মুখ্য নির্বাচন কর্মকর্তা স্পষ্টভাবে কোনো ঘোষণা না দিলেও দিনের শেষে একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে যায় ভারতীয় জনতা পার্টির জয়। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে এই জয়কে প্রত্যাশিত বলেই আখ্যায়িত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে প্রদেশ বিজেপির বিভিন্ন নেতারা।
সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ৬০ আসনের বিধানসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি পেয়েছে ৩২টি। এছাড়াও সহযোগী আইপিএফটি পায় ১টি আসন। বাম কংগ্রেস জোটের পক্ষে বামফ্রন্ট একা পায় ১১টি আসন এবং কংগ্রেস পায় ৩টি আসন। তিপ্রা মথা পেয়েছে ১৩টি।
রাজ্যের মোট ২১টি কেন্দ্রে এদিন সকাল আটটা থেকেই শুরু হয় ভোট গণনা পর্ব। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রাজধানী আগরতলার উমাকান্ত একাডেমি স্ট্রং রুমে চলে ১৪টি আসনের ভোট গণনা। হেভি ওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা, তথ্যমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ রতন চক্রবর্তীদের ভাগ্য নির্ধারণও হয় এখানেই।
৮ টাউন বড়দোয়ালী বিধানসভা কেন্দ্র থেকে এদিন জয়ী হয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা। তিনি নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস প্রার্থী আশীষ কুমার সাহাকে প্রায় এক হাজার ২০০ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। অন্যদিকে উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণ দেববর্মা চরিলাম বিধানসভা কেন্দ্র থেকে মাত্র ৮৩৫ ভোটের ব্যবধানে হেরে যান তিপ্রা মথা প্রার্থীর কাছে।
হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে ৫৩ কৈলাসহর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বিরজিৎ সিনহা। তিনি তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তথা ভারতীয় জনতা পার্টি মনোনীত প্রার্থী মাবশ্বর আলীকে প্রায় দশ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন।
অন্যান্যদের মধ্যে ২৩ ধনপুর বিধানসভাকেন্দ্র থেকে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাজিত করেন প্রায় ৩
হাজার ৪০০ ভোটের ব্যবধানে। এছাড়াও ১৪ বাধারঘাট বিধানসভাকেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী মিনারানী সরকার মাত্র ৪০০ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন বামফ্রন্ট শরীক ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী পার্থরঞ্জন সরকারকে।
অনিশ্চিত অবস্থার মধ্যে থেকেও অবশেষে যাদের জয় হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন ১৮ বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি মনোনীত প্রার্থী রামপ্রসাদ পাল, ২ মোহনপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি মনোনীত প্রার্থী রতন লাল নাথ, সাবেক মন্ত্রী ভগবান দাস, কল্যাণী রায়, সান্তনা চাকমা সহ এমন অনেকেই। সামান্য ভোটের ব্যবধান হলেও এদিন জয়ের শেষ হাসি হাসেন তারাই।
ফলাফল যখন মোটামুটিভাবে ঘোষণা করা হয় তখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা দলের জয় নিয়ে এক প্রকার নিশ্চয়তার কথাই জানান।
তিনি বলেন, আগে থেকেই জানা ছিলো এই জয়ের বিষয়টি। তবে শুধুমাত্র ঘোষণার বাকি ছিলো। যা বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হয়। প্রদেশ বিজেপির সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য নিজে হেরে গেলেও জয় নিয়ে অনেকটাই খুশি ছিলেন তিনি।
বাম কংগ্রেসের পক্ষে সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী ৪০ সাব্রুম বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রায় এক হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়ী হন।
অসন্তুষ্ট এই বাম প্রার্থী বলেন, গোটা বিষয়টি পর্যালোচনা সাপেক্ষ। এর আগে অবশ্য কোনো মন্তব্য নয়। একই সুর বিগত বিধানসভার কংগ্রেস থেকে জয়ী একমাত্র বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মনেরও। জয়ের পর এদিন তিনিও কোনো ধরনের মন্তব্য করতে চাইলেন না।