হাওর বার্তা ডেস্কঃ দলীয় পার্লামেন্ট সদস্যদের আস্থা ভোটে এ যাত্রায় রক্ষা পেয়েছেন বরিস জনসন। আপাতত যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী পদে থাকছেন তিনি। বরিস জনসন প্রধানমন্ত্রী থাকবেন কি না, সে বিষয়ে সোমবার ভোট দেন তার দল কনজারভেটিভ পার্টির পার্লামেন্ট সদস্যরা। এতে বরিস জনসনের পক্ষে ২১১ ভোট এবং বিপক্ষে ১৪৮ ভোট পড়ে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটে যতজন এমপি তার বিরুদ্ধে ছিলেন জনসনের বিরোধীরা সংখ্যায় তার চেয়েও বেশি। সেই ভোটের ছয় মাস পর টেরিজা মে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। তার আগে আয়রন লেডি খ্যাত মার্গারেট থেচারও আস্থা ভোটে টিকে গেলেও পরে ক্ষমতা থেকে সড়ে দাঁড়াতে বাধ্য হন। দলের ১৪৮ জন সংসদ সদস্যর সমর্থন হারানো বরিস জনসনের জন্যও আগামী দিনে ক্ষমতায় টিকে থাকা কঠিন হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
করোনাভাইরাসের বিধিনিষিধ উপেক্ষা করে সরকারি বাসভবনে একাধিক পার্টির আয়োজন করেছিলেন যুক্তরাজ্যের জনসন। কাণ্ডজ্ঞানহীন ওই কাজের জন্য ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে ক্ষমা চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ‘পার্টিগেট কেলেঙ্কারি’ নামে পরিচিতি পাওয়া সেই ঘটনা পিছু ছাড়েনি বরিসের। এজন্য সোমবার দলীয় পার্লামেন্ট সদস্যদের অনাস্থা ভোটের মুখে পড়ে বরিসের নেতৃত্ব। পার্টিগেট কেলেঙ্কারির ঘটনা জনসমক্ষে আসার পর থেকে তা নিয়ে কয়েক দফা তদন্ত হয়েছে। যুক্তরাজ্যের জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা সু গ্রে দুই সপ্তাহ আগে ওই ঘটনার চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। মদ্যপানের আসরের ১৬টি ঘটনার তদন্ত করেছেন তিনি।
বরিসের এমন পদক্ষেপের সমালোচনার পাশাপাশি তদন্ত প্রতিবেদের সঙ্গে বেশকিছু ছবিও জুড়ে দেয়া হয়েছে। এসব ছবিতে দেখা যায়, বরিস তার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মদ্যপান করছেন। ওই আসরে মারামারির ঘটনাও ঘটে বলে জানা যায়। যদিও করোনার বিধিনিষেধের সময় এমন আয়োজন নিষিদ্ধ ছিল। ওই তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের আগে থেকেই বরিসের পদত্যাগ দাবি করে আসছিলেন অনেকে। প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকে সেই দাবি জোরালো হয়।
ক্রিস মেসন লিখছেন, পার্টিগেট কেলেঙ্কারিকে প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রিয়তা কতখানি কমেছে তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল গত শুক্রবার যখন লন্ডনে সেন্ট পলস ক্যাথেড্রালের বাইরে সমবেত জনতা তার প্রতি দুয়ো দুয়ো বলে আওয়াজ তোলে। তিনি লিখছেন, চরম সত্যটা হলো এ কেলেঙ্কারিকে ঘিরে বহু লোক খুবই ক্ষুব্ধ হয়েছেন। কনজারভেটিভ এমপিদের অনেকেই মনে করছেন, প্রধানমন্ত্রীর আচরণকে কোনোভাবে সমর্থন করা যায় না। অনেকে চাঁছাছোলা ভাবেই বলেছেন, হয় জনসনকে সরিয়ে দিতে হবে, নয়তো আগামী নির্বাচনে জনগণই তাদের সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করবে।