ঢাকা ১০:৩৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউক্রেনে এখন ন্যাটোর সঙ্গে যুদ্ধ করছে রাশিয়া : পুতিনের সহযোগী

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:২০:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৩
  • ১৩০ বার

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অন্যতম ঘনিষ্ট সহযোগী ও দেশটির সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সংস্থা রাশিয়ান সিকিউরিটি কাউন্সিলের সচিব নিকোলাই পাত্রুশেভ মন্তব্য করেছেন— ইউক্রেনে এখন আর ইউক্রেনীয় বাহিনীর সঙ্গে নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সঙ্গে লড়াই করছে রুশ সেনারা।

যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা রাশিয়াকে টুকরো টুকরো করে এই দেশটির নাম বিশ্বের মানচিত্র থেকে মুছে ফেলতে চাইছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।

সম্প্রতি মস্কোভিত্তিক সাপ্তাহিক পত্রিকা আরগুমেন্তি আই ফাকতিকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন পাত্রুশেভ। সেখানে তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনে এখন যে যুদ্ধ চলছে, সেটি আর রুশ-ইউক্রেনীয় বাহিনীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এখন রুশ বাহিনী সেখানে যুদ্ধ করছে ন্যাটো, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং তাদের মিত্রদের সঙ্গে।’

‘পশ্চিমাদের পরিকল্পনা হলো— রাশিয়াকে টুকরো টুকরো করে ফেলা এবং বিশ্বের মানচিত্র থেকে রাশিয়া নামটি মুছে ফেলা। এই যুদ্ধকে ঘিরে তারা তাদের সেই অভিসন্ধি বাস্তবায়ন করতে চাইছে।’

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে ‘আগ্রাসী’ ও ‘উদ্ধত’ পশ্চিমের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বর্ধিত রূপ হিসেবে অবশ্য বেশ আগেই উল্লেখ করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। তিনি আরও বলেছিলেন, আগ্রাসী শক্তির হামলা থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য প্রয়োজনে যে কোনো উপায় অবলম্বন করবে রাশিয়া।

গত শতকের সত্তোরের দশকে প্রায় কাছাকাছি সময়ে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবিতে গুপ্তচর হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন পুতিন ও পাত্রুশেভ। রাশিয়ার কেন্দ্রীয় প্রশাসনে কট্টর পশ্চিমবিরোধী কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত নিকোলাই পাত্রুশেভ বর্তমানে পুতিনের সবচেয়ে বিশ্বস্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন।

ব্যক্তিগত জীবনে তারা পরস্পরের ভালো বন্ধু। পুতিনের পশ্চিমাবিরোধী অবস্থানের ক্ষেত্রে পাত্রুশেভের গভীর প্রভাব আছে বলেও মনে করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য বরাবরই রাশিয়ার এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। এমনকি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের এই মর্মে সতর্কবার্তাও দিয়েছেন যে, যদি রাশিয়া আর ন্যাটোর মধ্যে সংঘাত বাঁধে— তাহলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে।

মঙ্গলবার মস্কোয় রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনে আয়োজিত নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে পাত্রুশেভের সাম্প্রতিক বক্তব্য নিয়ে ক্রেমলিনের প্রেস সেক্রেটারি ও প্রেসিডেন্ট পুতিনের অন্যতম মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা।

জবাবে পেসকভ বলেন, ‘যুদ্ধের শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও তাদের পশ্চিমারা ইউক্রেনকে অস্ত্র, অর্থ, প্রযুক্তি ও তথ্য সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে এবং ইতোমধ্যে তারা যুদ্ধের একটি পক্ষ হিসেবেও নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছে। রাশিয়ার প্রতি তাদের যে মনোভাব— তা তাদের কর্মকাণ্ডেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।’

সূত্র : রয়টার্স

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

ইউক্রেনে এখন ন্যাটোর সঙ্গে যুদ্ধ করছে রাশিয়া : পুতিনের সহযোগী

আপডেট টাইম : ১২:২০:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৩

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অন্যতম ঘনিষ্ট সহযোগী ও দেশটির সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সংস্থা রাশিয়ান সিকিউরিটি কাউন্সিলের সচিব নিকোলাই পাত্রুশেভ মন্তব্য করেছেন— ইউক্রেনে এখন আর ইউক্রেনীয় বাহিনীর সঙ্গে নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সঙ্গে লড়াই করছে রুশ সেনারা।

যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা রাশিয়াকে টুকরো টুকরো করে এই দেশটির নাম বিশ্বের মানচিত্র থেকে মুছে ফেলতে চাইছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।

সম্প্রতি মস্কোভিত্তিক সাপ্তাহিক পত্রিকা আরগুমেন্তি আই ফাকতিকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন পাত্রুশেভ। সেখানে তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনে এখন যে যুদ্ধ চলছে, সেটি আর রুশ-ইউক্রেনীয় বাহিনীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এখন রুশ বাহিনী সেখানে যুদ্ধ করছে ন্যাটো, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং তাদের মিত্রদের সঙ্গে।’

‘পশ্চিমাদের পরিকল্পনা হলো— রাশিয়াকে টুকরো টুকরো করে ফেলা এবং বিশ্বের মানচিত্র থেকে রাশিয়া নামটি মুছে ফেলা। এই যুদ্ধকে ঘিরে তারা তাদের সেই অভিসন্ধি বাস্তবায়ন করতে চাইছে।’

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে ‘আগ্রাসী’ ও ‘উদ্ধত’ পশ্চিমের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বর্ধিত রূপ হিসেবে অবশ্য বেশ আগেই উল্লেখ করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। তিনি আরও বলেছিলেন, আগ্রাসী শক্তির হামলা থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য প্রয়োজনে যে কোনো উপায় অবলম্বন করবে রাশিয়া।

গত শতকের সত্তোরের দশকে প্রায় কাছাকাছি সময়ে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবিতে গুপ্তচর হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন পুতিন ও পাত্রুশেভ। রাশিয়ার কেন্দ্রীয় প্রশাসনে কট্টর পশ্চিমবিরোধী কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত নিকোলাই পাত্রুশেভ বর্তমানে পুতিনের সবচেয়ে বিশ্বস্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন।

ব্যক্তিগত জীবনে তারা পরস্পরের ভালো বন্ধু। পুতিনের পশ্চিমাবিরোধী অবস্থানের ক্ষেত্রে পাত্রুশেভের গভীর প্রভাব আছে বলেও মনে করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য বরাবরই রাশিয়ার এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। এমনকি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের এই মর্মে সতর্কবার্তাও দিয়েছেন যে, যদি রাশিয়া আর ন্যাটোর মধ্যে সংঘাত বাঁধে— তাহলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে।

মঙ্গলবার মস্কোয় রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনে আয়োজিত নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে পাত্রুশেভের সাম্প্রতিক বক্তব্য নিয়ে ক্রেমলিনের প্রেস সেক্রেটারি ও প্রেসিডেন্ট পুতিনের অন্যতম মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা।

জবাবে পেসকভ বলেন, ‘যুদ্ধের শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও তাদের পশ্চিমারা ইউক্রেনকে অস্ত্র, অর্থ, প্রযুক্তি ও তথ্য সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে এবং ইতোমধ্যে তারা যুদ্ধের একটি পক্ষ হিসেবেও নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছে। রাশিয়ার প্রতি তাদের যে মনোভাব— তা তাদের কর্মকাণ্ডেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।’

সূত্র : রয়টার্স