ঢাকা ১০:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খালি হাতে স্কুলে যাচ্ছে দুর্গত এলাকার শিক্ষার্থীরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:৫৫:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জুন ২০১৬
  • ৫২৯ বার

উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মক্তব, স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা পর্যায়ের প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থীর পাঠ্যবই ভাসিয়ে নিয়ে গেছে রোয়ানু। এতে চরম দুর্ভোগে রয়েছে শিক্ষার্থীরা।

এসব হতদরিদ্র শিক্ষার্থীর বই কেনারও সামর্থ্যও নেই। এখানে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের হাতে দ্রুত শিক্ষাসামগ্রী তুলে দেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের পর গ্রীষ্মকালীন বন্ধ শেষে খুলেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো। অসংখ্য শিক্ষার্থী খালি হাতেই আসছে বিদ্যালয়ে।

দুর্গত এলাকার শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক ও স্কুল কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ২১ মে রোয়ানুর আঘাতে বাঁশখালীর খানখানাবাদ, ছনুয়া ও গণ্ডামারা এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রাম ভয়াবহ জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে যায়। সরকারি হিসাবে সেখানকার অন্তত ১০ হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে মাটির সাথে মিশে গেছে। ভেসে গেছে মানুষের নিত্য ব্যবহার্য যাবতীয় জিনিসপত্র। সেই সঙ্গে রোয়ানু ভাসিয়ে নিয়ে গেছে শিক্ষার্থীদের অমূল্য সম্পদ বই-খাতা-কলম। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে অন্তত পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী। দুর্গত এলাকায় খাবার ও ব্যবহার্য জিনিসপত্র ত্রাণ হিসেবে দেওয়া হলেও কেউ

বই-খাতা-কলম দেননি।

খানখানাবাদে ঘুরে দেখা গেছে, দক্ষিণ প্রেমাশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর প্রেমাশিয়া মৌলভীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রহমত উল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রায়ছটা সন্দ্বীপীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অসংখ্য ছাত্রছাত্রী জলোচ্ছ্বাসে বই-খাতা-কলম হারিয়েছে। সন্দ্বীপী স্কুলের একাংশের পড়ার টেবিলও ভেসে গেছে।

স্কুলের ভিতর পলিমাটি জমে পাঠদানের অনুপযুক্ত হয়ে গেছে। গ্রীষ্মকালীন বন্ধ শেষে স্কুল খুললেও শিক্ষাকার্যক্রম শুরু করা যায়নি। দুর্গত এলাকায় অসংখ্য ছাত্রছাত্রী বই খাতা কলম ছাড়াই খালি হাতে স্কুলে আসছে।

রায়ছড়া সন্দ্বীপীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মৌলানা মোহাম্মদ কাশেম বলেন, ‘এলাকার মক্তব, প্রাইমারি স্কুল, হাইস্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা পর্যায়ের অন্তত পাঁচ হাজার শিক্ষার্থীর বই খাতা ভাসিয়ে নিয়ে গেছে রোয়ানু। স্কুলের পড়ার টেবিলও ভেসে গেছে।’

দক্ষিণ প্রেমাশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘গ্রীষ্মকালীন বন্ধ শেষে স্কুল খুলেছে। সরকারি বইয়ের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসে শিক্ষার্থীদের তালিকা পাঠানো হবে। তবে তাতেও সময় লাগবে। কারণ বই হারানো সব শিক্ষার্থী স্কুলে না আসা পর্যন্ত সঠিক তালিকা তৈরি করা কষ্টকর হবে।’

উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘বই হারানোর বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্ত করে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।’

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রবিউল হোসেন বলেন, ‘সরকারি বইয়ের মজুদ রয়েছে। শিক্ষকদের বই হারানো শিক্ষার্থীদের তালিকা পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

তবে শিগগিরই ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যবই তুলে দেওয়া হবে বলে শিক্ষা কর্মকর্তা জানান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

খালি হাতে স্কুলে যাচ্ছে দুর্গত এলাকার শিক্ষার্থীরা

আপডেট টাইম : ০৭:৫৫:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জুন ২০১৬

উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মক্তব, স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা পর্যায়ের প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থীর পাঠ্যবই ভাসিয়ে নিয়ে গেছে রোয়ানু। এতে চরম দুর্ভোগে রয়েছে শিক্ষার্থীরা।

এসব হতদরিদ্র শিক্ষার্থীর বই কেনারও সামর্থ্যও নেই। এখানে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের হাতে দ্রুত শিক্ষাসামগ্রী তুলে দেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের পর গ্রীষ্মকালীন বন্ধ শেষে খুলেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো। অসংখ্য শিক্ষার্থী খালি হাতেই আসছে বিদ্যালয়ে।

দুর্গত এলাকার শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক ও স্কুল কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ২১ মে রোয়ানুর আঘাতে বাঁশখালীর খানখানাবাদ, ছনুয়া ও গণ্ডামারা এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রাম ভয়াবহ জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে যায়। সরকারি হিসাবে সেখানকার অন্তত ১০ হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে মাটির সাথে মিশে গেছে। ভেসে গেছে মানুষের নিত্য ব্যবহার্য যাবতীয় জিনিসপত্র। সেই সঙ্গে রোয়ানু ভাসিয়ে নিয়ে গেছে শিক্ষার্থীদের অমূল্য সম্পদ বই-খাতা-কলম। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে অন্তত পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী। দুর্গত এলাকায় খাবার ও ব্যবহার্য জিনিসপত্র ত্রাণ হিসেবে দেওয়া হলেও কেউ

বই-খাতা-কলম দেননি।

খানখানাবাদে ঘুরে দেখা গেছে, দক্ষিণ প্রেমাশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর প্রেমাশিয়া মৌলভীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রহমত উল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রায়ছটা সন্দ্বীপীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অসংখ্য ছাত্রছাত্রী জলোচ্ছ্বাসে বই-খাতা-কলম হারিয়েছে। সন্দ্বীপী স্কুলের একাংশের পড়ার টেবিলও ভেসে গেছে।

স্কুলের ভিতর পলিমাটি জমে পাঠদানের অনুপযুক্ত হয়ে গেছে। গ্রীষ্মকালীন বন্ধ শেষে স্কুল খুললেও শিক্ষাকার্যক্রম শুরু করা যায়নি। দুর্গত এলাকায় অসংখ্য ছাত্রছাত্রী বই খাতা কলম ছাড়াই খালি হাতে স্কুলে আসছে।

রায়ছড়া সন্দ্বীপীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মৌলানা মোহাম্মদ কাশেম বলেন, ‘এলাকার মক্তব, প্রাইমারি স্কুল, হাইস্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা পর্যায়ের অন্তত পাঁচ হাজার শিক্ষার্থীর বই খাতা ভাসিয়ে নিয়ে গেছে রোয়ানু। স্কুলের পড়ার টেবিলও ভেসে গেছে।’

দক্ষিণ প্রেমাশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘গ্রীষ্মকালীন বন্ধ শেষে স্কুল খুলেছে। সরকারি বইয়ের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসে শিক্ষার্থীদের তালিকা পাঠানো হবে। তবে তাতেও সময় লাগবে। কারণ বই হারানো সব শিক্ষার্থী স্কুলে না আসা পর্যন্ত সঠিক তালিকা তৈরি করা কষ্টকর হবে।’

উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘বই হারানোর বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্ত করে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।’

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রবিউল হোসেন বলেন, ‘সরকারি বইয়ের মজুদ রয়েছে। শিক্ষকদের বই হারানো শিক্ষার্থীদের তালিকা পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

তবে শিগগিরই ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যবই তুলে দেওয়া হবে বলে শিক্ষা কর্মকর্তা জানান।