কৃষি, খাদ্য ও সবজির ভান্ডারখ্যাত শেরপুরে এবার আধুনিক প্রযুক্তির অন্যতম বাহন পলিনেট হাউজে উচ্চমূল্যের সবজি-ফলমূলের চারা উৎপাদন শুরু হয়েছে। বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় প্রথমবারের মতো এ পদ্ধতিতে শেরপুর জেলার নকলা, নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী উপজেলায় ওই চারা উৎপাদন শুরু হয়েছে। এতে উৎপাদনের পর চাষে এসেছে বৈচিত্র্য, সুফল পেয়ে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। ছড়িয়ে দিতে পারলে এ পদ্ধতি ব্যবহার করে কৃষি উৎপাদনে ঘটতে পারে নতুন বিপ্লব- এমনই আশা সংশ্লিষ্টদের।
কৃষি বিভাগ জানায়, প্রতিটি পলিনেট হাউজ প্রায় ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করেছে কৃষি বিভাগ। শেরপুরের ঝিনাইগাতী, নালিতাবাড়ী ও নকলা উপজেলায় একটি করে পলিনেট হাউজ নির্মাণ করা হয়েছে। পলিনেট হাউজে উচ্চমূল্যের ফসল যেমন ক্যাপসিকাম, ব্রকলি, রকমেলন, রঙিন তরমুজ, রঙিন ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, লেটুসের মতো সবজির পাশাপাশি চারা উৎপাদন করা হয়। এই পদ্ধতিতে সার ও কীটনাশক ছাড়াই সব ধরনের শাক-সবজি, ফল রোপণ ও চারা উৎপাদন করা হয়। এতে খরচ কম ও লাভ বেশি হওয়ায় আগ্রহ বাড়ছে অন্য চাষিদের মাঝে। পলিনেটে সবজি চাষে যেমন বৈচিত্র্য আসে, তেমনি অনেকেই আয়ের নতুন উৎসের সন্ধান পান।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, পুরো হাউজে পলিথিনের আচ্ছাদন থাকায় সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ভেতরে প্রবেশে বাধা পায় এবং অতিবৃষ্টি বা প্রাকৃতিক দুর্যোগেও ফসলের চারা অক্ষত থাকে। অসময়ে সবজি চাষের জন্য পলিনেট হাউজ দেশে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির নতুন সংযোজন। এর মাধ্যমে শীতকালীন সবজিগুলো যেমন সহজেই গ্রীষ্মকালে উৎপাদন করা যায়, তেমনি গ্রীষ্মকালের সবজিও শীতে উৎপাদন করা যায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঝিনাইগাতী উপজেলার বাকাকুড়া গ্রামে ১০ শতাংশ জমির ওপর একটি পলিনেট হাউজ স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে পলিনেট হাউসে টমেটো, ফুলকপি, পেঁপে, কলার চারা ও ক্যাপসিকামসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির চারা উৎপাদন করা হচ্ছে। এতে কাজ করছেন পলিনেটের উদ্যোক্তা কৃষক ফজলুল হক। উপজেলার পশ্চিম বাকাকুড়া গ্রামের কৃষক ফজলুল হক পলিনেট হাউজ পদ্ধতিতে নানা ধরনের সবজি ও ফলমূলের চারা উৎপাদন করছেন।