২ হাজার বন্যার্ত এবং দরিদ্র পরিবার নিয়ে বিথীর ঈদ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রংপুরের নারী ক্রিকেটার আরিফা জাহান বিথী। ইনজুরির কারণে নিজের ক্রিকেট ক্যারিয়ার খুব একটা লম্বা করতে পারেন তিনি।

রংপুরে একটি ক্রিকেট একাডেমী গড়ে তুলেছেন বিথী। অবসর নিলেও এখনও সময় কাটে ক্রিকেট নিয়েই। ক্রিকেটের বাইরে বিথী পরিচিতি পেয়েছেন তার মানবিকগুণের কারণে। দেশের যে কোনও দুর্যোগের সময় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান এই মানবিক গুন সম্পন্ন মানুষটি।

করোনা পরিস্থিতিতে বিথীর সামাজিক কর্মকাণ্ড সকলের নজর কেড়েছিল। করোনাভাইরাসের সময় মানুষের জীবন যখন বিপর্যস্ত, তখন নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন ক্রিকেটার আরিফা জাহান বিথী। পরিচিতি পেয়েছিলেন অক্সিজেন লেডি হিসেবে। করোনা এখন নেই, কিন্তু দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যায় লাখো জীবন বিপন্নের মুখে। এবারও বিপর্যস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন রংপুরের এই ক্রিকেটার। বন্যায় ত্রাণ নিয়ে ছুটেছেন মানুষের বাড়ি বাড়ি। হাঁটু কিংবা গলা পানি পাড়ি দিয়েই ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছেন তিনি।

আজ পবিত্র ঈদ উল আযহার দিনও অসহায় মানুষদের সঙ্গেই কাটাচ্ছেন এই ক্রিকেটার। ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিচ্ছেন বানভাসী মানুষদের সঙ্গে। শুধু বন্যার্তই নয় রংপুরের আশেপাশে যে দরিদ্র এলাকাগুলো রয়েছে সেখানেও কোরবানীর গোস্ত পৌছে দেবেন বিথী।  বাংলানিউজটোয়েন্টিফোরকে বিথী জানান, ত্রাণ দিতে গেলে খুব আফসোস নিয়ে একজন বলেছিলেন আপা কোরবানি ঈদের দিনে কি কোরবানি গোস্ত দেয়া সম্ভব? আমাদের তো সব দিনেই সমান। কিছু না ভেবেই উওর দিয়েছিলাম ঠিক আছে আল্লাহ ভরসা। ’

 

‘কিছু মানুষ খুব ভালো ভাবে জানে যে এই কোরবানি নিয়ে কতটা চিন্তায় ছিলাম এবং সব থেকে বড় কথা আল্লাহ সেটি খুব ভালো ভাবেই জানতো। আল্লাহ কি মহান নিয়ত করেছিলাম ১ হাজার পরিবারের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করবো সেটি অতিক্রম করে বৃদ্ধি পেয়েছে ২ হাজার পরিবারে। ’

সকলের কাছ থেকে আর্থিক অনুদান নিয়ে আজ বানভাসি এবং রংপুরের দরিদ্র মানুষেদের জন্য ৬ টি গরু এবং ৫টি ছাগল কোরবানি দিয়েছেন বিথী। তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যেই কোরবানি হয়ে গেছে। আশা করছি বিকেলের মধ্যেই সকলের কাছে গোস্ত পৌছাতে। আমাদের গরুগুলো বড় ছিল। তাই আশা করছি ২ হাজার পরিবারের মধ্যে এই গোস্ত দেয়া সম্ভব হবে। ’

‘মূলত দুস্থ, এতীম, কৃষক, সিকিউরিটি গার্ড, নিন্মবিত্ত এবং বানভাসি পরিবারের ঈদের আনন্দের জন্যই এই চেষ্টা। ’

ঈদের দিন বানভাসিদের জন্য কাজ করছেন। নিজের পরিবারকে সময় দিতে পেরেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বিথী বলেন, ‘সত্যি বলতে তেমন সময় দিতে পারিনি। পরিবারের সকলেই আমার সঙ্গে বানভাসিদের কাজ করছে। আর আমি তো ভাগ্যবান মনে করি নিজেকে। আমি ২ হাজার পরিবার নিয়ে ঈদ করতে যাচ্ছি। ’

যারা বিথীর মানবিক আবেদনে সাড়া দিয়ে পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন সকলেই ধন্যবাদ দিয়েছেন তিনি। ‘আসলে আমার একার পক্ষে তো খুব বেশি কিছু করা সম্ভব হতো না। যারাই আমার আবেদনে সাড়া দিয়ে এগিয়ে এসেছেন সকলেই ধন্যবাদ দিতে চাই সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা। ’

‘সকলের ঈদ ভালো কাটুক এটাই আমার প্রত্যাশা। ’

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর