হাওর বার্তা ডেস্কঃ টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা দল আওয়ামী লীগের ২২তম সম্মেলনের মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে। এই সম্মেলন উপলক্ষে মঞ্চ সাজানো হয়েছে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে। আগামী নির্বাচনের বিভিন্ন লক্ষ্যও বার্তা দেওয়া হবে আওয়ামী লীগের সম্মেলনের মঞ্চে।
আগামীকাল শনিবার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের ২২তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে প্রায় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সম্মেলনে সাত হাজার কাউন্সিল ও ২৫ হাজার ডেলিগেট আগমনের পাশাপাশি লক্ষাধিক নেতাকর্মীদের সমাগম ঘটবে বলে আশা করছে আওয়ামী লীগ।
শুক্রবার সম্মেলনস্থল ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পদ্মা সেতুর ওপরে নৌকার আদলে তৈরি ৮০ ফুট দৈর্ঘ্য ৪৪ ফুট প্রস্থের মঞ্চ তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। মূল মঞ্চের উচ্চতা হবে ৭ ফুট। সাংস্কৃতিক পর্বের জন্য তৈরি হচ্ছে আলাদা মঞ্চ। মূলমঞ্চে চার লেয়ারে চেয়ার সাজানো হবে। প্রথমে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা এবং সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বসবেন। দ্বিতীয়টিতে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সিনিয়র নেতা ও সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, বাকি দুটিতে কেন্দ্রীয় নেতারা। মোট ১২০টি চেয়ার রাখা হবে মঞ্চে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপকমিটির সদস্য সচিব মির্জা আজম বলেন, পদ্মা সেতুর ওপরে নৌকার আদলে তৈরি ৮০ ফুট বনাম ৪৪ ফুট মঞ্চ তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। মূল মঞ্চের উচ্চতা হবে ৭ ফুট। মূলমঞ্চে চার ভাগে চেয়ার সাজানো হবে। এ ছাড়াও পর্যাপ্ত পরিমাণ এলইডি মনিটর থাকবে, যেখানে সম্মেলনের কার্যক্রম দেখা যাবে।
কালো রঙের নৌকার আদলে গড়ে তোলা হয়েছে সম্মেলন মঞ্চ। মঞ্চের পেছনের ব্যানারে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন প্রকল্প পদ্মাসেতুর প্রতিকৃতি ও ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয়গাঁধা স্মৃতিস্তম্ভ স্মৃতিসৌধ। স্মৃতিসৌধ এই চিত্রের বাম পাশে বড় আকারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি এবং ডানপাশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি,তারপরে শেখ রেহানার ও শেখ হাসিনার মেয়ে পুতুলের ছবি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর ছবির পরেই লালসবুজের পতাকার পাশে শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ছবিও দেওয়া হয়েছে। ব্যানেরর ডানপাশে রয়েছে জাতীয় চার নেতার ছবি এবং বামপাশে রয়েছে মাওলানা ভাসানীসহ চার নেতা ছবি।
মঞ্চের ঠিক সামনে স্থাপন করা হয়েছে সাতটি ফেস্টুন। যার ছয়টিতে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এসব ফেস্টুনে তুলে ধরা হয়েছে- তরুণ প্রজন্মের মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পদ্মা সেতু ও মহাসড়ক। এর ঠিক মাঝখানেই স্থাপন করা হয়েছে স্মার্ট বাংলাদেশের ফেস্টুন। লাল-সবুজের ফেস্টুনে লেখা হয়েছে- ‘আগামীর বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ।’ এরপরের সম্মেলনে আগত অতিথিদের বসার আসন বিন্যাস করা হয়েছে।
এছাড়া সম্মেলনস্থলের পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি। রয়েছে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের ছবি।
আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকার আদলে জায়গায় জায়গায় স্থাপন করা হয়েছে বিভিন্ন ফেস্টুন। যেখানে লেখা রয়েছে আওয়ামী লীগ সভাপতির নানা উক্তি।
আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের সম্পন্ন করতে ১১টি উপকমিটি গঠন করা হয়েছে। সম্মেলন সফল করতে ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কমিটিগুলো। কৃচ্ছসাধনের লক্ষ্যে নিজেদের সম্মেলন ব্যয় ৩০লাখ টাকা কমিয়ে এবারের সম্মেলনে বাজেট ধরা হয়েছে ৩ কোটি ১৩লাখ টাকা। প্রতিবার আওয়ামী লীগের সম্মেলন দুই দিনব্যাপী হলেও এবার তা হবে একদিন।
বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সম্মেলনস্থল পরিদর্শন করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তার সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম, ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, কার্যনির্বাহী সদস্যরা।
ওবায়দুল কাদের জানান, এবারের সম্মেলনে নেতাকর্মীদের ঢল নামবে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রাজধানীতে আসতে শুরু করেছেন।