হাওর বার্তা ডেস্কঃ নওগাঁর ধামইরহাটে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে সফল হয়েছেন আনোয়ার মোল্লা। শখের বসে তরমুজ চাষ করে তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। কম পরিশ্রম ও ভালো দাম পেয়ে খুশি তিনি। তার তরমুজের ক্ষেত দেখতে এবং পরামর্শ নিতে আসছেন আশপাশের চাষিরা। তবে তরমুজ চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতা দরকার বলে মনে করছেন চাষিরা।
ওপরে সবুজ পাতা আর মাচার নিচে ঝুঁলে আছে কালো ও হলুদ রঙের তরমুজ। গাছ থেকে ছিড়ে না পড়তে প্রতিটি তরমুজে দেওয়া আছে জালি। এমন দৃশ্য জেলার সীমান্তবর্তী ধামইরহাট উপজেলার কালুপাড়া গ্রামের মাঠে। এ জমিতে আগে বোরো ধান, আলু ও পটলের আবাদ করা হতো। কিন্তু এ বছর কৃষক আনোয়ার মোল্লা কৃষি অফিসের পরামর্শে মালচিং পদ্ধতিতে ২৫ শতাংশ জমিতে ব্ল্যাকবেরি জাতের তরমুজ চাষ করেছেন।
এ বছর শখের বসে তরমুজ চাষ করে আর্থিকভাবেও লাভবান হচ্ছেন। মোট ৫০ শতাংশ জমিতে চাষাবাদ, বীজ ও মাচা তৈরিতে খরচ পড়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। আড়াই মাসের এ আবাদে খরচ বাদে প্রায় ২ লাখ টাকা লাভ থাকবে বলে জানান আনোয়ার মোল্লা। তার দেখাদেখি এখন অনেকেই তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়েছেন।
চাষি আনোয়ার মোল্লার ছেলে আফজাল হোসেন বলেন, ‘জমিতে চাষ দিয়ে পরিমাণমতো সার ও জৈব সার প্রয়োগ করা হয়। এরপর নির্দিষ্ট দূরত্বে আলুর গই (সুলি) করে মালচিং পেপার দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। এরপর চারা রোপণ করা হয়। ২-৩ দিন পর জমিতে সেচ দেওয়া হয়। গাছ বড় হওয়ার সাথে সাথে প্রতিটি গাছে খুঁটি এবং ১৫-২০ দিন পর মাচা তৈরি করে দেওয়া হয়। পোকামাকড়ের আক্রমণ খুবই কম।’
তিনি বলেন, ‘এ আবাদ লাভজনক। পরিশ্রম করলে আরও ফলন পাওয়া যাবে। বছরে তিন বার এ জাতের তরমুজ চাষ করা যাবে। প্রথমবার শুধু মাচা তৈরিতে খরচ বেশি হবে। অগ্রহায়ণ, পৌষ ও মাঘ মাস চাষাবাদ হবে না। কিছুদিনের মধ্যে আবারও চারা রোপণ করা হবে। বছরে তিনবার যে পরিমাণ লাভ করা যায়, যা অন্য ফসলে সম্ভব নয়। তাই অনেকেই আমার কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন।’
চাষি নুরুল ইসলাম, আবু হোসেন ও সাইফুদ্দিন মন্ডল বলেন, ‘আমাদের এলাকায় তরমুজ চাষ হয় না। এবারই উপজেলায় এ জাতের তরমুজ চাষ করা হয়েছে। কম সময়ে এবং কম পরিশ্রমে এ আবাদ করেছে। ভালো ফলন হয়েছে এবং বাজারে দামও ভালো পাচ্ছে। আগামীতে যদি কৃষি অফিস থেকে সহযোগিতা করা হয়, আমরাও তাহলে চাষ করবো।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌফিক আল জুবায়ের বলেন, ‘রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় আনোয়ার মোল্লাকে ২৫ শতাংশ জমিতে ব্ল্যাকবেরি তরমুজ চাষে সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে। তার সফলতা দেখে অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করছেন। চাষিরা যেন তার মাধ্যমে তরমুজ চাষে সফলতা দেখতে পান। বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষি অফিস থেকে তাদের সহযোগিতা করা হবে।’