হাওর বার্তা ডেস্কঃ যশোরের মণিরামপুরের রাজগঞ্জের অঞ্চলে মাঠে মাঠে শীতকালীন আগাম জাতের হাইব্রিড শিম চাষে লাভের স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা। মাঠজুড়ে ফুল-ফলের সমারোহ হাইব্রিড আগাম জাতের শিম গাছ মানুষের হৃদয় কাড়ছে।
জানা যায়, বানের উপর ঝিঙে ও পটলের চাষ করেছিলেন চাষিরা। অল্প সময়ে ঝিঙে চাষ শেষ হতেই ওই বানেই শিম চাষের উদোগ নেন চাষিরা। জমি তৈরি ছাড়াই জৈষ্ঠ মাসের শেষের দিকে ওই বানের নিচ দিয়ে শিম বীজ রোপণ করেন চাষিরা। এ জাতের শিমের বীজ রোপণের ৪৫-৫০ দিনের মধ্যে ফুল-ফল আসে।
সরেজমিনে মাঠে দেখা যায়, ক্ষেতে কেউ ব্যস্ত কীটনাশক প্রয়োগে। আবার কেউ শিম ওঠাতে। পাশের একটা ক্ষেতে চোখ পড়তেই দেখা মেলে এক নারীর। কাছে যেতেই দেখা যায় কাঁচি দিয়ে শিমের ডোগা কাটছেন। এ সময় তিনি বলেন, শিম গাছের ওই ডোগায় কোনো ফুল-ফল হয় না। ফলে ওইসব শিমের ডোগা কেটে গরু ছাগলের খাদ্যের ব্যবস্থা করছি।
হাকিমপুর গ্রামের আ. হান্নান ২৪ শতক, হাসেম মোড়ল ৪৮ শতক, মুক্তার মোড়ল ৪৮, আজগার আলী ৭৪ শতক, তৌহিদ ৭২ শতক, নাজমুল ২৪ শতক জমিতে শিম চাষ করেছেন। আ, হান্নান বলেন, ‘আন সিজনে শিমের চাষ করছি, তাই পোকার উপদ্রপ কিছুটা বেশি। দুই-একদিন পর পর বিষ স্প্রে করতে হচ্ছে।’
আজগার আলী বলেন, ৭৪ শতক জমিতে শিম চাষে খরচ প্রায় ১ লাখ টাকা। ফুল-ফল দেখে আশা করছি প্রায় চার লাখ টাকার শিম বিক্রি করতে পারবো। ইতিমধ্যে প্রায় ২০ আগে থেকে শিম বিক্রি করছি। অসময়ের শিম তাই প্রতি কেজি ১২০ থেকে দেড়শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে পেরেছি।
হরিশপুর গ্রামের আবুল হাসেম বলেন, আমি শিম চাষের পূর্বে এই ৪৮ শতক জমিতে ঝিঙের চাষ করেছিলাম। সেখানে বান বানানোসহ চাষে ১৫ হাজার টাকার মত খরচ হয়েছিল। ঝিঙে বিক্রি করেছিলাম প্রায় ৩০ হাজার টাকা। পরে ওই ৪৮ শতক জমির বানের উপরে হাইব্রিড শিম চাষ করেছি। গাছের চেহারা ভালো। ফল-ফুল প্রচুর ধরেছে।
হরিশপুর গ্রামের চাষি মুক্তার বলেন, আমার মত এই মাঠে দুই তিন গ্রামের প্রায় অর্ধশত চাষি প্রায় শত বিঘা জমিতে আগামজাতের শিম চাষ করেছেন। অসময়ে শিম চাষ করাতে রোগব্যাধি অনেকটা বেশি দেখা দিচ্ছে। কীটনাশক দমনের জন্য আমরা বাইসালফান ও নীল জাতীয় ওষুধ প্রয়োগ করছি।
চালুয়াহাটি ইউনিয়ন কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা মারুফুল হক ও হাবিবুর রহমান বলেন, অসময়ে শিম চাষ হলেও গাছ ও ফুল-ফল সব দিকে ভালো। আমি সব সময় শিমক্ষেত দেখাশুনা করি। চাষিদের সঙ্গে কথা বলি এবং পরামর্শ দিয়েছি।