হাওর বার্তা ডেস্কঃ কিশোরগঞ্জের তাড়াইলের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন সরিষা ফুলের হলুদ রঙের মাখামাখি। চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সরিষা ক্ষেতের চেহারা দেখে পুলকিত কৃষক।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন হাওরের দিকে থাকালে মনে হয় ফসলের মাঠ যেন সেজেছে হলুদের সাজে। মাঠজুড়ে সরিষা ফুলের হলুদ রাজার দেশে মৌমাছির মধু সংগ্রহের গুঞ্জনে মুখরিত ফসলের মাঠ। সরিষা ফুলে বাতাসের দোলায় দোল খাচ্ছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন।
উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ৮শ’ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
উপজেলার কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সরিষা কেটে ওই জমিতে আবার বোরো আবাদ করা যায়। এতে অল্প সময়ে একই জমিতে দুটি ফসলের চাষে লাভবান হচ্ছে কৃষক। এক সময় কৃষকেরা আমন ধান কাটার পর জমি পতিত ফেলে রাখতো।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দেশের অন্যতম একটি তেল ও মসলা জাতীয় খাদ্য শষ্যের নাম সরিষা। সরিষা খুবই লাভজনক ফসল। অতি অল্প সময়ে, অল্প পুঁজিতে কৃষকরা লাভবান হন।
এক একর জমিতে সরিষা আবাদ করতে বিভিন্ন প্রকারের সার, সরিষা বীজ ও অন্যান্য খরচসহ মোট খরচ হচ্ছে প্রায় ৪ হাজার টাকা। যদি প্রতি একরে ফলন হয় ৬ থেকে ৭ মণ তাহলে সরিষা বিক্রি করে ইরি-বোরো আবাদের খরচ হয়ে যাবে বলে কৃষকরা জানান।
উপজেলার তাড়াইল-সাচাইল সদর ইউনিয়নের কালনা গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, দুই একর জমিতে সরিষা চাষ করেছি। প্রতি একর জমিতে প্রায় ৪ হাজার টাকা করে ব্যয় হয়েছে। সরিষার ক্ষেতে গেলে প্রাণটা ভরে যায়।
একই গ্রামের কৃষক ফজলুর রহমান বলেন, আমি আড়াই একর জমিতে সরিষা চাষ করেছি। আশা করছি ভালো ফলন হবে। এই সরিষা বিক্রি করে বোরো আবাদের তেল ও সার কেনার টাকা জোগাড় হয়ে যাবে।
স্থানীয় কৃষকেরা জানান, উপজেলা কৃষি বিভাগের লোকজন সঠিকভাবে পরামর্শ দিয়ে তাদেরকে সহযোগিতা করছেন। ফলন ভালো হবে বলে তারা আশা করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বলেন, সরিষা মূলত একটি মসলা জাতীয় ফসল। স্বল্প সময়ের মধ্যে কৃষককে অধিক ফলন পেতে আমি এবং আমার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। যাতে কৃষকেরা কোনো সমস্যার সম্মুখীন না হন। আশা করছি কোনো প্রকার প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে এবার এই উপজেলায় সরিষার বাম্পার ফলন হবে।