ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের সাগরদিঘি উপনির্বাচনে পরাজিত হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই বিপর্যয়ের পর পশ্চিমবঙ্গের শাসকদলের অন্দরে সংখ্যালঘু ভোট ধরে রাখা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এদিকে, আজ সোমবার বিধানসভায় দলের পাঁচজন নেতাকে নিয়ে বৈঠক করে বিশেষ কমিটি করে দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেসের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুসলিম ভোট ধরে রাখতেই নাকি তিনি এ কমিটি করেছেন বলে মনে করছেন অনেকে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়, আজ পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক বসে। তারপর পাঁচ নেতাকে নিজের ঘরে ডেকে পাঠান মমতা। তারা সবাই সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। বৈঠকে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী, সেচ প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আখরুজ্জামান, সংখ্যালঘু প্রতিমন্ত্রী গোলাম রাব্বানী ও জঙ্গিপুরের বিধায়ক জাকির হোসেন।
সূত্রের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার বলছে, বৈঠকে মমতা এই কমিটিকে সাগরদিঘি ভোটের বিপর্যয় নিয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন। সঙ্গে পুরো রাজ্যের সংখ্যালঘু ভোট সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পাঁচ নেতাকে দ্রুত কাজে নামতে বলেছেন।
এই কমিটিকে প্রয়োজনে সাহায্য করার জন্য রাজ্যের দুই মন্ত্রীকেও দায়িত্ব দিয়েছেন মমতা। তারা হলেন ফিরহাদ হাকিম ও শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।
গত বৃহস্পতিবার সাগরদিঘি উপনির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর দেখা যায় সেখানে কংগ্রেসের প্রার্থী বাইরন বিশ্বাসের কাছে ২২ হাজার ৯৮০ হাজার ভোটে পরাজিত হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, তবে কি সংখ্যালঘু ভাঙন ধরেছে তৃণমূলে? কারণ, ওই আসনে ৬৮ শতাংশ ভোটারই সংখ্যালঘু।
তারপরই মমতার এই কমিটি গঠন করে বিষয়টি নিয়ে প্রকৃত পরিস্থিতি জানতে চেয়েছেন বলে তৃণমূল কংগ্রেসের অনেক নেতাই মনে করছেন। এই কমিটি পূর্ণাঙ্গ একটি প্রতিবেদন তৈরি করে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তুলে দেবে। তার পর প্রতিবেদন খতিয়ে দেখে পরবর্তী নির্দেশ দেবেন তিনি।
কমিটির এক সদস্য বলেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী আমাদের যেমন নির্দেশ দিয়েছেন তা মেনেই আমরা কাজ করব। আপাতত, সাগরদিঘি নিয়েই প্রতিবেদন তৈরি করে তার হাতে তুলে দেওয়া আমাদের কাজ। তারপর বাকি রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে কাজ হবে।’