ঢাকা ১২:৪৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হবিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:৫৫:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জুন ২০২২
  • ১৩৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ হবিগঞ্জের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। জেলার ৪ উপজেলায় ৩৪টি ইউনিয়নের প্রায় ১ হাজার গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে। বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। খোয়াই নদীর পানি সীমান্ত সংলগ্ন বাল্লা পয়েন্টে  বিপদসীমার ১৪৭ সেন্টিমিটার ও হবিগঞ্জ সদরে মাছুলিয়া পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। যেকোনো সময় শহর রক্ষা বাধ ভেঙ্গে যেতে পারে এ আশংকায় শহরবাসীকে সর্তক থাকার জন্য মাইকিং করছে জেলা প্রশাসন।

এদিকে কুশিয়ারা নদীর পানিও বেড়ে যাওযায় নবীগঞ্জ ও আজমিরিগঞ্জ উপজেলায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। নবীগঞ্জ উপজেলার ৯টি, লাখাই উপজেলায় ৪টি, বানিয়াচঙ্গ উপজেলায় ১৫টি ইউনিয়ন এবং  আজমিরিগঞ্জ পৌর এলাকাসহ ৫টি ইউনিয়ন এখন বন্যার কবলে। এদিকে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার লুকড়া নামকস্থানে খোয়াই নদীর বাধ ভেঙ্গে পানি হবিগঞ্জ ও লাখাই উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত করছে।

সোমবার লাখাই উপজেলার বিভিন্নস্থান ঘুরে দেখা গেছে, বাড়িঘরে বন্যার পানি প্রবেশ করায় লোকজন তাদের জানমাল নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রের দিকে ছুটছেন। লাখাই স্বজন গ্রামের নৌকার মাঝি লুৎফুর মিয়া বলেন, গত ১ সপ্তাহ ধরে লাখাই ইউনিয়নের বেশ কটি গ্রাম পানিতে নিমজ্জিত। অনেকের কাঁচাঘর বাড়ি পানিতে ভেসে গেছে। অনেকেই খোরাকির ধান পানির দরে বিক্রি করে দিচ্ছেন। বাজারে যেখানে ৯শ থেকে ১ হাজার টাকা দরে ধান বিক্রি হচ্ছে, সেখানে বন্যা কবলিত এলাকার কৃষকরা ৬/৭শ টাকা দরে গোলার ধান বিক্রি করে দিচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, ২০০৪ সালের বন্যার পর এতো পানি দেখিনি।

সরকারি হিসেব অনুযায়ী এ পর্যন্ত ওই ৪ উপজেলার  ১৫ হাজার ২শ পরিবারের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন । তবে বেসরকারি হিসেবে এর সংখ্যা দ্বিগুণ। সূত্র জানায়, নবীগঞ্জে ২ হাজার ২০০ জন, আজমিরিগঞ্জ ২ হাজার ৪০০ জন, লাখাই ৩৮০ জন ও বানিয়াচঙ্গে ৩ হাজার ৮০৪ জন  আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন।

জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান জানান, খোয়াই নদীর শহর রক্ষা বাধ নিরাপত্তার জন্য  পাহারাদার নিযুক্ত করা হয়েছে। তিনি জানান, জেলার ১১৮টি আশ্রয় কেন্দ্র খোরা হয়েছে। বন্যার্তদের জন্য এ পর্যন্ত ৩৫ টন চাল, নগদ ৫ লাখ টাকা, ২ হাজার শুকনো খাবার প্যাকেট পাঠানো হয়েছে। এদিকে আশ্রয় কেন্দ্রে টয়লেট অপ্রতুল থাকায় আশ্রিত লোকজনকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

হবিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি

আপডেট টাইম : ০৮:৫৫:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জুন ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ হবিগঞ্জের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। জেলার ৪ উপজেলায় ৩৪টি ইউনিয়নের প্রায় ১ হাজার গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে। বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। খোয়াই নদীর পানি সীমান্ত সংলগ্ন বাল্লা পয়েন্টে  বিপদসীমার ১৪৭ সেন্টিমিটার ও হবিগঞ্জ সদরে মাছুলিয়া পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। যেকোনো সময় শহর রক্ষা বাধ ভেঙ্গে যেতে পারে এ আশংকায় শহরবাসীকে সর্তক থাকার জন্য মাইকিং করছে জেলা প্রশাসন।

এদিকে কুশিয়ারা নদীর পানিও বেড়ে যাওযায় নবীগঞ্জ ও আজমিরিগঞ্জ উপজেলায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। নবীগঞ্জ উপজেলার ৯টি, লাখাই উপজেলায় ৪টি, বানিয়াচঙ্গ উপজেলায় ১৫টি ইউনিয়ন এবং  আজমিরিগঞ্জ পৌর এলাকাসহ ৫টি ইউনিয়ন এখন বন্যার কবলে। এদিকে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার লুকড়া নামকস্থানে খোয়াই নদীর বাধ ভেঙ্গে পানি হবিগঞ্জ ও লাখাই উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত করছে।

সোমবার লাখাই উপজেলার বিভিন্নস্থান ঘুরে দেখা গেছে, বাড়িঘরে বন্যার পানি প্রবেশ করায় লোকজন তাদের জানমাল নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রের দিকে ছুটছেন। লাখাই স্বজন গ্রামের নৌকার মাঝি লুৎফুর মিয়া বলেন, গত ১ সপ্তাহ ধরে লাখাই ইউনিয়নের বেশ কটি গ্রাম পানিতে নিমজ্জিত। অনেকের কাঁচাঘর বাড়ি পানিতে ভেসে গেছে। অনেকেই খোরাকির ধান পানির দরে বিক্রি করে দিচ্ছেন। বাজারে যেখানে ৯শ থেকে ১ হাজার টাকা দরে ধান বিক্রি হচ্ছে, সেখানে বন্যা কবলিত এলাকার কৃষকরা ৬/৭শ টাকা দরে গোলার ধান বিক্রি করে দিচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, ২০০৪ সালের বন্যার পর এতো পানি দেখিনি।

সরকারি হিসেব অনুযায়ী এ পর্যন্ত ওই ৪ উপজেলার  ১৫ হাজার ২শ পরিবারের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন । তবে বেসরকারি হিসেবে এর সংখ্যা দ্বিগুণ। সূত্র জানায়, নবীগঞ্জে ২ হাজার ২০০ জন, আজমিরিগঞ্জ ২ হাজার ৪০০ জন, লাখাই ৩৮০ জন ও বানিয়াচঙ্গে ৩ হাজার ৮০৪ জন  আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন।

জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান জানান, খোয়াই নদীর শহর রক্ষা বাধ নিরাপত্তার জন্য  পাহারাদার নিযুক্ত করা হয়েছে। তিনি জানান, জেলার ১১৮টি আশ্রয় কেন্দ্র খোরা হয়েছে। বন্যার্তদের জন্য এ পর্যন্ত ৩৫ টন চাল, নগদ ৫ লাখ টাকা, ২ হাজার শুকনো খাবার প্যাকেট পাঠানো হয়েছে। এদিকে আশ্রয় কেন্দ্রে টয়লেট অপ্রতুল থাকায় আশ্রিত লোকজনকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।