হাওর বার্তা ডেস্কঃ স্বাধীনতার পর সবচেয়ে বেশি অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যদিয়ে যাওয়া শ্রীলঙ্কায় পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ চলা সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে ক্ষমতা ছাড়ছেন না। অবশেষে ক্ষমতা ছাড়া না ছাড়ার বিষয়টি খোলাসা করেছেন তিনি। সোমবার (৬ জুন) প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে বলেন, ‘আমি একজন ব্যর্থ প্রেসিডেন্ট হিসেবে চলে যেতে পারি না। তবে আমি আর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবো না।’
দেশটিতে সংকট তৈরি হওয়ার পর সোমবার প্রথম আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন তিনি। রাজধানী কলম্বোতে তার সরকারি বাসভবনে এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া আরও বলেন, ‘আমি পাঁচ বছরের ম্যান্ডেট পেয়েছি।’ সুতরাং আরও দুই বছর ক্ষমতায় থাকছেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে।
চলতি বছর মার্চ মাস থেকে অর্থনৈতিক সংকটের জেরে শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটে। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগের দাবিতে সরব হয় গোটা দেশ। ভোগ্যপণ্যের আকাশচুম্বী দাম, জ্বালানির অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ বিভ্রাট, ওষুধের তীব্র সংকট এসবের জন্য প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া ও তার ভাই সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসেকে দায়ী করে আসছেন আন্দোলনকারীরা।
‘গোতা গো হোম’ এই স্লোগানে তার বিরুদ্ধে আন্দোলন চলতে থাকে কয়েক মাস ধরে। আন্দোলনের মুখে অবশেষে গত মাসে বাধ্য হয়ে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান তার ভাই ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। তবে বহাল তবিয়তে থাকেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া। পরে তিনি প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ দেন রনিল বিক্রমাসিংহেকে।
প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে ও তার নতুন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে এ বছর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং ভারত ও চীনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তার আশা করছেন।
প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে আরও বলেছেন, তিনি জাতির সেবায় তার আগের সফল কর্মকাণ্ডের প্রতিলিপি দেখতে চান। তিনি একসময় নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধান করতেন এবং ২০০৯ সালে ৩০ বছরের গৃহযুদ্ধের পর শ্রীলঙ্কার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসের অধীনে প্রতিরক্ষা সচিবও ছিলেন।
এক প্রতিক্রিয়ায় টেলিমারের একজন অর্থনীতিবিদ প্যাট্রিক কুরান বলেন, ‘এতে আন্দোলনকারীদের শান্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই যারা তার অবিলম্বে পদত্যাগের আহ্বান জানাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, দুই বছরেরও বেশি সময় পর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সঙ্গে, রাজাপাকসের মেয়াদ শেষ করার সিদ্ধান্ত আগামী কয়েক বছরে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করবে এবং অর্থনৈতিক সংস্কার প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।’