মেট্রোরেল রুট-৬ এর পাশাপাশি আরও দু’টি রুট নির্মাণের প্রস্তুতিও ইতোমধ্যে আমরা শুরু করেছি। এরমধ্যে— মেট্রোরেল রুট-১ হচ্ছে গাজীপুর থেকে ঝিলমিল প্রকল্প পর্যন্ত ৪২ কিলোমিটার দীর্ঘ। প্রথম পর্যায়ে এয়ারপোর্ট হতে কমলাপুর এবং খিলক্ষেত হতে পূর্বাচল পর্যন্ত প্রায় ২৭ কিলোমিটার এর কাজ করা হবে। এর মধ্যে প্রায় ১০ কিলোমিটার হবে আন্ডারগ্রাউন্ড।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মহানগরীর পূর্ব-পশ্চিমে সংযোগ বাড়াতে চূড়ান্ত করা হয়েছে মেট্রোরেল-৫ এর রুট। এ রুটটি নারায়ণগঞ্জের ভুলতা হতে গাবতলী পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ। প্রাথমিক পর্যায়ে ভাটারা হতে গাবতলী-হেমায়েতপুর পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার কাজ করা হবে। এর মধ্যে ৬ কিলোমিটার আন্ডারগ্রাউন্ড রয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
ইতোমধ্যে জাইকা মেট্রোরেল রুট-১ ও রুট-৫ নির্মাণে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু করেছে দাবি করে সেতু মন্ত্রী বলেন, মেট্রোরেল-৬ এর রুট উত্তরা তৃতীয় পর্যায় থেকে শুরু হয়ে শাপলা চত্বর পর্যন্ত। প্রথম পর্যায়ে ২০১৯ সালের মধ্যে আগারগাঁও পর্যন্ত বাণিজ্যিক চলাচল শুরু হবে। ২০২০ সালে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল নির্মাণকাজ শেষ হবে। এ প্রকল্পের ৮টি প্যাকেজের মধ্যে ৬টির দরপত্র আহ্বান কাজ শেষ হয়েছে। ১টি প্যাকেজের চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।
বিআরটি সম্পর্কে ওবায়দুল কাদের বলেন, সড়কের নির্দিষ্ট লেনে দ্রুতগতির বাস চলাচল অবকাঠামো স্থাপন করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে সংরক্ষিত আলাদা লেনের মাধ্যমে উভয়দিকে প্রতি ঘণ্টায় ২৫ হাজার যাত্রী পারাপার সম্ভব হবে। প্রতি তিন মিনিট পরপর স্টেশন থেকে বাস ছাড়বে বলেও মন্ত্রী জানান।
প্রকল্পটি গাজীপুর টার্মিনাল থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত সাড়ে ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ বিআরটি রুটে থাকবে ২৫টি স্টেশন। নির্মাণ করা হবে ৬টি ফ্লাইওভার। উত্তরা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত সাড়ে ৪ কিলোমিটার থাকবে এলিভেটেড বিআরটি লেন। ১৬ কিলোমিটার থাকবে সমতল বা এট গ্রেড। ১৮ মিটার দীর্ঘ ১০০টি আর্টিকুলেটেড বাস চলাচল করবে এ পথে। বাসগুলোয় ভাড়া আদায়ে থাকবে ইলেক্ট্রনিক স্মার্ট কার্ড।
এ প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৪০ কোটি টাকা। এরমধ্যে প্রকল্প সহায়তা ১ হাজার ৬ শত ৫১ কোটি টাকা। সরকারের পাশাপাশি প্রকল্পে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, ফরাসী উন্নয়ন সংস্থা, গ্লোবাল এনভায়রনমেন্টাল ফ্যাসিলিটি ফান্ড অর্থায়ন করছে।
ইতোমধ্যে প্রস্তুতিমূলক সকল কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। বাস্তবায়ন কাজও শুরু হয়েছে। আশা করা হচ্ছে আগামী ২০১৮ এর ডিসেম্বরে বিআরটি চালু হবে।
এসময় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয়ের সচিব এমএন সিদ্দিক, ডিটিসিএ’র নির্বাহী পরিচালক মো. কায়কোবাদ হোসেন, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন, মেট্রোরেল প্রকল্পের মহাব্যবস্থাপক হারুন অর রশিদ, বিআরটি প্রকল্প পরিচালক একরামুল্লাহসহ মন্ত্রণালয় ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর