ঢাকা ০১:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মানসিক চাপ কমাবে যেসব খাবার

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৫৫:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ জুন ২০২২
  • ১১৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মানসিক চাপ বা স্ট্রেস থেকে ভুলে যাওয়া, সহজেই রেগে যাওয়া, নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারানো, মনোযোগ কমে যাওয়া, মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হওয়া, মন খারাপ, উৎসাহ-উদ্দীপনা কমে যাওয়া ইত্যাদি নানা মনোসামাজিক সমস্যা হতে পারে।

আবার নানা শারীরিক সমস্যাও হতে পারে। যেমন: মাথাব্যথা, বুক ধড়ফড় হওয়া, দুর্বল লাগা, যৌনাকাঙ্ক্ষা ও যৌনশক্তি কমে যাওয়া, খিদে কমে যাওয়া বা কখনো খিদে বেড়ে যাওয়া, ঘুম কমে যাওয়া, ঘুম না আসা, রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়া, হৃদপিণ্ডের উপর নেতিবাচক ইত্যাদি।

কিন্তু চাইলেই অনেক ক্ষেত্রে মানসিক চাপ বা স্ট্রেস এড়ানো যায় না। তবে গবেষণা ধারণা দিচ্ছে যে, কিছু পুষ্টি স্ট্রেস হরমোন করটিসোল কমাতে পারে। অর্থাৎ সঠিক খাবার খেলে স্ট্রেস সম্পর্কিত উপসর্গ প্রশমিত হবে। এ প্রতিবেদনে মানসিক চাপ কমাতে সেরা কিছু খাবার তুলে ধরা হলো।

স্যালমন মাছ: বিশেষজ্ঞরা স্ট্রেস কমানোর সেরা খাবারের তালিকায় স্যালমনকে উপরের দিকে রেখেছেন। কানাডার রেজিস্টার্ড ডায়েটিশিয়ান শাহজাদি দেবজি বলেন, ‘স্যালমন মাছের ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিডে বিদ্যমান প্রদাহনাশক শক্তি স্ট্রেস হরমোনের প্রতিক্রিয়া দমাতে পারে।’ এর মানে এটা নয় যে, আজ রাতে স্যালমন খেলে সকালে মেজাজটা ফুরফুরা হয়ে যাবে। বরং লং-টার্ম স্ট্রেস ম্যানেজমেন্টের কথা মাথায় রেখে নিয়মিত স্যালমন খেয়ে যেতে হবে।

ঢেঁড়স: এই সবুজ সবজিতে বি ভিটামিন ফোলেট রয়েছে। এই বি ভিটামিনটি সুখের হরমোন ডোপামিন উৎপাদন করে। স্ট্রেস কমাতে গবেষকরা ফোলেট সমৃদ্ধ খাবার (যেমন- ঢেঁড়স) খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

ওটমিল: জার্নাল অব নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড সায়েন্সেসে প্রকাশিত গবেষণা রিভিউ অনুসারে, প্রতিদিন এক বাটি ওটমিল খেয়ে নিজেকে শিথিল ও প্রশান্ত রাখা যেতে পারে। ডা. শাহজাদি জানান, ‘ওটমিলের মতো কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট সেরোটোনিনের উৎপাদন বাড়ায়। এটা হলো ব্রেইন কেমিক্যাল, যা স্ট্রেস হরমোন কমিয়ে দেয়।’

ডার্ক চকলেট: ডার্ক চকলেট সুলভ নয় বলে অনেকেই ইচ্ছে সত্ত্বেও নিয়মিত খেতে পারেন না। তবে চকলেটটি খেলে পয়সা উসুল হবেই! কারণ এটা বিস্ময়কর উপকার করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ডার্ক চকলেট মানসিক চাপ কমিয়ে মুখে হাসি ফোটাতে পারে। ডা. শাহজাদি বলেন, ‘কোকোয়া সমৃদ্ধ ডার্ক চকলেটের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রক্তনালীকে শিথিল করতে পারে। এর ফলে রক্তচাপ কমে ও রক্ত সংবহন বাড়ে।’

পালংশাক: স্ট্রেসে আচ্ছন্ন হলে আমাদের পেশির অনমনীয়তা বাড়তে থাকে। আমরা স্পষ্টভাবে চিন্তা করতে পারি না।ঘুমাতে সমস্যা হয় ও রক্তচাপ বেড়ে যায়। একটি পুষ্টি এসব উপসর্গ প্রশমিত করতে পারে- তা হলো ম্যাগনেসিয়াম। গবেষণায় দেখা গেছে, মানসিক চাপে ভুগলে ম্যাগনেসিয়ামের মাত্রা কমতে থাকে। তাই মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। পালংশাকের মতো গাঢ় সবুজ পাতাযুক্ত শাকসবজিতে উচ্চ পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম ও অন্যান্য পুষ্টি রয়েছে।

গ্রিন টি: মানসিক চাপ কমাতে গ্রিন টি কার্যকর পানীয়। বায়োলজিক্যাল অ্যান্ড ফার্মাসিটিউক্যাল বুলেটিনে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, লো ক্যাফেইন গ্রিন টি মনকে প্রশান্ত করতে পারে।

কমলা: কেবল কমলা খেলে নয়, এর খোসা ছাড়ালেও মানসিক চাপ কমে! কমলা ও অন্যান্য সাইট্রাস ফলে বি ভিটামিনের প্রাকৃতিক ধরন মায়োইনোসিটল থাকে। আমাদের মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রে উচ্চ মাত্রায় মায়োইনোসিটল আছে। কোষঝিল্লি, পেশি ও স্নায়ুর কার্যক্রম মায়োইনোসিটলের ওপর নির্ভরশীল। মায়োইনোসিটল আবেগ ও মেজাজ তথা মানসিক অবস্থা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তাই শরীরে এর পর্যাপ্ততা বজায় রাখতে নিয়মিত সাইট্রাস ফল খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।

গাজর: যুক্তরাষ্ট্রের রেজিস্টার্ড ডায়েটিশিয়ান মান্ডি এনরাইটের মতে, স্ট্রেস কমানোর অন্যতম সেরা খাবার হলো, গাজরের মতো মচমচে সবজি। মচমচে ফলও খেতে পারেন, যেমন- আপেল। মচমচে শব্দ এক ধরনের স্বস্তি দিয়ে থাকে। এসব খাবার চাবানোর সময় মচমচে শব্দের প্রতি মনোযোগ আসে বলে মানসিক চাপ কমে যায়। মচমচে খাবার খেলে চোয়ালের সংকোচনও কমে। উল্লেখ্য যে, প্রচুর মানসিক চাপে চোয়ালের সংকোচন বেড়ে যায়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

মানসিক চাপ কমাবে যেসব খাবার

আপডেট টাইম : ০৯:৫৫:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ জুন ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মানসিক চাপ বা স্ট্রেস থেকে ভুলে যাওয়া, সহজেই রেগে যাওয়া, নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারানো, মনোযোগ কমে যাওয়া, মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হওয়া, মন খারাপ, উৎসাহ-উদ্দীপনা কমে যাওয়া ইত্যাদি নানা মনোসামাজিক সমস্যা হতে পারে।

আবার নানা শারীরিক সমস্যাও হতে পারে। যেমন: মাথাব্যথা, বুক ধড়ফড় হওয়া, দুর্বল লাগা, যৌনাকাঙ্ক্ষা ও যৌনশক্তি কমে যাওয়া, খিদে কমে যাওয়া বা কখনো খিদে বেড়ে যাওয়া, ঘুম কমে যাওয়া, ঘুম না আসা, রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়া, হৃদপিণ্ডের উপর নেতিবাচক ইত্যাদি।

কিন্তু চাইলেই অনেক ক্ষেত্রে মানসিক চাপ বা স্ট্রেস এড়ানো যায় না। তবে গবেষণা ধারণা দিচ্ছে যে, কিছু পুষ্টি স্ট্রেস হরমোন করটিসোল কমাতে পারে। অর্থাৎ সঠিক খাবার খেলে স্ট্রেস সম্পর্কিত উপসর্গ প্রশমিত হবে। এ প্রতিবেদনে মানসিক চাপ কমাতে সেরা কিছু খাবার তুলে ধরা হলো।

স্যালমন মাছ: বিশেষজ্ঞরা স্ট্রেস কমানোর সেরা খাবারের তালিকায় স্যালমনকে উপরের দিকে রেখেছেন। কানাডার রেজিস্টার্ড ডায়েটিশিয়ান শাহজাদি দেবজি বলেন, ‘স্যালমন মাছের ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিডে বিদ্যমান প্রদাহনাশক শক্তি স্ট্রেস হরমোনের প্রতিক্রিয়া দমাতে পারে।’ এর মানে এটা নয় যে, আজ রাতে স্যালমন খেলে সকালে মেজাজটা ফুরফুরা হয়ে যাবে। বরং লং-টার্ম স্ট্রেস ম্যানেজমেন্টের কথা মাথায় রেখে নিয়মিত স্যালমন খেয়ে যেতে হবে।

ঢেঁড়স: এই সবুজ সবজিতে বি ভিটামিন ফোলেট রয়েছে। এই বি ভিটামিনটি সুখের হরমোন ডোপামিন উৎপাদন করে। স্ট্রেস কমাতে গবেষকরা ফোলেট সমৃদ্ধ খাবার (যেমন- ঢেঁড়স) খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

ওটমিল: জার্নাল অব নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড সায়েন্সেসে প্রকাশিত গবেষণা রিভিউ অনুসারে, প্রতিদিন এক বাটি ওটমিল খেয়ে নিজেকে শিথিল ও প্রশান্ত রাখা যেতে পারে। ডা. শাহজাদি জানান, ‘ওটমিলের মতো কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট সেরোটোনিনের উৎপাদন বাড়ায়। এটা হলো ব্রেইন কেমিক্যাল, যা স্ট্রেস হরমোন কমিয়ে দেয়।’

ডার্ক চকলেট: ডার্ক চকলেট সুলভ নয় বলে অনেকেই ইচ্ছে সত্ত্বেও নিয়মিত খেতে পারেন না। তবে চকলেটটি খেলে পয়সা উসুল হবেই! কারণ এটা বিস্ময়কর উপকার করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ডার্ক চকলেট মানসিক চাপ কমিয়ে মুখে হাসি ফোটাতে পারে। ডা. শাহজাদি বলেন, ‘কোকোয়া সমৃদ্ধ ডার্ক চকলেটের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রক্তনালীকে শিথিল করতে পারে। এর ফলে রক্তচাপ কমে ও রক্ত সংবহন বাড়ে।’

পালংশাক: স্ট্রেসে আচ্ছন্ন হলে আমাদের পেশির অনমনীয়তা বাড়তে থাকে। আমরা স্পষ্টভাবে চিন্তা করতে পারি না।ঘুমাতে সমস্যা হয় ও রক্তচাপ বেড়ে যায়। একটি পুষ্টি এসব উপসর্গ প্রশমিত করতে পারে- তা হলো ম্যাগনেসিয়াম। গবেষণায় দেখা গেছে, মানসিক চাপে ভুগলে ম্যাগনেসিয়ামের মাত্রা কমতে থাকে। তাই মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। পালংশাকের মতো গাঢ় সবুজ পাতাযুক্ত শাকসবজিতে উচ্চ পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম ও অন্যান্য পুষ্টি রয়েছে।

গ্রিন টি: মানসিক চাপ কমাতে গ্রিন টি কার্যকর পানীয়। বায়োলজিক্যাল অ্যান্ড ফার্মাসিটিউক্যাল বুলেটিনে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, লো ক্যাফেইন গ্রিন টি মনকে প্রশান্ত করতে পারে।

কমলা: কেবল কমলা খেলে নয়, এর খোসা ছাড়ালেও মানসিক চাপ কমে! কমলা ও অন্যান্য সাইট্রাস ফলে বি ভিটামিনের প্রাকৃতিক ধরন মায়োইনোসিটল থাকে। আমাদের মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রে উচ্চ মাত্রায় মায়োইনোসিটল আছে। কোষঝিল্লি, পেশি ও স্নায়ুর কার্যক্রম মায়োইনোসিটলের ওপর নির্ভরশীল। মায়োইনোসিটল আবেগ ও মেজাজ তথা মানসিক অবস্থা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তাই শরীরে এর পর্যাপ্ততা বজায় রাখতে নিয়মিত সাইট্রাস ফল খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।

গাজর: যুক্তরাষ্ট্রের রেজিস্টার্ড ডায়েটিশিয়ান মান্ডি এনরাইটের মতে, স্ট্রেস কমানোর অন্যতম সেরা খাবার হলো, গাজরের মতো মচমচে সবজি। মচমচে ফলও খেতে পারেন, যেমন- আপেল। মচমচে শব্দ এক ধরনের স্বস্তি দিয়ে থাকে। এসব খাবার চাবানোর সময় মচমচে শব্দের প্রতি মনোযোগ আসে বলে মানসিক চাপ কমে যায়। মচমচে খাবার খেলে চোয়ালের সংকোচনও কমে। উল্লেখ্য যে, প্রচুর মানসিক চাপে চোয়ালের সংকোচন বেড়ে যায়।