ঢাকা ১২:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেবে গেল সাড়ে তিন কোটি টাকার সেতু

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:০৩:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জুন ২০২২
  • ২২৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ টাঙ্গাইলে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুর মাঝখানটায় দেবে গেছে। বৃহস্পতিবার রাতে টাঙ্গাইল-বেড়াডোমা-ওমরপুর সড়কের বেড়ডোমা এলাকার লৌহজং নদীর উপর নির্মিত সেতুটির সেন্টারিং সাটারিং (গাছের গুড়ি ও পাইল) তীব্র পানির স্রোতে সরে গিয়ে দেবে যায়।

নির্মাণ শেষ হওয়ার আগেই সেতুটি দেবে যাওয়ায় এই সড়ক ব্যবহারকারীদের আরও দুর্ভোগ বাড়ল বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতু নির্মাণ শেষ করার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটি করা হবে বলে জানিয়েছে পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ার।

পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের আওতায় টাঙ্গাইল পৌরসভা সেতুটির বাস্তবায়ন করছে। আট মিটার প্রশস্ত ও ৩০ মিটার দীর্ঘ সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে তিন কোটি ৬০ লাখ ১৮ হাজার টাকা। ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর থেকে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করে ব্রিক্সস অ্যান্ড ব্রিজ লিমিটেড অ্যান্ড দি নির্মিতি নামের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে কাজটি বাস্তবায়ন শুরু করে।

গত ১১ মে কাজটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ৫৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। গত সপ্তাহে সেতুটির উপরে অংশে ঢালাই করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে সেতুটির সেন্টারিং সাটারিং সরে গিয়ে মাঝখানে সাড়ে তিন ফুট দেবে যায়। ফলে নির্মাণকৃত সেতুটি কোনো কাজেই আসছে না ব্যবহারীকারীদের। এতে এক দিকে সরকারের সাড়ে তিন কোটি টাকা অপচয় হলো অন্যদিকে পশ্চিম টাঙ্গাইলের পশ্চিমাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়ে গেলোও কয়েক গুণ।

সরেজমিনে দেখা যায়, লৌহজং নদীর মাঝখান থেকে গাছ ও বাঁশের পাইল সরে গিয়েছে। সেতুটি মাঝখানে দেবে যাওয়ায় স্থানীয় লোকজন ভিড় করেছে। কয়েক জন শ্রমিক সেতু নির্মাণে কাজ করে যাচ্ছে। দেবে যাওয়া স্থান পৌরসভা ইঞ্জিনিয়ার ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেছেন।

বেড়াডোমা এলাকার বাসিন্দার হাফিজুর রহমান বলেন, ইতোপূর্বে এখানে যে বেইলি সেতু ছিল সেটিও দুবার ভেঙে আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে কয়েক বছর। এ সেতু নির্মাণের কারণেও দুর্ভোগ অব্যাহত আছে। অপরদিকে সেতু না থাকার কারণে এলাকায় কেউ বাসা ভাড়া নিতে চায় না। এছাড়া জমির দামও অনেক কমে গিয়েছে।

পথচারী আজাদ মিয়া বলেন, পার্ক বাজার থেকে বাজার করে নিজেই বহন করে আনতে হয়। কোনো রিকশা আসে না। দুই বছরের অধিক সময় ধরে আমাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

কাশেম মিয়া নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, সেতু না থাকায় পাশ্ববর্তী অস্থায়ী সেতুতে মাঝে-মধ্যেই যানজটের সৃষ্টি হয়। ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটে।

টাঙ্গাইল পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল কালাম আজাদ বলেন, দুর্ভোগ লাঘবে কাজটি শেষ করার জন্য বার বার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। সেতুটি দেবে যাওয়ায় লাখ লাখ মানুষের কয়েক বছরের জন্য দুর্ভোগ বেড়ে গেল।

টাঙ্গাইল পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শিব্বির আহমেদ আজমী বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রকল্প পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবগত করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি করে মূল রহস্য উদঘাটন করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

দেবে গেল সাড়ে তিন কোটি টাকার সেতু

আপডেট টাইম : ০৬:০৩:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জুন ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ টাঙ্গাইলে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুর মাঝখানটায় দেবে গেছে। বৃহস্পতিবার রাতে টাঙ্গাইল-বেড়াডোমা-ওমরপুর সড়কের বেড়ডোমা এলাকার লৌহজং নদীর উপর নির্মিত সেতুটির সেন্টারিং সাটারিং (গাছের গুড়ি ও পাইল) তীব্র পানির স্রোতে সরে গিয়ে দেবে যায়।

নির্মাণ শেষ হওয়ার আগেই সেতুটি দেবে যাওয়ায় এই সড়ক ব্যবহারকারীদের আরও দুর্ভোগ বাড়ল বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতু নির্মাণ শেষ করার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটি করা হবে বলে জানিয়েছে পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ার।

পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের আওতায় টাঙ্গাইল পৌরসভা সেতুটির বাস্তবায়ন করছে। আট মিটার প্রশস্ত ও ৩০ মিটার দীর্ঘ সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে তিন কোটি ৬০ লাখ ১৮ হাজার টাকা। ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর থেকে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করে ব্রিক্সস অ্যান্ড ব্রিজ লিমিটেড অ্যান্ড দি নির্মিতি নামের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে কাজটি বাস্তবায়ন শুরু করে।

গত ১১ মে কাজটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ৫৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। গত সপ্তাহে সেতুটির উপরে অংশে ঢালাই করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে সেতুটির সেন্টারিং সাটারিং সরে গিয়ে মাঝখানে সাড়ে তিন ফুট দেবে যায়। ফলে নির্মাণকৃত সেতুটি কোনো কাজেই আসছে না ব্যবহারীকারীদের। এতে এক দিকে সরকারের সাড়ে তিন কোটি টাকা অপচয় হলো অন্যদিকে পশ্চিম টাঙ্গাইলের পশ্চিমাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়ে গেলোও কয়েক গুণ।

সরেজমিনে দেখা যায়, লৌহজং নদীর মাঝখান থেকে গাছ ও বাঁশের পাইল সরে গিয়েছে। সেতুটি মাঝখানে দেবে যাওয়ায় স্থানীয় লোকজন ভিড় করেছে। কয়েক জন শ্রমিক সেতু নির্মাণে কাজ করে যাচ্ছে। দেবে যাওয়া স্থান পৌরসভা ইঞ্জিনিয়ার ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেছেন।

বেড়াডোমা এলাকার বাসিন্দার হাফিজুর রহমান বলেন, ইতোপূর্বে এখানে যে বেইলি সেতু ছিল সেটিও দুবার ভেঙে আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে কয়েক বছর। এ সেতু নির্মাণের কারণেও দুর্ভোগ অব্যাহত আছে। অপরদিকে সেতু না থাকার কারণে এলাকায় কেউ বাসা ভাড়া নিতে চায় না। এছাড়া জমির দামও অনেক কমে গিয়েছে।

পথচারী আজাদ মিয়া বলেন, পার্ক বাজার থেকে বাজার করে নিজেই বহন করে আনতে হয়। কোনো রিকশা আসে না। দুই বছরের অধিক সময় ধরে আমাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

কাশেম মিয়া নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, সেতু না থাকায় পাশ্ববর্তী অস্থায়ী সেতুতে মাঝে-মধ্যেই যানজটের সৃষ্টি হয়। ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটে।

টাঙ্গাইল পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল কালাম আজাদ বলেন, দুর্ভোগ লাঘবে কাজটি শেষ করার জন্য বার বার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। সেতুটি দেবে যাওয়ায় লাখ লাখ মানুষের কয়েক বছরের জন্য দুর্ভোগ বেড়ে গেল।

টাঙ্গাইল পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শিব্বির আহমেদ আজমী বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রকল্প পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবগত করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি করে মূল রহস্য উদঘাটন করা হবে।