মদন (নেত্রকোণা) প্রতিনিধিঃ নেত্রকোণা মদন উপজেলার মাঘান ইউনিয়নের নয়াপাড়া ও পদারকোনা গ্রামের পাশে বেড়িবাঁধ কেটে অবৈধভাবে চলছে মাছ শিকারের মহা উৎসব।
গোবিন্দশ্রী থেকে পদারকোনা পর্যন্ত বেড়িবাঁধের পদারকোনা ও ঘাটুয়া দুই মৌজার সংযোগস্থলে পদারকোণার কাছে নয়াবিলের বাঁধ নামক স্থানে এবং নয়াপাড়া ঈদগাহ্ মাঠ হইতে নয়াপাড়া বাজারে যেতে হোল্ডার নামক স্থানে বেড়িবাঁধ কেটে অবৈধভাবে মাছে শিকারের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য যে, বিগত ২৫/০৮/২২ইং বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে কেবা কাহারা বেড়িবাঁধ কেটে দিলে পরদিন শুক্রবার দুপুরে গ্রামবাসী ইউপি সদস্য সোহেল মিয়াকে সাথে নিয়ে বাঁশ-কাঠ, লতাপাতা ও বস্তায় মাটি ভরে বাঁধ মেরামত করেন। যার ছবি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট পাঠানো হয়। কিন্তু বাঁধ মেরামত করায় মোনায়েম জিয়াউর রহমানের সাথে ও রোকন আজাদ মিয়ার সাথে মোবাইলে ফোনে রাগান্বিত ভাষায় কথা বলে।
কিন্তু ২৬/০৮/২২ ইং শুক্রবার দিবাগত রাতে দ্বিতীয় দফায় বেড়িবাঁধ কেটে দিলে। গোবিন্দশ্রী গ্রামের রবু মিয়ার ছেলে মোনায়েম, কদমশ্রী জঙ্গল পাড়ার সবুজ মিয়ার ছেলে রোকন, নয়াপাড় গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে সোহেল ও আব্দুল করিম রেডু মিয়ার ছেলে আরিফের বিরুদ্ধে বেড়িবাঁধ কেটে ফেলার অভিযোগ এনে গত ২৭/০৮/২২ ইং পদারকোনা গ্রামের কয়েকজন কৃষক গ্রামবাসীর পক্ষে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম লুৎফর রহমানের বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
এরই প্রেক্ষিতে গত ২৯/০৮/২২ ইং তরিখে “মদনে ফসল রক্ষার বাঁধ কেটে মাছ শিকারের অভিযোগ” এই শিরোনামে দৈনিক যুগান্তর, ভোরের কাগজ, সমকাল, দৈনিক ইত্তেফাক, আজকের পত্রিকা, কালের কণ্ঠ, আমাদের সময় সহ বেশ কয়েকটি জাতীয় পত্রিকা ও অনলাইনে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি প্রশাসন গুরুত্ব সহকারে আমলে নেয়।
এ বিষয়ে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তদন্তে গেলে গ্রামবাসী বাঁধের ভাঙ্গা অংশ বেধে ফেলার অনুমতি চাইলে নির্বাহী কর্মকর্তা মৌখিক অনুমতি দিলে ঐদিনেই নৌকা দিয়ে মাটি সংগ্রহ করে গ্রামবাসী বেড়িবাঁধের ভাঙ্গা অংশ পুনরায় মেরামত করে। এই বাঁধটি ফসল রক্ষার বাঁধ হলেও শুকনো মৌসুমে কয়েক গ্রামের মানুষের চলাচলের এক মাত্র রাস্তা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গ্রামবাসীকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে, বাঁধ কেটে অবৈধভাবে কাউকে মাছ শিকার করতে দেওয়া হবে না। এখন জনমনে প্রশ্ন জেগেছে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম লুৎফর রহমান চলে যাওয়ার পর তৃতীয় দফায় বাঁধ কেটে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে অভিযুক্ত ব্যাক্তিরাই কিভাবে মাছ শিকার করছে? তাহলে কি আইনের সঠিক প্রয়োগ নেই? নাকি সরিষাতেও ভূত রয়েছে?
মাছ শিকারীদের একজন আরিফ মিয়া জানান, ভূমি অফিসের অনুমতি নিয়েই আমারা বেড়িবাঁধের মাছ শিকার করছি। তবে, এ বিষয়ে রোকন ভালো জানে।
স্থানীয় ইউপি সদস্যদ মোঃ সোহেল মিয়া ঘটনার সত্য শিকার করে বলেন, গত ১০-১৫ দিন যথাবৎ কিছু লোক মাছ শিকার করছে এবং শুনেছি আরো ৫-৭ দিন পর্যন্ত মাছ শিকার করবে।
এ বিষয়ে জেলা পরিষদের সদস্য এস এম মনিরুল টিটু বলেন, বেড়িবাঁধ কেটে মাছ শিকার একটি অবৈধ কাজ। যদি কেউ এধরণের কাজ করে থাকে, প্রশাসনের সাথে কথা বলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মোঃ শাহনূর রহমান জানান, বিষয়টি অবগত হয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানজিনা শাহরীন জানান, এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মোঃ শাহনূর রহমানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।