ঢাকা ০২:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুনামগঞ্জে এক কেজি মুড়ি ১৫০ টাকা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:২৯:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জুন ২০২২
  • ১০০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সুনামগঞ্জ শহরের মূল সড়ক থেকে কিছুটা পানি কমতে শুরু করেছে। কিন্তু পানি কমছে না ডুবে যাওয়া সরকারি, বেসরকারি অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ পাড়া মহল্লাগুলো থেকে। এখনো প্লাবিত রয়েছে সুনামগঞ্জ সদরসহ ১২ উপজেলা। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, ছাতক ও দোয়ারা বাজার উপজেলার। পানিবন্দি রয়েছেন ৫ লাখেরও বেশি মানুষ।

এদিকে গত ৪ দিন যাবৎ অন্ধাকারে বিদ্যুৎবিহীন জীবন কাটাচ্ছে সুনামগঞ্জবাসী। নেই মোবাইল নেটওয়ার্ক ও গ্যাস সংযোগ। দেখা দিয়েছে খাদ্য ও নিরাপদ পানি সংকট। আর এ পরিস্থিতিত বন্যার সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। মোমবাতি, মেচ, শুকনা খাবার দ্বিগুণ দামে বিক্রি করছে। এক প্যাকেট মোমবাতি ১০০ টাকা, ১ কেজি মুড়ি ১৫০ টাকা, ১ কেজি চিড়া ১০০ টাকা, ২০টি কলা ২০০ টাকা। ৫ টাকার কেক ১০ টাকা ও ৩০ টাকার পানি ৬০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে ভাসছে সুনামগঞ্জের মানুষের স্বপ্ন। কারো সাজানো সংসার, কারো বা শখের জিনিস ভেসে গেছে বানের জলে। শুধু তাই নয়, একমাসে দু’বার বন্যার কবলে পড়ে দিশেহারা জেলার মানুষ।

জেলায় বন্যা কবলিত প্রায় লক্ষাধিক মানুষ ৪৫০টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যা মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ কাজ করছে। ইতোমধ্যে ৪৫০ মেট্রিক টন চাল ও ৫ হাজার বস্তা শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন ৪০ হাজার মানুষকে রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে।

পানিবন্দি মানুষ জানান, বানের জলে সব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। তবে শহরের সড়ক থেকে কিছুটা পানি কমায় স্বস্তি পাচ্ছি। বন্যা কবলিত হয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছি।

পানিবন্দি রাসেল মিয়া বলেন, এমন বন্যা আমার ৭৫ বছর বয়সেও দেখিনি। এতটা ভয়াবহ দুর্যোগ। আমার ঘরের চালের ওপর দিয়ে পানি গেছে। কোনো রকম জানটা নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছি।

 

পানিবন্দি ইকবাল হোসেন  জানান, ছেলে মেয়ে নিয়ে ঘরের ভেতর কোনো রকম বেঁচে আছি। এখনও কোনো সহায়তা পাইনি। না খেয়ে দিন পার করছি। ছেলে মেয়ের মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না।

পানিবন্দি আলিম উদ্দিন  বলেন, চারদিন ধরে বিদ্যুৎ নেই। ঘরে খাবার নেই। বাজারে গিয়েছিলাম মোমবাতি আর শুকনো খাবারের জন্য। কিন্তু এক প্যাকেট মোমবাতির দাম ১০০ টাকা। শুকনো খাবারের দামও দ্বিগুণ। প্রশাসন এদিকে নজর দিচ্ছে না।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি চরম পর্যায়ে রয়েছে। বন্যা কবলিতদের সহায়তায় সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি। আশা করি বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

সুনামগঞ্জে এক কেজি মুড়ি ১৫০ টাকা

আপডেট টাইম : ১২:২৯:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জুন ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সুনামগঞ্জ শহরের মূল সড়ক থেকে কিছুটা পানি কমতে শুরু করেছে। কিন্তু পানি কমছে না ডুবে যাওয়া সরকারি, বেসরকারি অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ পাড়া মহল্লাগুলো থেকে। এখনো প্লাবিত রয়েছে সুনামগঞ্জ সদরসহ ১২ উপজেলা। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, ছাতক ও দোয়ারা বাজার উপজেলার। পানিবন্দি রয়েছেন ৫ লাখেরও বেশি মানুষ।

এদিকে গত ৪ দিন যাবৎ অন্ধাকারে বিদ্যুৎবিহীন জীবন কাটাচ্ছে সুনামগঞ্জবাসী। নেই মোবাইল নেটওয়ার্ক ও গ্যাস সংযোগ। দেখা দিয়েছে খাদ্য ও নিরাপদ পানি সংকট। আর এ পরিস্থিতিত বন্যার সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। মোমবাতি, মেচ, শুকনা খাবার দ্বিগুণ দামে বিক্রি করছে। এক প্যাকেট মোমবাতি ১০০ টাকা, ১ কেজি মুড়ি ১৫০ টাকা, ১ কেজি চিড়া ১০০ টাকা, ২০টি কলা ২০০ টাকা। ৫ টাকার কেক ১০ টাকা ও ৩০ টাকার পানি ৬০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে ভাসছে সুনামগঞ্জের মানুষের স্বপ্ন। কারো সাজানো সংসার, কারো বা শখের জিনিস ভেসে গেছে বানের জলে। শুধু তাই নয়, একমাসে দু’বার বন্যার কবলে পড়ে দিশেহারা জেলার মানুষ।

জেলায় বন্যা কবলিত প্রায় লক্ষাধিক মানুষ ৪৫০টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যা মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ কাজ করছে। ইতোমধ্যে ৪৫০ মেট্রিক টন চাল ও ৫ হাজার বস্তা শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন ৪০ হাজার মানুষকে রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে।

পানিবন্দি মানুষ জানান, বানের জলে সব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। তবে শহরের সড়ক থেকে কিছুটা পানি কমায় স্বস্তি পাচ্ছি। বন্যা কবলিত হয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছি।

পানিবন্দি রাসেল মিয়া বলেন, এমন বন্যা আমার ৭৫ বছর বয়সেও দেখিনি। এতটা ভয়াবহ দুর্যোগ। আমার ঘরের চালের ওপর দিয়ে পানি গেছে। কোনো রকম জানটা নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছি।

 

পানিবন্দি ইকবাল হোসেন  জানান, ছেলে মেয়ে নিয়ে ঘরের ভেতর কোনো রকম বেঁচে আছি। এখনও কোনো সহায়তা পাইনি। না খেয়ে দিন পার করছি। ছেলে মেয়ের মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না।

পানিবন্দি আলিম উদ্দিন  বলেন, চারদিন ধরে বিদ্যুৎ নেই। ঘরে খাবার নেই। বাজারে গিয়েছিলাম মোমবাতি আর শুকনো খাবারের জন্য। কিন্তু এক প্যাকেট মোমবাতির দাম ১০০ টাকা। শুকনো খাবারের দামও দ্বিগুণ। প্রশাসন এদিকে নজর দিচ্ছে না।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি চরম পর্যায়ে রয়েছে। বন্যা কবলিতদের সহায়তায় সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি। আশা করি বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হবে।