হাওর বার্তা ডেস্কঃ ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে দেশের প্রথম মেট্রোরেল উদ্বোধনের কাজ এগিয়ে চলছে। প্রথম ধাপে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলবে ট্রেন। তবে উদ্বোধনের পর পুরোদমে চলবে না মেট্রোরেল। প্রথম সপ্তাহে শুধু সকালে আর বিকেলে চললেও, ধীরে ধীরে সময় বাড়বে।
উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের স্টেশন হবে নয়টি। এর ভাড়া প্রতি কিলোমিটার ৫ টাকা, সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা। মেট্রোরেল নির্মাণ ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সর্বশেষ প্রযুক্তিতে তৈরি ছয় বগির ট্রেন সর্বোচ্চ ১০০ কিলোমিটার গতিতে ছুটবে।
প্রথম দিকে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটারের এই পথে মেট্রোরেল সময় নেবে ২০ মিনিট। পূর্ণমাত্রায় চালু হলে এই সময় কমে আসবে ১৬-১৭ মিনিটে।
সোমবার (১২ ডিসেম্বর) এক অনুষ্ঠানে মেট্রোরেল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এবং চলাচলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বিষয়ে তিনি বলেন, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর সুবিধাজনক সময়ে উদ্বোধনের জন্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এই প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। যে কোনো দিন তারিখ পেয়ে যেতে পারি। পেয়ে যাওয়ার সাথে সাথে জানিয়ে দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল স্থাপনে চলমান এ প্রকল্পটির ব্যয় দাঁড়িয়েছিল ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। এরপর কমলাপুর থেকে পর্যন্ত মেট্রোরেল এগিয়ে নেওয়ায় মোট ব্যয় বেড়ে হয় প্রায় ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকায়। গবেষণা ও সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালে মেট্রোরেল নির্মাণে জাপানের সঙ্গে ঋণচুক্তি করে সরকার। পরের বছর প্রকল্পের বিস্তারিত নকশা প্রণয়নের কাজ শুরু হয়।
ডিএমটিসিএল কর্মকর্তারা জানান, উদ্বোধনের সময় ঘোষণার হওয়ার পর ট্রেনের টিকেট বিক্রি শুরু হবে। প্রথমদিকে কেবল স্টেশনের কাউন্টার থেকে এমআরটি পাস ইস্যু করা হবে এবং সেটা রিচার্জ করা যাবে। এছাড়া স্টেশনের কাউন্টার কিংবা টিকেট বিক্রয় মেশিন থেকে নির্দিষ্ট যাত্রার টিকেট (সিঙ্গেল জার্নি টিকেট) কেনা যাবে। পরবর্তীকালে মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস দিয়েও এমআরটি পাসের টাকা রিচার্জ করা সম্ভব হবে বলেও জানান কর্মকর্তারা।
মেট্রোরেলের বিষয়ে জনসাধারণকে ধারণা দিতে দিয়াবাড়ির মেট্রোরেল ডিপোতে স্থাপন করা মেট্রোরেল এক্সিবিশন ইনফরমেশন সেন্টার (এমইআইসি) চালু করেছে ডিএমটিসিএল।
প্রদর্শনী কেন্দ্রের পাশাপাশি উত্তরা নর্থ স্টেশনে ট্রেনের টিকেট কাটা এবং চলাচলের নিয়মাবলী সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন জাইকা এবং নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তারা।
ঢাকায় জাইকার প্রধান প্রতিনিধি ইচিগুচি তোমোহিদে বলেন, মেট্রোরেল চালু হলে মানুষের জীবনমানে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। সময় বাঁচবে, অর্থের সাশ্রয় হবে। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব বাহনে চড়তে পারবেন তারা।
অনুষ্ঠানে প্রকল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন প্রকল্পের জেনারেল কনসালটেন্ট প্রতিষ্ঠান নিপ্পন কোয়েই’র প্রতিনিধি ফুজিতোমি তাকায়ুকি, প্রকল্পের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড মেকানিক্যাল সিস্টেমস নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মারুবেনি’র প্রতিনিধি রাসোনো তেতসুয়া, ট্রেন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান কাওয়াসাকি’র প্রতিনিধি মিয়ামোতি হিদিয়াতি।