হাওর বার্তা ডেস্কঃ খাবারের পাতে একটু ভর্তা বা সামান্য শাক থাকলে মজাটা জমে ওঠে। এজন্য রীতিমতো উদ্ভাবন করে ফেলা হলো পাটশাক। যা থেকে কোন আঁশ পাওয়া যাবে না। এ জাতের শাক এক মাসেই বিক্রি হবে।
বাংলাদেশ পরমানু গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) উদ্ভাবিত পাটশাকের নাম “বিনাপাটশাক ১”। এ জাতটি অন্যান্য জাতের মতো লম্বা হয়না; অনেকটা খাটো। এ জাতটি থেকে কোন প্রকার আঁশ পাওয়া যাবে না। অন্যান্য জাতের চেয়ে পাতার সংখ্যা ও আয়তন বেশী। পাতা দেখতে গাঢ় সবুজ ও সতেজ, ফলে বাজারে চাহিদা বেশী।
কেমন মাটিতে চাষ করতে পারবেন সেটাও জানা প্রয়োজন। এ জাত সাধারণত বেলে দো-আঁশ ,এটেল দো-আঁশ ও বেলে দো-আঁশ মাটিতে চাষ করা যায়। ৩-৪ টি চাষ দিায়ে মাটি ঝুরঝুরা করে নিতে হবে এবং জমিতে আগাছা থাকলে তা তুলে ফেলতে হবে।
মার্চের ৩য় সপ্তাহ হতে আগস্টের ৩য় সপ্তাহ (ফাল্গুণের ২য় সপ্তাহ হতে শ্রাবন মাস পর্যন্ত) তবে বৃষ্টির সময় না বপন করা উত্তম। সারি করে বপন করলে প্রতি হেক্টরে ১৪ কেজি ও ছিটিয়ে বপন করলে ১৫ কেজি।
প্রতি ১০ কেজি বীজে ২৫ গ্রাম ভিটাভ্যাক্স-২০০ বা ব্যাভিস্টিন ব্যবহার করা যেতে পারে। বীজ শোধনের জন্য মাত্রানুযায়ী ছত্রাকনাশক মিশিয়ে একটি বদ্ধ পাত্রে ৪৮ ঘন্টা রাখা আবশ্যক।
প্রতি হেক্টরে কতটুকু সার দিতে হবে এবং প্রয়োগ পদ্ধতি চাষিদের জানা একান্ত জরুরি। ইউরিয়াঃ ৩০-৫০ কেজি, টিএসপিঃ ২৫-৫০ কেজি, এমওপিঃ ৩০-৪০ এর সাথে প্রতি হেক্টর জমিতে ৪-৫ টন পঁচা গোবর বা আবর্জনা সার প্রয়োগ করলে ভাল হয়।
প্রয়োগের পদ্ধতিঃ পঁচা গোবর বা আবর্জনা সার জমি তৈরীর ২ সপ্তাহ আগে সমসত্ম জমিতে সমভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে।অর্ধেক ইউরিয়া, টিএসপি ও এমওপি সার শেষ চাষের সময় জমিতে ছিটিয়ে প্রয়োগ করতে হবে। বাকী অর্ধেক ইউরিয়া সার প্রথমবার শাক তোলার পরে প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া সার ছিটানোর সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে যেন সার গাছের পাতার সাথে লেগে না থাকে।
তবে ধান গাছে থোড় হওয়ার সময় অবশ্যই জমিতে ৩-৫ সেমি পানি থাকা প্রয়োজন। ধান পাকার ১০/১৫দিন আগেই জমি থেকে পানি বের করে দিতে হবে। চারা রোপনের পর ১০/১৫দিন অমত্মর অমত্মর নিড়ানী যন্ত্র বা হাতের সাহায্যে আগাছা পরিস্কার ও মাটি নরম করতে হবে। বীজ গজানোর পর বোরো ধানের ক্ষেত্রে ৪০-৪৫ দিন ও আউশের ক্ষেত্রে ৩০-৩৫ দিন পর্যমত্ম জমি আগাছামুক্ত রাখা প্রয়োজন।
আগাছা দমন ও মালচিং চারা রোপনের পর আগাছা দেখা দিলে নিড়ানী বা হাতের সাহায্যে আগাছা পরিষ্কার এবং মাটি নরম করে মালচিং করতে হবে ।
এক মাসেই বিক্রি হবে বিনা উদ্ভাবিত পাটশাক লিখেছেন ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদ মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ বিনা, ময়মনসিংহ।