রফিকুল ইসলামঃ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও প্রবল বর্ষণে হাওর অধ্যুষিত কিশোরগঞ্জের ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলায় বন্যার পানি বেড়ে যাওয়ায় অধিকাংশ বসতবাড়ি প্লাবিত হয়ে গেছে। তাছাড়া বন্যার পানি ভয়াল রূপ ধারণ করায় অনেকের বসতভিটা তলিয়ে গিয়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে।
প্রতিদিন বাড়ছে বন্যার পানি। আফাল বা ঝড়-তুফানে বাড়ছে আশ্রয়হীন এবং দুর্গত মানুষের অভাবী মুখ ও হাহাকারের সংখ্যা।
এ সমস্ত বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠায় কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনের এমপি প্রকৌশলী রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক ত্রাণ সহায়তা নিয়ে বানভাসিদের সাথে রয়েছেন।
বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বার বিশেষ করে মিঠামইন সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শরীফ কামাল উত্তাল হাওরের বন্যার পানি মাড়িয়ে দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং আশ্রয়হীনদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন।
এদিকে ইটনা, মিঠামইন উপজেলার বন্যার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় গোপদিঘী ইউনিয়নের ধলাই-বগাদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কাম আশ্রয় কেন্দ্রটিও প্রতিরক্ষা দেয়াল বেয়ে বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। ফলে শ্রেণি পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।
গোপদিঘী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন তা পরিদর্শন করে বন্যায় আশ্রয় নেওয়া পরিবারদের সমবেদনা প্রকাশ ও দেখভালে আশ্বস্ত করেন।
ধলাই-বগাদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দীন আহাম্মদ বলেন, শিক্ষার্থীদের জীবনের নিরাপত্তার কথা ভেবে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত শ্রেণি পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।
তিনি জানান, হাওরের গ্রামগুলো খুবই বিচ্ছিন্ন। অনেক দূরের গাঁও থেকে ট্রলারে করে শিক্ষার্থীরা জান বাজি রেখে আসতে হয়। হাওরের গভীর জলরাশির রুদ্র মূর্তি ধারণ করতে সময় লাগে না। এখন নিরাগ, তখনই আফাল।
তিনি আরও জনান, গত ১৮ জুন শ্যামপুর গ্রামের ছাত্রছাত্রীদের বহনে বোঝাই করা ইঞ্জিনচালিত ট্রলারটি প্রচণ্ড ঢেউয়ের কবলে পড়ে ইঞ্জিনের পাখা ভেঙে গেলে সলিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
শনিবার (১৮ জুন) জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ শামীম আলম হাওরে বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এ সময় উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় করেন তিনি।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের জন্য ১২০টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।