প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জীবনব্যাপী আন্দোলন সংগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন শান্তির অন্বেষণে নিবেদিত। তিনি বলেন, ছাত্রজীবনে তিনি কলকাতার ভয়াল দাঙ্গার মধ্যে অসহায় বিপদাপন্ন মানুষকে উদ্ধারের জন্য জীবন বাজি রেখে নির্ভয়ে ছুটে গিয়েছেন। নবীন রাজনীতিবিদ হিসেবে বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত প্রথম এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলীয় শান্তি সম্মেলনে প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দিয়েছেন। ১৯৫৬ সালে বিশ্ব শান্তি পরিষদের স্টকহোম সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছেন।
বাংলার মানুষের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য এক দশকেরও বেশি সময় জেল খেটেছেন এবং পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে লন্ডনে প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনেই ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারও প্রতি বৈরিতা নয়’ শান্তির এই বাণী ঘোষণা করেছেন। শান্তির এই প্রতিপাদ্যই সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতির মূলমন্ত্র হিসেবে গৃহীত হয়েছে। তিনি সবসময় এশিয়া-আফ্রিকা-ল্যাটিন আমেরিকাসহ সকল মুক্তিকামী মানুষদের সমর্থন যুগিয়েছেন এবং অবিচল কণ্ঠে শোষিতের পক্ষে নিজের অবস্থান ব্যক্ত করেছেন। ’
আজ মঙ্গলবার (২৩ মে) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর জুলিও কুরি শান্তিপদক প্রাপ্তির সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন উপলক্ষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে এবং সেই সঙ্গে একটি স্মরণিকা প্রকাশ করছে জেনে তিনি অত্যন্ত আনন্দিত।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের স্বাধিকার ও স্বাধীনতা এনে দিয়ে দেশবাসীর কাছে তিনি যেমন বঙ্গবন্ধু ও জাতির পিতা হিসেবে বরেণ্য হয়েছেন, তেমনি শান্তির স্বপক্ষে আপসহীন অবস্থান তাঁকে বিশ্ববাসীর কাছেও মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছে। শান্তি ও স্বাধীনতার ক্ষেত্রে প্রশংসনীয় অবদানের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বিশ্ব শান্তি পরিষদ সর্বোচ্চ সম্মান জুলিও কুরি শান্তি পদকে ভূষিত করেছে। নেলসন ম্যান্ডেলা, ফিদেল ক্যাস্ট্রো, জওহরলাল নেহেরু, গামাল আবদেল নাসের, পাবলো নেরুদা, মার্টিন লুথার কিং, ইয়াসির আরাফাত, লিওনিদ ব্রেজনেভ প্রমুখ জুলিও কুরি পদকপ্রাপ্ত বিশ্ববিশ্রুত নামের তালিকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নামের সংযোজন প্রমাণ করে বিশ্ববাসীর চোখে আমাদের জাতির পিতার সম্মান ও মর্যাদা হিমালয়সম উচ্চতায় অধিষ্ঠিত।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ যখন যুদ্ধ এবং নানা রকমের দ্বন্দ্ব-সংঘাত পৃথিবীকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে, তখন তাঁর শান্তি পুরস্কার প্রাপ্তির পঞ্চাশ বছরপূর্তি আমাদের এ কথাই স্মরণ করিয়ে দেয় যে, মানব জাতির সামনে শান্তির কোনো বিকল্প নেই।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জুলিও কুরি শান্তিপদক প্রাপ্তির সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপনের লক্ষ্যে আয়োজিত কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত সকলকে, বিশেষ করে এ স্মরণিকা প্রকাশের সঙ্গে জড়িত সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি। এ স্মরণিকা বিশ্ব শান্তির প্রবক্তা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে আরও নিবিড়ভাবে জানার ক্ষেত্রে উপযোগী হবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।