হাওর বার্তা ডেস্কঃ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে কিশোরগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট। এ ছাড়া পানি উঠেছে বসতবাড়ি, বাজারঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায়। এরই মধ্যে অনেক এলাকার মানুষ তাদের পালিত গবাদিপশুসহ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে অবস্থান নিয়েছেন।
গত শনিবার (১৮ জুন) রাত থেকে করিমগঞ্জ ও ইটনা উপজেলার ১৫টি গ্রামে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে জেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।
এমনিতেই বন্যায় বিপর্যস্ত এখানকার মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই, তার ওপর হাওরে ছড়িয়ে পড়েছে ডাকাতআতঙ্ক। মসজিদে মসজিদে মাইকিং করে সতর্ক করা হচ্ছে গ্রামবাসীকে। তবে মসজিদে মাইকিং আর স্থানীয়দের প্রস্তুতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় ডাকাত দল।
গত মঙ্গলবার দিনগত রাত দেড়টার দিকে কিশোরগঞ্জের ইটনা, মিঠামইন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এলাকার মসজিদের মুয়াজ্জিনদের মাধ্যমে মাইকিং করে সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে গ্রামবাসীদের।
ইটনা উপজেলার ছিলনী গ্রামের মেহেদী হাসান, হাসিব রহমান, মো. নবেলসহ বেশ কয়েকজন এব তথ্য জানিয়েছেন। মেহেদী হাসান বলেন, বন্যার কারণে বাড়ির চারদিকে পানি। দুর্ভোগের শেষ নেই। মানুষ যে কতটা কষ্টে আছে সেটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। এরই মধ্যে আবার নতুন আতঙ্ক ডাকাত। এ যেন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা। আমরা লাইট আর লাঠি হাতে নিয়ে গ্রাম পাহারা দিচ্ছি।
মো. নবেল নামে একজন বলেন, রাত দেড়টার দিকে পাশের গ্রাম শান্তিপুরের মসজিদের মাইকে ঘোষণা হয় এলাকায় ডাকাত প্রবেশ করেছে। সবাই সজাগ হোন, আপনারা সবাই নিজ নিজ বাড়ির সামনে লাইট এবং লাঠি নিয়ে প্রস্তুতি নিন। সেখানকার মসজিদে এ ঘোষণা শুনেই ডাকাত দল চলে আসে আমাদের গ্রামে। পরে আমরাও সবাই প্রস্তুতি নিই। এ সময় আমাদের মসজিদের মুয়াজ্জিন সাহেবও মাইকে ঘোষণা দেন। মসজিদের মাইকে ঘোষণা শুনে আর আমাদের প্রস্তুতি টের পেয়ে ডাকাত দল দ্রুত এলাকা ছাড়ে।
মিঠামইন উপজেলার ঢাকী ইউনিয়নের মামুদপুর গ্রামের বাসিন্দা জিতু চৌধুরী জানান, চারদিকে ডাকাত আতঙ্কে তাদের ঘুম নেই। এ ইউনিয়নের চকেশ্বর, গোবিন্দপুর, কোলাহানি, বালিবন, আতপাশা, মামদপুর প্রত্যেকটি গ্রামে মসজিদে মসজিদে মাইকিং হচ্ছে। মাইকিং শুনে ঘর থেকে বের হয়ে দেখি হাওরের মাঝখানে দুটি নৌকা ঘুরতেছে। তখন আমরাও তাদের দিকে লাইট ধরি। পরে আমরা সবাই সজাগ আছি বুঝতে পেরে ডাকাত দল চলে গেছে ভিন্ন দিকে।
অষ্টগ্রাম সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সামুয়েল সাংমা জানান, এ বিষয়ে গ্রাম পুলিশ ও কমিউনিটি পুলিশের সদস্যদের একটিভ করা হবে। তারা যেন সজাগ থাকে এবং বিভিন্ন সময়ে গ্রামবাসীকে সতর্ক করে করে দেন। প্রয়োজনে প্রতিটি গ্রামে একটি করে টিম গঠন করা হবে। গ্রাম পুলিশ ও কমিউনিটি পুলিশের পাশাপাশি থানা পুলিশেরও টহল থাকবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।