ঢাকা ০৭:৫৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মৌসুমের শুরুতে দর পতন : বোরোতে অসহায় কৃষক

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৪৩:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ মে ২০১৬
  • ৩৩৮ বার

মৌসুমের শুরুতেই মূল্য পতনে আবারো অসহায় হয়ে পড়েছে কৃষক। হাটে ধানের দাম নেই বললেই চলে। উৎপাদন খরচ তোলা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন তারা।

ইতোমধ্যেই ধান উৎপাদনে এগিয়ে বগুড়া, জয়পুরহাট ও নওগাঁ অঞ্চলে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। অনেক স্থানেই কালবৈশাখির দুর্যোগ, শ্রমিক সংকট মাথায় নিয়ে চাষীরা কষ্টের ফসল ঘরে তুলছেন। তবে দাম না থাকায় আরো বেশি হতাশায় পড়েছেন তারা। এই অঞ্চলে নতুন ধানের দাম সর্বনিম্ন ৪০০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা। যা উৎপাদন খরচের চেয়ে কম। প্রতি বছরই বাড়ছে খরচ। ঠিক এই কারণে সোনালী ফসল মাঠ থেকে উঠানে উঠতে শুরু করলেও তৃপ্তির ছাপ নেই কৃষকের চেহারায়।

রাজশাহী বিভাগীয় কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বোরো আবাদ একেবারে সেচ নির্ভর হওয়ায় এবং শ্রমিক খরচ বেড়ে যাওয়ায় প্রতি বছরই কমছে এর পরিধি। এবারেও রাজশাহী বিভাগে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় সাড়ে ৩৪ হাজার হেক্টর কম জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে।

এবার উত্তারাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় ৩ লাখ ৪০ হাজার ৪৪ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। যেখানে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩ লাখ ৭৪ হাজার ৬৬১ হেক্টর জমিতে। এ অঞ্চলের মধ্যে নওগাঁ জেলায় বেশি বোরোর আবাদ হয়। এ জেলায় ১ লাখ ৭৮ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। রাজশাহী জেলায় ৫৭ হাজার ৮৮৫ হেক্টর, নাটোর জেলায় ৫৬ হাজার ৮০৮ হেক্টর, নবাবগঞ্জ জেলায় ৪৭ হাজার ৫২ হেক্টর আর বগুড়া জেলায় ৭৫ হাজার ৭৭৮ হেক্টর ও জয়পুরহাটে ৬৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়।

বিগত বছরগুলোতে আবাদের শুরুতেই বীজের তীব্র সংকট, বীজতলা নষ্ট হওয়া, প্রয়োজনীয় ধানের বীজ না পাওয়া এবং লোডশেডিং থাকলেও এবারে তার কোনোটিই ছিল না (দু একটি এলাকা ছাড়া)। খুব ভালভাবেই আবাদ হয়েছে। এরপরও রাজশাহী অঞ্চলে আবাদে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি।

অনুসন্ধান করে জানা গেছে, শ্রমিক খরচ বেশি, খরা ও অনেক স্থানে লোডশেডিং আতঙ্ক, পানির স্তর নেমে যাওয়ায় পানি কম উঠা এবং বাজারে ধানের দাম না থাকাসহ নানান প্রতিকূলতার জন্য এবারে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি বলে জানান বোরো চাষী ও কৃষি সংশ্লিষ্টরা। ঠিক একই কারণে চাষীরা কম সেচের আবাদ গম, ভুট্টা ও ডাল জাতীয় আবাদে ঝুঁকেছেন।

জানানো হয়, এই অঞ্চলে বোরো আবাদের চারণভূমি নওগাঁ জেলাতেও বোরোর আবাদ কম হয়েছে। এখানে জমির পরিমাণ কমে গেছে ১২ হাজার হেক্টর। নওগাঁ জেলার মহাদেবপুরে প্রতি মণ (৪০ কেজি) নতুন বোরো ধান বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৫৫০ টাকা।

মোহনপুর উপজেলার তেঘর মাড়িয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল কাদের জানিয়েছেন, তিনি এ বছর প্রায় ১০ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছেন। প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে ধান ঝরে গেলেও শ্রমিকের মজুরি বেড়েছে প্রায় দিগুণ হারে। তার উপরে বাজারে দাম কম থাকায় হতাশায় পড়তে হচ্ছে।

এদিকে, হাটে এখন যে দামে ধান বিক্রি হচ্ছে তার চেয়ে উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ার কারণে অনেক স্থানে জমিতে পাকা ধান ফেলে রেখেছে কৃষক। আগামী ১ মাসের মধ্যে ধানের বাজার কিছুটা ভালো হওয়ার আশায় তারা এই পন্থা বেছে নিয়েছেন।

সরেজমিন বগুড়ার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, সোনালী ধান নিয়ে কৃষকের ধূসর স্বপ্নের দৃশ্য। জেলার দুপচাঁচিয়ার হাটবাজারে অল্প সংখ্যক ধান উঠলেও ক্রেতার অভাবে ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না কৃষক। এবার সার ও বিদ্যুৎ সমস্যা কম হওয়ায় দেরিতে ধান রোপণ করেও কৃষকরা ভালো ফলন পেয়েছেন।

এই উপজেলার ধাপসুলতানগঞ্জ ধানের হাটে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে জিরাশাল ধান ৫৪০-৫৫০, চান্দিনা ৫০০-৫২০, হাইব্রিড ৪৩০-৪৫০, কাজললতা ৫৩০-৫৫০ টাকা মণ দরে বেচাকেনা হচ্ছে।

ধান বিক্রি করতে আসা উপজেলার চামরুল ইউনিয়নের কৃষক আক্কাস আলী, সদর ইউনিয়নের ভেলুরচক গ্রামের কৃষক আব্দুল করিম জানান, সার, বিদ্যুৎ ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন ভালো হলেও শ্রমিক সংকটের কারণে দ্বিগুন মজুরি দিয়ে ধান ঘরে তুলেছি। এখন বাজারে ন্যায্য দাম পাচ্ছি না। এবার তাদের প্রতি বিঘায় ২০ থেকে ২২ মণ ধান উৎপাদন হয়েছে। তবে প্রতিবারের মতোই এবারো কৃষকের একই কথা।

তাদের মতে, ধানের ফলন বেশি হলেও উপযুক্ত দাম না থাকায় উৎপাদন খরচ উঠবে না। এদিকে, নতুন ধান উঠতে না উঠতেই ফড়িয়ারা দখল করে ফেলেছে ধান-চালের হাট। বেশি কমিশনের আশায় মিলারদের কাছে থেকে টাকা নিয়ে যত কম দামে ধান কেনা যায় এটাই তাদের লক্ষ্য।

রাজশাহী বিভাগীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পরিচালক বজলুর রশিদ জানান, বর্তমানে ধানের বাজার দর কিছুটা কম হলেও এবার ফলন বেশি হয়েছে। তবে এটা ঠিক যে আবাদী জমির পরিমাণ কিছুটা হলেও কমে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, এবার যেখানে বিঘা প্রতি ফলন ধরা হয়েছিল ১৮ থেকে ২০ মণ সেখানে অনেক স্থানেই ফলন হয়েছে ২৫ থেকে ২৮ মণ। এ কারণে কৃষকদের লোকসান হবে না। এছাড়া পুরো ধান বাজারে উঠলে ধানের দাম কিছুটা বাড়বে। কারণ এখনো ৫০ ভাগ ধান জমিতেই রয়েছে।

শেরপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত মৌসুমের চেয়ে এবার প্রতিটি জাতের ধান তারা কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। অথচ উৎপাদন খরচ প্রতি বিঘায় বেড়েছে প্রায় ৩ হাজার টাকা।

এই উপজেলার বীরগ্রামের কৃষক মজিদ সরদার জানান, এক বিঘা জমিতে ধান লাগানো থেকে শুরু করে কাটামাড়াই ও জমির মালিককে বর্গা বাবদ টাকা দেয়া পর্যন্ত তার প্রায় ১৫ হাজার টাকা ব্যয় করতে হয়েছে।

বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জামাল হোসেন জানান, তারা ১৪ ভাগ ময়েশ্চারই যুক্ত ধান কিনবে। এখানে দালাল বা ফড়িয়াদের সম্পৃক্ততার কোনো ব্যাপার নেই। তবে কৃষক যেসব ধান নিয়ে আসে তার বেশির ভাগেই ময়েশ্চারের পরিমাণ ২০ থেকে ২২ ভাগ। এ কারণে সেসব ধান ক্রয় করা সম্ভব হয় না।

উল্লেখ্য, এবার বগুড়ায় ধান ২৩ টাকা এবং চাল ৩২ টাকা কেজি দরে ৭১ হাজার ৮৯৫ মেট্রিক টন চাল এবং ৬ হাজার ৬০৫ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করা হবে। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই এই অভিযান কার্যক্রম শুরু করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

মৌসুমের শুরুতে দর পতন : বোরোতে অসহায় কৃষক

আপডেট টাইম : ১১:৪৩:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ মে ২০১৬

মৌসুমের শুরুতেই মূল্য পতনে আবারো অসহায় হয়ে পড়েছে কৃষক। হাটে ধানের দাম নেই বললেই চলে। উৎপাদন খরচ তোলা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন তারা।

ইতোমধ্যেই ধান উৎপাদনে এগিয়ে বগুড়া, জয়পুরহাট ও নওগাঁ অঞ্চলে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। অনেক স্থানেই কালবৈশাখির দুর্যোগ, শ্রমিক সংকট মাথায় নিয়ে চাষীরা কষ্টের ফসল ঘরে তুলছেন। তবে দাম না থাকায় আরো বেশি হতাশায় পড়েছেন তারা। এই অঞ্চলে নতুন ধানের দাম সর্বনিম্ন ৪০০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা। যা উৎপাদন খরচের চেয়ে কম। প্রতি বছরই বাড়ছে খরচ। ঠিক এই কারণে সোনালী ফসল মাঠ থেকে উঠানে উঠতে শুরু করলেও তৃপ্তির ছাপ নেই কৃষকের চেহারায়।

রাজশাহী বিভাগীয় কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বোরো আবাদ একেবারে সেচ নির্ভর হওয়ায় এবং শ্রমিক খরচ বেড়ে যাওয়ায় প্রতি বছরই কমছে এর পরিধি। এবারেও রাজশাহী বিভাগে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় সাড়ে ৩৪ হাজার হেক্টর কম জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে।

এবার উত্তারাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় ৩ লাখ ৪০ হাজার ৪৪ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। যেখানে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩ লাখ ৭৪ হাজার ৬৬১ হেক্টর জমিতে। এ অঞ্চলের মধ্যে নওগাঁ জেলায় বেশি বোরোর আবাদ হয়। এ জেলায় ১ লাখ ৭৮ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। রাজশাহী জেলায় ৫৭ হাজার ৮৮৫ হেক্টর, নাটোর জেলায় ৫৬ হাজার ৮০৮ হেক্টর, নবাবগঞ্জ জেলায় ৪৭ হাজার ৫২ হেক্টর আর বগুড়া জেলায় ৭৫ হাজার ৭৭৮ হেক্টর ও জয়পুরহাটে ৬৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়।

বিগত বছরগুলোতে আবাদের শুরুতেই বীজের তীব্র সংকট, বীজতলা নষ্ট হওয়া, প্রয়োজনীয় ধানের বীজ না পাওয়া এবং লোডশেডিং থাকলেও এবারে তার কোনোটিই ছিল না (দু একটি এলাকা ছাড়া)। খুব ভালভাবেই আবাদ হয়েছে। এরপরও রাজশাহী অঞ্চলে আবাদে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি।

অনুসন্ধান করে জানা গেছে, শ্রমিক খরচ বেশি, খরা ও অনেক স্থানে লোডশেডিং আতঙ্ক, পানির স্তর নেমে যাওয়ায় পানি কম উঠা এবং বাজারে ধানের দাম না থাকাসহ নানান প্রতিকূলতার জন্য এবারে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি বলে জানান বোরো চাষী ও কৃষি সংশ্লিষ্টরা। ঠিক একই কারণে চাষীরা কম সেচের আবাদ গম, ভুট্টা ও ডাল জাতীয় আবাদে ঝুঁকেছেন।

জানানো হয়, এই অঞ্চলে বোরো আবাদের চারণভূমি নওগাঁ জেলাতেও বোরোর আবাদ কম হয়েছে। এখানে জমির পরিমাণ কমে গেছে ১২ হাজার হেক্টর। নওগাঁ জেলার মহাদেবপুরে প্রতি মণ (৪০ কেজি) নতুন বোরো ধান বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৫৫০ টাকা।

মোহনপুর উপজেলার তেঘর মাড়িয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল কাদের জানিয়েছেন, তিনি এ বছর প্রায় ১০ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছেন। প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে ধান ঝরে গেলেও শ্রমিকের মজুরি বেড়েছে প্রায় দিগুণ হারে। তার উপরে বাজারে দাম কম থাকায় হতাশায় পড়তে হচ্ছে।

এদিকে, হাটে এখন যে দামে ধান বিক্রি হচ্ছে তার চেয়ে উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ার কারণে অনেক স্থানে জমিতে পাকা ধান ফেলে রেখেছে কৃষক। আগামী ১ মাসের মধ্যে ধানের বাজার কিছুটা ভালো হওয়ার আশায় তারা এই পন্থা বেছে নিয়েছেন।

সরেজমিন বগুড়ার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, সোনালী ধান নিয়ে কৃষকের ধূসর স্বপ্নের দৃশ্য। জেলার দুপচাঁচিয়ার হাটবাজারে অল্প সংখ্যক ধান উঠলেও ক্রেতার অভাবে ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না কৃষক। এবার সার ও বিদ্যুৎ সমস্যা কম হওয়ায় দেরিতে ধান রোপণ করেও কৃষকরা ভালো ফলন পেয়েছেন।

এই উপজেলার ধাপসুলতানগঞ্জ ধানের হাটে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে জিরাশাল ধান ৫৪০-৫৫০, চান্দিনা ৫০০-৫২০, হাইব্রিড ৪৩০-৪৫০, কাজললতা ৫৩০-৫৫০ টাকা মণ দরে বেচাকেনা হচ্ছে।

ধান বিক্রি করতে আসা উপজেলার চামরুল ইউনিয়নের কৃষক আক্কাস আলী, সদর ইউনিয়নের ভেলুরচক গ্রামের কৃষক আব্দুল করিম জানান, সার, বিদ্যুৎ ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন ভালো হলেও শ্রমিক সংকটের কারণে দ্বিগুন মজুরি দিয়ে ধান ঘরে তুলেছি। এখন বাজারে ন্যায্য দাম পাচ্ছি না। এবার তাদের প্রতি বিঘায় ২০ থেকে ২২ মণ ধান উৎপাদন হয়েছে। তবে প্রতিবারের মতোই এবারো কৃষকের একই কথা।

তাদের মতে, ধানের ফলন বেশি হলেও উপযুক্ত দাম না থাকায় উৎপাদন খরচ উঠবে না। এদিকে, নতুন ধান উঠতে না উঠতেই ফড়িয়ারা দখল করে ফেলেছে ধান-চালের হাট। বেশি কমিশনের আশায় মিলারদের কাছে থেকে টাকা নিয়ে যত কম দামে ধান কেনা যায় এটাই তাদের লক্ষ্য।

রাজশাহী বিভাগীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পরিচালক বজলুর রশিদ জানান, বর্তমানে ধানের বাজার দর কিছুটা কম হলেও এবার ফলন বেশি হয়েছে। তবে এটা ঠিক যে আবাদী জমির পরিমাণ কিছুটা হলেও কমে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, এবার যেখানে বিঘা প্রতি ফলন ধরা হয়েছিল ১৮ থেকে ২০ মণ সেখানে অনেক স্থানেই ফলন হয়েছে ২৫ থেকে ২৮ মণ। এ কারণে কৃষকদের লোকসান হবে না। এছাড়া পুরো ধান বাজারে উঠলে ধানের দাম কিছুটা বাড়বে। কারণ এখনো ৫০ ভাগ ধান জমিতেই রয়েছে।

শেরপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত মৌসুমের চেয়ে এবার প্রতিটি জাতের ধান তারা কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। অথচ উৎপাদন খরচ প্রতি বিঘায় বেড়েছে প্রায় ৩ হাজার টাকা।

এই উপজেলার বীরগ্রামের কৃষক মজিদ সরদার জানান, এক বিঘা জমিতে ধান লাগানো থেকে শুরু করে কাটামাড়াই ও জমির মালিককে বর্গা বাবদ টাকা দেয়া পর্যন্ত তার প্রায় ১৫ হাজার টাকা ব্যয় করতে হয়েছে।

বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জামাল হোসেন জানান, তারা ১৪ ভাগ ময়েশ্চারই যুক্ত ধান কিনবে। এখানে দালাল বা ফড়িয়াদের সম্পৃক্ততার কোনো ব্যাপার নেই। তবে কৃষক যেসব ধান নিয়ে আসে তার বেশির ভাগেই ময়েশ্চারের পরিমাণ ২০ থেকে ২২ ভাগ। এ কারণে সেসব ধান ক্রয় করা সম্ভব হয় না।

উল্লেখ্য, এবার বগুড়ায় ধান ২৩ টাকা এবং চাল ৩২ টাকা কেজি দরে ৭১ হাজার ৮৯৫ মেট্রিক টন চাল এবং ৬ হাজার ৬০৫ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করা হবে। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই এই অভিযান কার্যক্রম শুরু করা হবে।