হাওর বার্তা ডেস্কঃ কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার বিভিন্ন অঞ্চলে ফের দেখা দিয়েছে বন্যা। জেলার নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এরই মধ্যে তলিয়ে গেছে সহস্রাধিক হেক্টর জমির বোরো ধান।
জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, এ বছর নেত্রকোনায় ১ লাখ ৮৪ হাজার ৮২৮ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। এরই মধ্যে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৫২ হেক্টর জমির বোরোধান কাটা হয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ৪৩২ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে।
কলমাকান্দার ২০০ হেক্টর, মোহনগঞ্জের ১৩২, বারহাট্টার ৭০ ও সদরে ৩০ হেক্টর জমির বোরো ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব জমিতে ২ হাজার ১৬০ মেট্রিক টন ধান উৎপাদিত হতো।
স্থানীয়রা কৃষকরা বলছেন, প্রকৃত ক্ষতির তথ্য সরকারি হিসাবে আসছে না। কলমাকান্দা উপজেলার কৈলাটি, বড়খাপন, পোগলা, সদর, নাজিরপুর, রংছাতিসহ প্রায় আটটি ইউনিয়নেই বোরো ধান তলিয়ে গেছে।
এদিকে বারহাট্টার রায়পুর, বাউসী, সাহতা, আসমা, সিংধাসহ সাতটি ইউনিয়নে প্রায় ৩০-৪০ ভাগ ফসল তলিয়ে গেছে।
কলমাকান্দার কৈলাটি ইউনিয়নের ঘণিচা গ্রামের কৃষক মো. ফরিদ তালুকদার বলেন, চাড়ালকোণা, পনারপারুয়া, সনুরা, চাড়িয়া, শালজান গ্রামগুলোর কৃষকদের অর্ধেক ফসল তলিয়ে গেছে। কাটা ধান নষ্ট হয়ে গেছে। টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল ও শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কাটা যাচ্ছে না। রোদ না থাকায় ধানের চারা গজিয়ে গেছে। ধান নষ্ট হয়ে গেছে।
বারহাট্টা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক তালুকদার বলেন, কাটা ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। একদিকে ক্ষেতে ফসল, পানি বাড়ছে, শ্রমিক নেই। বাজার মূল্য ৬৫০-৭০০ টাকা। এবার উৎপাদনের খরচ তোলা যাবে না। ধান নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় আছি।
এ ব্যাপারে জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এফএম মোবারক আলী বলেন, পাহাড়ি ঢলে বন্যা দেখা দেওয়ায় জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ৪৩২ হেক্টর বোরো ধান তলিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি। বৃষ্টির কারণে পাকা ধান কাটতে ও শুকাতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।