ঢাকা ০৫:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২৫, ২২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

জাপানি মায়ের জিম্মায় দুই শিশু রায়ের বিরুদ্ধে বাবা ইমরান শরীফের আপিল

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৪৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • ১১৪ বার

জাপানি মা ও বাংলাদেশি বাবার দুই সন্তান কোথায় থাকলে কল্যাণ হবে সেদিক বিবেচনায় রেখে ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমানের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করা হয়েছে।

বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুই শিশুর বাবা ইমরান শরীফের পক্ষে রাজধানী ঢাকার জেলা জজ আদালতের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আপিল (পারিবারিক আপিল নং ২২/২০২৩) আবেদন করা হয়

অ্যাডভোকেট আরিফা পারভীন তাপসী জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে দুই শিশুর হেফাজত ও অভিভাবকত্ব চেয়ে বাবার করা মামলা খারিজ করে রায় দিয়েছেন আদালত।

গত ২৯ জানুয়ারি ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান এ বিষয়ে রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আদালত বলেন, মায়ের জিম্মায় থাকবে দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনা। একই সঙ্গে মেয়েদের নিয়ে জাপান যেতে পারবেন তাদের মা নাকানো এরিকো। এছাড়া দুই শিশুর বাবা ইমরান শরীফ যে মামলা করেছিলেন, তা খারিজ করে দেন আদালত। নাবালিকা দুই শিশু কোথায় থাকলে কল্যাণ হবে সেদিক বিবেচনায় রেখে এ রায় দেওয়া হয়

২০০৮ সালে জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকোর সঙ্গে বাংলাদেশি প্রকৌশলী ইমরান শরীফের বিয়ে হয়। দাম্পত্য কলহের জেরে ২০২০ সালের শুরুতে বিচ্ছেদের আবেদন করেন এরিকো। এরপর ইমরান স্কুলপড়ুয়া বড় দুই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। আর ছোট মেয়ে থেকে যান জাপানে মা এরিকোর সঙ্গে।

তবে ওই দুই মেয়েকে জিম্মায় পেতে মহামারির মধ্যে ২০২১ সালে বাংলাদেশে আসেন এ জাপানি নারী। তিনি হাইকোর্টে রিট করলে তাদের সমঝোতায় আসতে বলেন বিচারক। তবে ওই দম্পতি সমঝোতায় না আসায় কয়েক মাস ধরে শুনানির পর হাইকোর্ট দুই সন্তানকে বাবার হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত দেন। পাশাপাশি মা যাতে সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে বাবাকে খরচ দিতে বলা হয়।

এরপর হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন নাকানো এরিকো। পরে আপিল বিভাগ এক আদেশে শিশু দুটিকে মায়ের জিম্মায় রাখার নির্দেশ দিলেও বাবা তা না মানায় বিচারকরা উষ্মা প্রকাশ করেন। পরে আদালত শিশু দুটিকে বাবার হেফাজত থেকে এনে তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং পরে মায়ের হেফাজতে দেওয়ার আদেশ দেন।

এরপর দুই মেয়ে কার জিম্মায় থাকবে তার নিষ্পত্তি পারিবারিক আদালতে হবে এবং তার আগ পর্যন্ত দুই শিশু তাদের মায়ের কাছেই থাকবে বলে সিদ্ধান্ত দেন আপিল বিভাগ। গত বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি এ আদেশ দেওয়া হয়। এরপর আপিল বিভাগ থেকে মামলাটি পারিবারিক আদালতে যায়।

এসব ঘটনার মধ্যে গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর রাতে দুই সন্তান নিয়ে জাপানে যাওয়ার জন্য ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান এরিকো নাকানো। আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে সন্তানদের নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করায় তাকে বিমানবন্দর থেকে পুলিশ ফিরিয়ে দেয়।

এ ঘটনায় ২৯ ডিসেম্বর দুই সন্তানের বাবা ইমরান শরিফ ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাতুল রাকিবের আদালতে মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মদনে শীতার্তের মাঝে নবধারা’র শীতবস্ত্র বিতরণ

জাপানি মায়ের জিম্মায় দুই শিশু রায়ের বিরুদ্ধে বাবা ইমরান শরীফের আপিল

আপডেট টাইম : ১২:৪৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

জাপানি মা ও বাংলাদেশি বাবার দুই সন্তান কোথায় থাকলে কল্যাণ হবে সেদিক বিবেচনায় রেখে ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমানের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করা হয়েছে।

বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুই শিশুর বাবা ইমরান শরীফের পক্ষে রাজধানী ঢাকার জেলা জজ আদালতের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আপিল (পারিবারিক আপিল নং ২২/২০২৩) আবেদন করা হয়

অ্যাডভোকেট আরিফা পারভীন তাপসী জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে দুই শিশুর হেফাজত ও অভিভাবকত্ব চেয়ে বাবার করা মামলা খারিজ করে রায় দিয়েছেন আদালত।

গত ২৯ জানুয়ারি ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান এ বিষয়ে রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আদালত বলেন, মায়ের জিম্মায় থাকবে দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনা। একই সঙ্গে মেয়েদের নিয়ে জাপান যেতে পারবেন তাদের মা নাকানো এরিকো। এছাড়া দুই শিশুর বাবা ইমরান শরীফ যে মামলা করেছিলেন, তা খারিজ করে দেন আদালত। নাবালিকা দুই শিশু কোথায় থাকলে কল্যাণ হবে সেদিক বিবেচনায় রেখে এ রায় দেওয়া হয়

২০০৮ সালে জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকোর সঙ্গে বাংলাদেশি প্রকৌশলী ইমরান শরীফের বিয়ে হয়। দাম্পত্য কলহের জেরে ২০২০ সালের শুরুতে বিচ্ছেদের আবেদন করেন এরিকো। এরপর ইমরান স্কুলপড়ুয়া বড় দুই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। আর ছোট মেয়ে থেকে যান জাপানে মা এরিকোর সঙ্গে।

তবে ওই দুই মেয়েকে জিম্মায় পেতে মহামারির মধ্যে ২০২১ সালে বাংলাদেশে আসেন এ জাপানি নারী। তিনি হাইকোর্টে রিট করলে তাদের সমঝোতায় আসতে বলেন বিচারক। তবে ওই দম্পতি সমঝোতায় না আসায় কয়েক মাস ধরে শুনানির পর হাইকোর্ট দুই সন্তানকে বাবার হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত দেন। পাশাপাশি মা যাতে সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে বাবাকে খরচ দিতে বলা হয়।

এরপর হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন নাকানো এরিকো। পরে আপিল বিভাগ এক আদেশে শিশু দুটিকে মায়ের জিম্মায় রাখার নির্দেশ দিলেও বাবা তা না মানায় বিচারকরা উষ্মা প্রকাশ করেন। পরে আদালত শিশু দুটিকে বাবার হেফাজত থেকে এনে তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং পরে মায়ের হেফাজতে দেওয়ার আদেশ দেন।

এরপর দুই মেয়ে কার জিম্মায় থাকবে তার নিষ্পত্তি পারিবারিক আদালতে হবে এবং তার আগ পর্যন্ত দুই শিশু তাদের মায়ের কাছেই থাকবে বলে সিদ্ধান্ত দেন আপিল বিভাগ। গত বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি এ আদেশ দেওয়া হয়। এরপর আপিল বিভাগ থেকে মামলাটি পারিবারিক আদালতে যায়।

এসব ঘটনার মধ্যে গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর রাতে দুই সন্তান নিয়ে জাপানে যাওয়ার জন্য ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান এরিকো নাকানো। আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে সন্তানদের নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করায় তাকে বিমানবন্দর থেকে পুলিশ ফিরিয়ে দেয়।

এ ঘটনায় ২৯ ডিসেম্বর দুই সন্তানের বাবা ইমরান শরিফ ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাতুল রাকিবের আদালতে মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।