রাজনৈতিক দল সভা-সমাবেশ করবে এতে আমাদের কোনো হস্তক্ষেপ নেই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

হাওর বার্তা ডেস্কঃ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, পুলিশ বঙ্গবন্ধুর ‘জনগণের পুলিশ’ হয়ে জনগণের পাশে যেতে পেরেছে। জনগণের কাছে পুলিশ নির্ভরতা ও আস্থার জায়গা তৈরি করতে পেরেছে। এটা ধরে রাখতে হবে।

মঙ্গলবার রাতে রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে প্রধান অতিথি হিসেবে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স কোয়ার্টারলি কনফারেন্সে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান।

পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা জীবন বাজি রেখে কাজ করছেন বলেই সন্ত্রাস দমনে আজ আমরা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছি। আপনারা সফল হতে পেরেছেন বলেই জলদস্যু, বনদস্যু পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।

মন্ত্রী বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল সভা-সমাবেশ করবে এতে আমাদের কোনো হস্তক্ষেপ নেই। আমরা তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধা দেবো না। কিন্তু কেউ রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

সিনিয়র সচিব বলেন, বর্তমানে পুলিশের কর্মপরিধি বেড়েছে, চ্যালেঞ্জ বেড়েছে। অপরাধের ধরন ও কৌশলে পরিবর্তন এসেছে।

তিনি বলেন, দেশের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সাফল্যের সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। দেশের আইন-শৃঙ্খলা সামগ্রিকভাবে স্থিতিশীল রয়েছে বলেই দেশের অগ্রগতি অব্যাহত আছে।

আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পেশাদারত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করায় পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা অনেক বেড়েছে। পুলিশ জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমনে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে। এ আস্থার কারণে আমাদের কাছে জনগণের প্রত্যাশাও বেড়েছে। জনগণের প্রত্যাশা পূরণ ও তাদের আস্থা ধরে রাখতে নতুন উদ্যমে দায়িত্ব পালন করতে হবে। সকলে মিলে একযোগে কাজ করে আমাদের সাফল্য ধরে রাখতে হবে।

মঙ্গলবার সকালে রাজারবাগ পুলিশ লাইনে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে দুই দিনব্যাপী (৮-৯ নভেম্বর) পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স কোয়ার্টারলি কনফারেন্সের প্রথম দিনে চলতি বছরের তৃতীয় কোয়ার্টারের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) অপরাধ পর্যালোচনা সভায় সভাপতিত্বকালে এ কথা বলেন।

সভায় ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) ওয়াই এম বেলালুর রহমান আলোচ্য সময়ে দেশের সার্বিক অপরাধ চিত্র সভায় উপস্থাপন করেন।

সভায় অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া, পিবিআই’র বিষয়ে অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার এবং অপারেশন সংক্রান্তে ডিআইজি (অপারেশনস) মো. হায়দার আলী খান সিআইডি সম্পর্কে উপস্থাপনা তুলে ধরেন।

সভায় অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মো. কামরুল আহসান, অতিরিক্ত আইজিপি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো. আতিকুল ইসলাম, এসবি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. মনিরুল ইসলামসহ অতিরিক্ত আইজিপিরা, সকল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি এবং জেলার পুলিশ সুপাররা উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশ প্রধান বলেন, থানা পুলিশের সেবার মূলকেন্দ্র। থানায় জনগণের সেবাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে তদারকি বাড়াতে হবে। থানার কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

আইজিপি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেন, কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মাদকসহ অন্যান্য অপরাধে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান ‘জিরো টলারেন্স’।

কিশোর অপরাধ সম্পর্কে আইজিপি বলেন, কিশোররা নানা ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। কিশোর অপরাধ দমনে পুলিশের তৎপরতা আরও বাড়াতে হবে, যাতে কোন এলাকায় কিশোর অপরাধের নামে ‘গ্যাং’ কালচার গড়ে উঠতে না পারে। এক্ষেত্রে, সামাজিক সচেতনতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন আইজিপি।

আইজিপি বলেন, ডাকাতি, চুরিসহ অন্যান্য অপরাধ দমনে আরও সতর্ক থাকতে হবে, মামলা মনিটরিং বাড়াতে হবে।

 

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর