ঢাকা ১১:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মণিপুরে পুলিশের গুলিতে ১১ কুকি নিহত

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:২৬:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪
  • ২২ বার

নতুন করে অশান্ত হয়ে উঠেছে ভারতের মণিপুর রাজ্য। সোমবার সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) গুলিতে ১১ কুকি নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় রাত থেকেই কারফিউ জারি করা হয়েছে রাজ্যের জিরিবাম জেলায়।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, আসামের সীমান্তবর্তী এই জেলাতে সোমবার দুপুরে কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআরপিএফের শিবিরে হামলা চালান এক দল ব্যক্তি। সিআরপিএফ পাল্টা গুলি চালালে হামলাকারীদের ১১ জন নিহত হন। নিহতরা সকলেই কুকি সম্প্রদায়ের যোদ্ধা। তাদের ছোড়া গুলিতে সিআরপিএফের এক জওয়ান গুরুতর আহত হয়েছেন।

সোমবার রাতে গুলি চলেছে পশ্চিম ইম্ফলেও। সেখানে কুকিদের গুলিতে জখম হয়েছেন দু’জন। পাশাপাশি, মঙ্গলবার সকালে জিরিবামের একটি বাড়ির ভেতর থেকে দুই প্রৌঢ়ের দগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়েছে।  ১১ জন ‘গ্রাম স্বেচ্ছাসেবক’-নিহতের ঘটনায় একাধিক জায়গায় বন্‌ধ ঘোষণা করেছে কুকি গোষ্ঠীগুলো।

সোমবার মণিপুর পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, নিহত ১১ জনই কুকি জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্য। সোমবার দুপুরে তারা প্রথমে বড়বেকরা মহকুমা সদর থানায় হামলা চালান। এর পর একাধিক বাড়িঘর ও দোকানে লুটপাট চালানো হয়। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় কয়েকটি বাড়ি। এর পর জাকুরাডোর করংয়ের রাস্তায় সিআরপিএফের উপর হামলা চালায় জঙ্গিদের ওই দল। দু’পক্ষে গুলির লড়াই শুরু হয়। তাতেই নিহত হয় ওই ১১ জঙ্গি। ঘটনার পর এলাকা ঘিরে শুরু হয়েছে তল্লাশি অভিযান।

শনিবার রাতে এই জিরিবাম জেলারই জাইরাওন গ্রামে মেইতেই সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাম্বাই টেঙ্গল এবং ইউএনএলএফের যৌথ হামলায় এক কুকি নারীর মৃত্যু হয়েছিল। রোববার কুকি-জোদের যৌথ মঞ্চ আইটিএলএফের মদতপুষ্ট যোদ্ধারা মেইতেই গোষ্ঠীর এক নারীকে খুন করে বলে অভিযোগ ওঠে। তার পরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পূর্ব ইম্ফল জেলার থামনাপোকপি, সাবুংখোক এবং সানসাবি-সহ বিভিন্ন এলাকা। একাধিক জায়গায় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চলে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও পুলিশের উপর। সোমবারও বিভিন্ন এলাকা থেকে দফায় দফায় সংঘর্ষের খবর এসেছে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি মণিপুরে মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের পরিস্থিতি নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। গত সেপ্টেম্বর মাস থেকেই দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছে মণিপুরের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে। বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে প্রচুর গোলাবারুদ ও আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ ও আধাসেনার যৌথ দল। এর মাঝে গত মাসের শুরুতেই মণিপুরে আরও ছয় মাসের জন্য বর্ধিত হয়েছে ‘সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন’ (‘আর্মড ফোর্সেস স্পেশ্যাল পাওয়ার অ্যাক্ট’ বা আফস্পা)-এর মেয়াদ। ইম্ফল, বিষ্ণুপুর, জিরিবাম এবং লামফেল-সহ ১৯টি থানা এলাকা ছাড়া গোটা রাজ্যেই এই আইনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মণিপুরে পুলিশের গুলিতে ১১ কুকি নিহত

আপডেট টাইম : ০৬:২৬:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪

নতুন করে অশান্ত হয়ে উঠেছে ভারতের মণিপুর রাজ্য। সোমবার সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) গুলিতে ১১ কুকি নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় রাত থেকেই কারফিউ জারি করা হয়েছে রাজ্যের জিরিবাম জেলায়।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, আসামের সীমান্তবর্তী এই জেলাতে সোমবার দুপুরে কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআরপিএফের শিবিরে হামলা চালান এক দল ব্যক্তি। সিআরপিএফ পাল্টা গুলি চালালে হামলাকারীদের ১১ জন নিহত হন। নিহতরা সকলেই কুকি সম্প্রদায়ের যোদ্ধা। তাদের ছোড়া গুলিতে সিআরপিএফের এক জওয়ান গুরুতর আহত হয়েছেন।

সোমবার রাতে গুলি চলেছে পশ্চিম ইম্ফলেও। সেখানে কুকিদের গুলিতে জখম হয়েছেন দু’জন। পাশাপাশি, মঙ্গলবার সকালে জিরিবামের একটি বাড়ির ভেতর থেকে দুই প্রৌঢ়ের দগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়েছে।  ১১ জন ‘গ্রাম স্বেচ্ছাসেবক’-নিহতের ঘটনায় একাধিক জায়গায় বন্‌ধ ঘোষণা করেছে কুকি গোষ্ঠীগুলো।

সোমবার মণিপুর পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, নিহত ১১ জনই কুকি জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্য। সোমবার দুপুরে তারা প্রথমে বড়বেকরা মহকুমা সদর থানায় হামলা চালান। এর পর একাধিক বাড়িঘর ও দোকানে লুটপাট চালানো হয়। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় কয়েকটি বাড়ি। এর পর জাকুরাডোর করংয়ের রাস্তায় সিআরপিএফের উপর হামলা চালায় জঙ্গিদের ওই দল। দু’পক্ষে গুলির লড়াই শুরু হয়। তাতেই নিহত হয় ওই ১১ জঙ্গি। ঘটনার পর এলাকা ঘিরে শুরু হয়েছে তল্লাশি অভিযান।

শনিবার রাতে এই জিরিবাম জেলারই জাইরাওন গ্রামে মেইতেই সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাম্বাই টেঙ্গল এবং ইউএনএলএফের যৌথ হামলায় এক কুকি নারীর মৃত্যু হয়েছিল। রোববার কুকি-জোদের যৌথ মঞ্চ আইটিএলএফের মদতপুষ্ট যোদ্ধারা মেইতেই গোষ্ঠীর এক নারীকে খুন করে বলে অভিযোগ ওঠে। তার পরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পূর্ব ইম্ফল জেলার থামনাপোকপি, সাবুংখোক এবং সানসাবি-সহ বিভিন্ন এলাকা। একাধিক জায়গায় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চলে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও পুলিশের উপর। সোমবারও বিভিন্ন এলাকা থেকে দফায় দফায় সংঘর্ষের খবর এসেছে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি মণিপুরে মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের পরিস্থিতি নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। গত সেপ্টেম্বর মাস থেকেই দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছে মণিপুরের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে। বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে প্রচুর গোলাবারুদ ও আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ ও আধাসেনার যৌথ দল। এর মাঝে গত মাসের শুরুতেই মণিপুরে আরও ছয় মাসের জন্য বর্ধিত হয়েছে ‘সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন’ (‘আর্মড ফোর্সেস স্পেশ্যাল পাওয়ার অ্যাক্ট’ বা আফস্পা)-এর মেয়াদ। ইম্ফল, বিষ্ণুপুর, জিরিবাম এবং লামফেল-সহ ১৯টি থানা এলাকা ছাড়া গোটা রাজ্যেই এই আইনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে।