ঢাকা ০৬:২৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নওগাঁয় বস্তায় আদা চাষ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৫৩:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ১৩৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নওগাঁর রানীনগর উপজেলার শিয়ালা গ্রামের কৃষক জহুরুল ইসলাম। পরিত্যক্ত একটি জমিতে বস্তায় আদা চাষ করেছেন।

আদা রোপণের মাত্র তিন মাসের মাথায় গাছগুলোতে আদা হতে শুরু করেছে।

কৃষক জহুরুল ইসলাম জানান, প্রথমে ইউটিউব দেখে আদা চাষে আগ্রহী হন তিনি। এরপর স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে শুরু করেন চাষ। প্রথমে ছাই, জৈব সার ও বালু মিশিয়ে মাটি প্রস্তুত করেন। পরীক্ষামূলকভাবে ছয় কাঠা জমিতে ১৬০০ বস্তায় সেই মাটি ভরে টবের মতো করেন তিনি। এরপর প্রতিটি বস্তায় তিনটি করে আদার চারা রোপণ করেন। রোপণের মাত্র এক মাসের মাথায় গাছ বড় হতে শুরু করে৷ এরপর মাত্র তিন মাসের মধ্যে গাছগুলোর গোড়ায় আদা ধরতে শুরু করেছে। এ ভাবে আদা চাষে সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, পতিত জমিতে খুবই সীমিত খরচ আর অল্প শ্রমে চাষ করা সম্ভব। একেকটি বস্তায় প্রায় দুই কেজি পর্যন্ত আদা পাওয়া যাবে।

 

জহুরুল আরও জানান, সীমিত খরচ, কম যায়গা আর অল্প শ্রমে এটি একটি লাভজনক চাষ। আদা গাছে পানির চাহিদা অনেক কম। আবার সার বা কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় খুবই কম। মাঝে মধ্যে পাতা মরা রোগ প্রতিরোধে কিছু ওষুধ স্প্রে করতে হয়। এর বাহিরে তেমন কোনো পরিচর্যা করতে হয় না। এভাবে আদা চাষ করে সহজেই লাভবান হওয়া যায়।

প্রথম অবস্থায় অল্প পরিসরে চাষ করেছেন তিনি। এ বছর যদি লাভ ভালো হয়, তাহলে আগামীতে আরও বড় পরিসরে আদা চাষ করবেন বলে জানান কৃষক জহুরুল ইসলাম।

তিনি আরও জানান, একটি বস্তায় চারা রোপণ করতে মোট খরচ হবে ৩০ টাকা। কিন্তু একেকটি বস্তায় আদা পাওয়া যাবে প্রায় দুই থেকে আড়াই কেজি। বর্তমানে দুই কেজি আদার বাজার মূল্য ২০০ টাকা।

জহুরুল ইসলামের এ পদ্ধতিতে আদা চাষ দেখে এলাকার অনেক মানুষের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। মাঝে মধ্যেই বিভিন্ন গ্রাম থেকে আদা চাষ দেখতে আসেন অনেকে।

একই গ্রামের সিরাজুল ইসলাম জানান, এভাবে আদা চাষ এর আগে আমি দেখিনি। এটি দেখার পরে আমাদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে এ এলাকার বেশ কয়েকজন কৃষক এভাবে আদা চাষ শুরু করেছেন। বস্তায় আদা চাষ খুবই সহজ। অল্প খরচে বেশি লাভজনক একটি ফসল।

 

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক আনোয়ারুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, এ পদ্ধতিতে আদা চাষে জমির চেয়ে রোগবালাইয়ের আক্রমণ হয় কম। বস্তায় আদা চাষে কীটনাশক এবং পানি লাগে অনেক কম। ফলে যে কোনো স্থানে এভাবে আদা চাষ করা সম্ভব৷ পাশাপাশি কেউ চাইলে বাসার সাদে, বেলকোনিতে, এবং বাড়ির সামনে পরিত্যক্ত স্থানেও চাষ করতে পারে। বাণিজ্যিকভাবে যদি কেউ চাষ না করতে চায়, নিজেদের আদার চাহিদা মেটানো সম্ভব। কেউ যদি এভাবে আদা চাষ করতে চায়, তাহলে আগ্রহীদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেওয়া হবে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

নওগাঁয় বস্তায় আদা চাষ

আপডেট টাইম : ১১:৫৩:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নওগাঁর রানীনগর উপজেলার শিয়ালা গ্রামের কৃষক জহুরুল ইসলাম। পরিত্যক্ত একটি জমিতে বস্তায় আদা চাষ করেছেন।

আদা রোপণের মাত্র তিন মাসের মাথায় গাছগুলোতে আদা হতে শুরু করেছে।

কৃষক জহুরুল ইসলাম জানান, প্রথমে ইউটিউব দেখে আদা চাষে আগ্রহী হন তিনি। এরপর স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে শুরু করেন চাষ। প্রথমে ছাই, জৈব সার ও বালু মিশিয়ে মাটি প্রস্তুত করেন। পরীক্ষামূলকভাবে ছয় কাঠা জমিতে ১৬০০ বস্তায় সেই মাটি ভরে টবের মতো করেন তিনি। এরপর প্রতিটি বস্তায় তিনটি করে আদার চারা রোপণ করেন। রোপণের মাত্র এক মাসের মাথায় গাছ বড় হতে শুরু করে৷ এরপর মাত্র তিন মাসের মধ্যে গাছগুলোর গোড়ায় আদা ধরতে শুরু করেছে। এ ভাবে আদা চাষে সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, পতিত জমিতে খুবই সীমিত খরচ আর অল্প শ্রমে চাষ করা সম্ভব। একেকটি বস্তায় প্রায় দুই কেজি পর্যন্ত আদা পাওয়া যাবে।

 

জহুরুল আরও জানান, সীমিত খরচ, কম যায়গা আর অল্প শ্রমে এটি একটি লাভজনক চাষ। আদা গাছে পানির চাহিদা অনেক কম। আবার সার বা কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় খুবই কম। মাঝে মধ্যে পাতা মরা রোগ প্রতিরোধে কিছু ওষুধ স্প্রে করতে হয়। এর বাহিরে তেমন কোনো পরিচর্যা করতে হয় না। এভাবে আদা চাষ করে সহজেই লাভবান হওয়া যায়।

প্রথম অবস্থায় অল্প পরিসরে চাষ করেছেন তিনি। এ বছর যদি লাভ ভালো হয়, তাহলে আগামীতে আরও বড় পরিসরে আদা চাষ করবেন বলে জানান কৃষক জহুরুল ইসলাম।

তিনি আরও জানান, একটি বস্তায় চারা রোপণ করতে মোট খরচ হবে ৩০ টাকা। কিন্তু একেকটি বস্তায় আদা পাওয়া যাবে প্রায় দুই থেকে আড়াই কেজি। বর্তমানে দুই কেজি আদার বাজার মূল্য ২০০ টাকা।

জহুরুল ইসলামের এ পদ্ধতিতে আদা চাষ দেখে এলাকার অনেক মানুষের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। মাঝে মধ্যেই বিভিন্ন গ্রাম থেকে আদা চাষ দেখতে আসেন অনেকে।

একই গ্রামের সিরাজুল ইসলাম জানান, এভাবে আদা চাষ এর আগে আমি দেখিনি। এটি দেখার পরে আমাদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে এ এলাকার বেশ কয়েকজন কৃষক এভাবে আদা চাষ শুরু করেছেন। বস্তায় আদা চাষ খুবই সহজ। অল্প খরচে বেশি লাভজনক একটি ফসল।

 

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক আনোয়ারুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, এ পদ্ধতিতে আদা চাষে জমির চেয়ে রোগবালাইয়ের আক্রমণ হয় কম। বস্তায় আদা চাষে কীটনাশক এবং পানি লাগে অনেক কম। ফলে যে কোনো স্থানে এভাবে আদা চাষ করা সম্ভব৷ পাশাপাশি কেউ চাইলে বাসার সাদে, বেলকোনিতে, এবং বাড়ির সামনে পরিত্যক্ত স্থানেও চাষ করতে পারে। বাণিজ্যিকভাবে যদি কেউ চাষ না করতে চায়, নিজেদের আদার চাহিদা মেটানো সম্ভব। কেউ যদি এভাবে আদা চাষ করতে চায়, তাহলে আগ্রহীদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেওয়া হবে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে।