ওয়েলিংটন, ০৮ এপ্রিল – নিউজিল্যান্ডের সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। সেই সঙ্গে নেতৃত্বের ভূমিকার পথে মাতৃত্বকে বাধা হিসেবে না দেখার জন্য নারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
ওয়েলিংটনে বুধবার (৬ এপ্রিল) পার্লামেন্টে সমাপনী ভাষণে তিনি এ কথা জানান।
এ সময় ৪২ বছর বয়সী সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি জেনেছি যে আমিই হতে পারতাম সেরা মা। আপনি সেই ব্যক্তি হতে পারেন এবং পার্লামেন্টে আসতে পারেন।
দৃঢ় নেতৃত্বের জন্য তিনি বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হন। গত জানুয়ারিতে তার পদত্যাগের ধাক্কা আসে।
তিনি একজন সংকট মুহূর্তে ব্যবস্থাপক হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন যিনি তার পাঁচ বছরের প্রিমিয়ার শিপ চলাকালীন তার দেশকে সবচেয়ে অন্ধকারাচ্ছন্ন দিনের মধ্য দিয়ে নেতৃত্ব দেন। এর মধ্যে ২০১৯ সালে দুটি মসজিদে ক্রাইস্টচার্চের সন্ত্রাসী হামলায় ৫১ জন মুসল্লিকে হত্যা করেছিল, সেই বছরেই আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ২২ জন মারা যান। সেই সঙ্গে যুক্ত হয় করোনা মহামারির ধাক্কা।
পার্লামেন্টে সমাপনী বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, দুঃখজনকভাবে আমাদের জাতিকে শোকের ভয়াবহ মুহূর্তে দেখে, আমি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যেসব দেশ ট্র্যাজেডি থেকে এগিয়ে যায় না, বরং তারা আপনার মানসিকতার অংশ হয়ে যায়। কিন্তু ওই মুহূর্তগুলো আমাদের সত্তার ওপর যেভাবে প্রভাব ফেলবে, আমরা ঠিক সেভাবেই মোকাবিলা করব।
২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন জেসিন্ডা। ২০১৮ সালে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বরত অবস্থায় সন্তান জন্ম দেন তিনি। জেসিন্ডা দ্বিতীয় কোনো বিশ্বনেতা, যিনি দায়িত্বরত অবস্থায় মা হয়েছেন। এর আগে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো দায়িত্বরত অবস্থায় সন্তান জন্ম দিয়েছিলেন।
জেসিন্ডা বলেন, আমি লেবার পার্টির নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর আইভিএফ পদ্ধতিতে সন্তান জন্মদানের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, আমি কখনো মা হতে পারব না। ভেবে দেখুন তো, কয়েক মাস পর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবরটি পেয়ে আমি কতটা অবাক হয়েছিলাম।
যখন জেসিন্ডা ঘোষণা করলেন যে তিনি পদত্যাগ করছেন এবং বলেন তার কাছে পুনরায় নির্বাচন করার শক্তি বা অনুপ্রেরণা নেই। তখন এটি বিশ্বব্যাপী নারী নেতৃত্বের হুমকির বার্তা হিসেবে ছড়িয়ে পড়ে।