হাওর বার্তা ডেস্কঃ শক্তিশালী উদীয়মান বাজার হিসেবে পশ্চিমাদের বিকল্প বিবেচনা করা হয় চীন-রাশিয়ার ব্রিকস জোটকে। সেই জোটে যোগ দিতে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করেছে ইরান এবং আর্জেন্টিনা। মঙ্গলবার (২৮ জুন) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ইরান ব্রিকসের সদস্য হলে তাতে উভয়পক্ষই লাভবান হবে বলে মন্তব্য করেছেন ইরানি পররাষ্ট্র মন্ত্রাণলয়ের মুখপাত্র। জোটের সদস্য হতে আর্জেন্টিনাও আবেদন করেছে বলে নিশ্চিত করেছে রাশিয়া।
ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত ও চীনের শক্তিশালী হয়ে ওঠা বর্ণনা করতে গিয়ে ২০০১ সালে প্রথম ব্রিক (বিআরআইসি) শব্দটি ব্যবহার করেন গোল্ডম্যান স্যাশের অর্থনীতিবিদ জিম ও’নেইল। ২০০৯ সালে রাশিয়ায় নিজেদের প্রথম সম্মেলন করে দেশগুলো। ২০১০ সালে এতে যোগ দেয় দক্ষিণ আফ্রিকাও। তখন থেকে এই জোট ব্রিকস (বিআরআইসিএস) নামে পরিচিত হয়।
ব্রিকসের সদস্য হতে ইরান-আর্জেন্টিনার আবেদনের কথা উল্লেখ করে রাশিয়া বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা দেশগুলো মস্কোকে একঘরে করতে যে ব্যর্থ হয়েছে, এটি তারই প্রমাণ। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, হোয়াইট হাউজ যখন বিশ্বে আর কী বন্ধ, নিষিদ্ধ বা লুট করতে হবে ভাবছিল, তখন ব্রিকসে যোগদানের আবেদন করছিল আর্জেন্টিনা ও ইরান।
এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে আর্জেন্টাইন কর্মকর্তাদের মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে দেশটির প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজ ব্রিকসের সদস্য হতে একাধিকবার নিজেদের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন।
ব্রিকস দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় অর্থনীতি চীনের। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের হিসাবে, জোটের ২৭ লাখ ৫০ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের অর্থনীতির ৭০ শতাংশের বেশিই চীনের দখলে। ভারতের ক্ষেত্রে এর হার ১৩ শতাংশ এবং রাশিয়া-ব্রাজিল উভয়ের সাত শতাংশ করে।
বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশের বেশি মানুষ ব্রিকস দেশগুলোতে বসবাস করে এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এ জোটের অংশ শতকরা ২৬ ভাগ।
মধ্যপ্রাচ্যে তেলের মোট রিজার্ভের প্রায় এক-চতুর্থাংশ রয়েছে ইরানের কাছে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্যাস রিজার্ভও তাদের। ১৯৭৯ সালের ইরানি বিপ্লবে মার্কিন সমর্থনপুষ্ট শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে পশ্চিমাদের চক্ষুশূল হয় ইরান। দেশটির অর্থনীতি পঙ্গু করে দিতে আরোপ করা হয় অসংখ্য নিষেধাজ্ঞা।