হাওর বার্তা ডেস্কঃ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাড়তি ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের মুখোমুখি সুন্দরবন। নিম্নচাপ ও পূর্ণিমার অস্বাভাবিক জোয়ারে তলিয়ে যাচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। হুমকির মুখে বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য।
সমুদ্র উপকূলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। দশ হাজার বর্গকিলোমিটার আয়তনের ছয় হাজার বর্গকিলোমিটারই পড়েছে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে। পরম বন্ধু হয়ে এ দেশকে রক্ষা করে চলেছে ইউনেস্কোর বিশ্ব-ঐতিহ্য এই বন।
বনবিভাগের কর্মীরা বলছেন, আগে বছরে এক-দুটি ঘূর্ণিঝড় বা জলোচ্ছ্বাস আঘাত হানতো বাংলাদেশে। এখন অন্তত ছয়-সাতটি বড় বড় ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের মুখোমুখি হতে হচ্ছে সুন্দরবনকে। এটি ঘটছে কেবলমাত্র জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবেই।
একজন বলেন, “এখন যেভাবে পানির উচ্চতা বাড়ছে তাতে বন্যাপ্রাণী হুমকির মুখে পড়ছে। এই পূর্ণিমায় সাধারণ জোয়ারের চেয়ে সাড়ে তিনফুট বেশি উচ্চতায় পানি উঠেছে।”
বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টি হলেই জোয়ারের পানি বেড়ে তলিয়ে যাচ্ছে করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রসহ সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। এতে বাড়ছে বন্যপ্রাণীর ক্ষতির আশঙ্কাও।
করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আজাদ কবির বলেন, “এই মুহূর্তে সুন্দরবনের ভেতরে কিছু জায়গা উচু করে দেওয়া প্রয়োজন, যাতে সেখানে বন্যপ্রাণীগুলো আশ্রয় নিতে পারে।”
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ায় নিচু অঞ্চল এবং দ্বীপগুলোতে লোনা পানি ঢুকে সুন্দরবনের বাস্তুতন্ত্রে ব্যাপক পরিবর্তনের আশঙ্কা করছে ইন্টারগভর্মেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ- আইপিসিসিও।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ডিসিপ্লিন প্রধান ড. আব্দুল্লাহ হারুন চৌধুরী বলেন, ” এটি একটি চক্র, এটির পরিবর্তের কারণে এই দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ যারা সুন্দরবনের রিসোর্সের ওপর নির্ভরশীল তাদের জীবনচক্রেও পরিবর্তন এসেছে।”
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বৈশ্বিক ও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ বাস্তবায়নের পাশাপাশি সুন্দরবন ব্যবহারকারীদেরও সচেতন হবার তাগিদ বিশেষজ্ঞদের।