ঢাকা ০৯:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোদির নিরাপত্তায় দৈনিক খরচ দেড় কোটির বেশি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:০১:৪৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ৮৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা বরাবরই জোরদার রয়েছে। যাকে বলে, নিরাপত্তার বজ্রআঁটুনিতে মুড়ে ফেলা থাকে। এজন্য দৈনিক কোটি টাকা খরচও হয়। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাবলয় কেমন হয়, এজন্য ঠিক কত খরচ হয়, তারই বিবরণ এখানে তুলে ধরা হলো ।

‘স্পেশাল প্রটেকশন গ্রুপ’ (এসপিজি) নিরাপত্তা পান ভারতের প্রধানমন্ত্রী। দেশটির প্রধানমন্ত্রী পদের মেয়াদ শেষের পর, অর্থাৎ সাবেক প্রধানমন্ত্রী হলে তাকে পাঁচ বছরের জন্য এই বিশেষ নিরাপত্তা প্রদান করা হয়। তার পর ওই নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এসপিজি নিরাপত্তার বহর দেখলে রীতি মতো চমকে যাওয়ার কথা। যেকোনো হামলার ঘটনা এড়াতে এই বিশেষ নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়। বর্তমানে নরেন্দ্র মোদি পান এমনই নিরাপত্তা।

এই নিরাপত্তা বলয়ে প্রধানমন্ত্রীর কনভয় থাকে। কনভয়ের প্রথম গাড়িটি দিল্লি পুলিশের নিরাপত্তা কর্মীর। এই গাড়িতে সাইরেন থাকে। গাড়িটির পর থাকে এসপিজির গাড়ি। তার পরে থাকে আরো দু’টি গাড়ি। এর পরে আরও দু’টি গাড়ি থাকে। যার একটি থাকে বাম দিকে। অপরটি ডান দিকে। মধ্যখানে থাকে মোদির গাড়ি।

দু’দিক থেকে ওই দু’টি গাড়ি প্রধানমন্ত্রী মোদির গাড়িকে ঘিরে থাকে। যাতে সহজেই কেউ প্রধানমন্ত্রীর গাড়ির কাছাকাছি আসতে না পারে। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা জোরদার করতেই এই বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রীর সুরক্ষার্থে এসপিজির বিশেষ নিরাপত্তা দল মোতায়েন করা হয়। এক হাজার জনেরও বেশি কমান্ডো ঘিরে থাকেন।

জনসমক্ষে কোনো অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গেলে, তাকে ঘিরে থাকেন এসপিজি কমান্ডোরা। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার জন্য কমান্ডো নিয়োগের ক্ষেত্রেও বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় নিয়োগ করার আগে যেকোনো কমান্ডোকে ভালো করে যাচাই করে নেওয়া হয়। তার পরই তাদের নিয়োগ করা হয়।

নিরাপত্তা বেষ্টনীর দ্বিতীয় সারিতে থাকেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী। এসপিজির কর্মীদের মতো তারাও দক্ষ ও প্রশিক্ষিত হন। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা মোকাবিলায় তারা পটু।

প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বেষ্টনীর তৃতীয় সারিতে থাকে ‘ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড’ (এনএসজি)। চার নম্বর সারিতে থাকেন বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশ কর্মকর্তারা। যখন প্রধানমন্ত্রী কোনো রাজ্যে যান, সেই রাজ্যের পুলিশ কর্মকর্তারা ওই চার নম্বর সারিতে থাকেন।

নিরাপত্তা বেষ্টনীর পঞ্চম সারিতে থাকে পুলিশ ও কমান্ডোদের নিয়ে সজ্জিত অত্যাধুনিক প্রযুক্তির গাড়ি। যদি কখনো ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কনভয়ে হামলা চালানো হয়, তা মোকাবিলা করতে সক্ষম ওই গাড়িগুলো। এমনকি, রাসায়নিক ও জৈবিক হামলা প্রতিরোধেও পারদর্শী ওই গাড়িগুলো।

‘বুলেটপ্রুফ বিএমডাব্লিউ ৭’ গাড়িতে চড়েন দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রীর গাড়ির মতো দেখতে আরো দু’টি গাড়ি থাকে কনভয়ে। আদতে প্রধানমন্ত্রীর গাড়ি কোনটি, সেটি যেন বুঝতে না পারেন আততায়ীরা, সে কারণেই প্রধানমন্ত্রীর গাড়ির মতো দেখতে দু’টি গাড়ি রাখা হয়।

প্রধানমন্ত্রীর কনভয়ে থাকে জ্যামার লাগানো বিশেষ গাড়ি। যার মধ্যে দু’টি অ্যান্টেনা থাকে। রাস্তার ১০০ মিটারের মধ্যে বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করতে পারে এই গাড়ি।

এ ছাড়াও রাখা হয় একটি অ্যাম্বুল্যান্স। আপৎকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় চিকিৎসার সুবিধার জন্যই অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয়। প্রধানমন্ত্রী মোদি যখন হাঁটেন জনসমক্ষে, তখন তার পাশে থাকেন সাদা পোশাকে পরিহিত এনএসজি কমান্ডোরা।

ভারতের সংসদে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, মোদির নিরাপত্তার জন্য দৈনিত খরচ হয় ১.৬২ কোটি রুপি। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে এসপিজি নিরাপত্তার জন্য ৫৯২.৫৫ কোটি রুপি বরাদ্দ করা হয়েছিল।
সূত্র: আনন্দবাজার।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মোদির নিরাপত্তায় দৈনিক খরচ দেড় কোটির বেশি

আপডেট টাইম : ১০:০১:৪৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা বরাবরই জোরদার রয়েছে। যাকে বলে, নিরাপত্তার বজ্রআঁটুনিতে মুড়ে ফেলা থাকে। এজন্য দৈনিক কোটি টাকা খরচও হয়। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাবলয় কেমন হয়, এজন্য ঠিক কত খরচ হয়, তারই বিবরণ এখানে তুলে ধরা হলো ।

‘স্পেশাল প্রটেকশন গ্রুপ’ (এসপিজি) নিরাপত্তা পান ভারতের প্রধানমন্ত্রী। দেশটির প্রধানমন্ত্রী পদের মেয়াদ শেষের পর, অর্থাৎ সাবেক প্রধানমন্ত্রী হলে তাকে পাঁচ বছরের জন্য এই বিশেষ নিরাপত্তা প্রদান করা হয়। তার পর ওই নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এসপিজি নিরাপত্তার বহর দেখলে রীতি মতো চমকে যাওয়ার কথা। যেকোনো হামলার ঘটনা এড়াতে এই বিশেষ নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়। বর্তমানে নরেন্দ্র মোদি পান এমনই নিরাপত্তা।

এই নিরাপত্তা বলয়ে প্রধানমন্ত্রীর কনভয় থাকে। কনভয়ের প্রথম গাড়িটি দিল্লি পুলিশের নিরাপত্তা কর্মীর। এই গাড়িতে সাইরেন থাকে। গাড়িটির পর থাকে এসপিজির গাড়ি। তার পরে থাকে আরো দু’টি গাড়ি। এর পরে আরও দু’টি গাড়ি থাকে। যার একটি থাকে বাম দিকে। অপরটি ডান দিকে। মধ্যখানে থাকে মোদির গাড়ি।

দু’দিক থেকে ওই দু’টি গাড়ি প্রধানমন্ত্রী মোদির গাড়িকে ঘিরে থাকে। যাতে সহজেই কেউ প্রধানমন্ত্রীর গাড়ির কাছাকাছি আসতে না পারে। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা জোরদার করতেই এই বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রীর সুরক্ষার্থে এসপিজির বিশেষ নিরাপত্তা দল মোতায়েন করা হয়। এক হাজার জনেরও বেশি কমান্ডো ঘিরে থাকেন।

জনসমক্ষে কোনো অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গেলে, তাকে ঘিরে থাকেন এসপিজি কমান্ডোরা। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার জন্য কমান্ডো নিয়োগের ক্ষেত্রেও বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় নিয়োগ করার আগে যেকোনো কমান্ডোকে ভালো করে যাচাই করে নেওয়া হয়। তার পরই তাদের নিয়োগ করা হয়।

নিরাপত্তা বেষ্টনীর দ্বিতীয় সারিতে থাকেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী। এসপিজির কর্মীদের মতো তারাও দক্ষ ও প্রশিক্ষিত হন। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা মোকাবিলায় তারা পটু।

প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বেষ্টনীর তৃতীয় সারিতে থাকে ‘ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড’ (এনএসজি)। চার নম্বর সারিতে থাকেন বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশ কর্মকর্তারা। যখন প্রধানমন্ত্রী কোনো রাজ্যে যান, সেই রাজ্যের পুলিশ কর্মকর্তারা ওই চার নম্বর সারিতে থাকেন।

নিরাপত্তা বেষ্টনীর পঞ্চম সারিতে থাকে পুলিশ ও কমান্ডোদের নিয়ে সজ্জিত অত্যাধুনিক প্রযুক্তির গাড়ি। যদি কখনো ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কনভয়ে হামলা চালানো হয়, তা মোকাবিলা করতে সক্ষম ওই গাড়িগুলো। এমনকি, রাসায়নিক ও জৈবিক হামলা প্রতিরোধেও পারদর্শী ওই গাড়িগুলো।

‘বুলেটপ্রুফ বিএমডাব্লিউ ৭’ গাড়িতে চড়েন দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রীর গাড়ির মতো দেখতে আরো দু’টি গাড়ি থাকে কনভয়ে। আদতে প্রধানমন্ত্রীর গাড়ি কোনটি, সেটি যেন বুঝতে না পারেন আততায়ীরা, সে কারণেই প্রধানমন্ত্রীর গাড়ির মতো দেখতে দু’টি গাড়ি রাখা হয়।

প্রধানমন্ত্রীর কনভয়ে থাকে জ্যামার লাগানো বিশেষ গাড়ি। যার মধ্যে দু’টি অ্যান্টেনা থাকে। রাস্তার ১০০ মিটারের মধ্যে বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করতে পারে এই গাড়ি।

এ ছাড়াও রাখা হয় একটি অ্যাম্বুল্যান্স। আপৎকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় চিকিৎসার সুবিধার জন্যই অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয়। প্রধানমন্ত্রী মোদি যখন হাঁটেন জনসমক্ষে, তখন তার পাশে থাকেন সাদা পোশাকে পরিহিত এনএসজি কমান্ডোরা।

ভারতের সংসদে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, মোদির নিরাপত্তার জন্য দৈনিত খরচ হয় ১.৬২ কোটি রুপি। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে এসপিজি নিরাপত্তার জন্য ৫৯২.৫৫ কোটি রুপি বরাদ্দ করা হয়েছিল।
সূত্র: আনন্দবাজার।